ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েল ভয়াবহ হামলা চালিয়ে ২৯ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এই হামলায় আরও বহু মানুষ আহত হয়েছে। দক্ষিণ গাজায় একটি স্কুলের বাইরে স্থাপিত বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের ক্যাম্পে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে বলে বুধবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে।
বিবিসি জানায়, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরের পূর্বে অবস্থিত আবাসান আল-কাবিরা এলাকার আল-আওদা স্কুলের গেটের পাশে স্থাপিত ক্যাম্পে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ২৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। প্রাথমিকভাবে মৃতের সংখ্যা ২৫ হলেও পরে তা বেড়ে ২৯ জনে পৌঁছায়।
একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, স্থানীয় হাসপাতালের মেঝেতে বেশ কয়েকজন শিশুসহ এক ডজনেরও বেশি মৃত ও গুরুতর আহত ব্যক্তি পড়ে আছেন। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা ‘হামাসের সামরিক শাখার সন্ত্রাসীদের’ লক্ষ্য করে ‘নির্দিষ্ট যুদ্ধাস্ত্র’ ব্যবহার করেছে। তাদের দাবি, আল-আওদা স্কুল সংলগ্ন ক্যাম্পে অবস্থানরত বেসামরিক লোকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে যে প্রতিবেদনগুলো পাওয়া যাচ্ছে, তারা সেগুলো খতিয়ে দেখছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আবাসান আল-কাবিরা এবং পূর্বাঞ্চলীয় খান ইউনিসের অন্যান্য এলাকা থেকে বেসামরিক লোকদের সরে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়ার এক সপ্তাহ পর এই হামলা ও হতাহতের ঘটনাটি ঘটেছে। হামলার পর আহতদের নাসের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের একটি সূত্র জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
মূলত খান ইউনিসের পূর্বাঞ্চলীয় গ্রামগুলো থেকে বাস্তুচ্যুত বহু মানুষ আল-আওদা স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন। হামলার ফলে সেখানে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ এবং নারী ও শিশুদের মৃত্যু হয়েছে। হতাহতদের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল এবং স্কুলের বাইরে তাঁবুতে থাকা বহু মানুষ আহত হয়েছেন। গত চার দিনে এটি নিয়ে চতুর্থবারের মতো বাস্তুচ্যুত লোকদের আশ্রয়স্থলে হামলা হয়েছে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৮ হাজার ২৪০ জনে পৌঁছেছে বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। ইসরায়েলি আক্রমণে গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। খাদ্য, পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থায় রয়েছেন।
অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।