ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক : বিএনপি নেতাদের নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত অচিম ট্রস্টার যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) শহীদ জিয়ার সমাধিতে ছাত্রদলের নবগঠিত আংশিক কমিটির শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে, বুধবার জার্মান রাষ্ট্রদূত অচিম ট্রস্টার বলেন, বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর আমাকে উদ্ধৃত্ত করে দলটির নেতারা গণমাধ্যমে যে কথা বলেছেন; তাতে আমরা অসন্তুষ্ট। বিএনপি কেন নির্বাচনে অংশ নেয়নি এবং নিতে চায় না, বৈঠকে সে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন দলটির নেতারা। এর বেশি কোনো আলোচনা হয়নি।
অচিম ট্রস্টার আরও বলেন, বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র নিয়ে আমরা কোনো উদ্বেগ জানাইনি। এটা নিয়ে তারা মিসকোট করেছে, সে কারণে অসন্তুষ্ট। কারও মাধ্যমে উদ্ধৃত্ত হতে চাই না।
এ বিষয়ে ফখরুল বলেন, ঢাকায় নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত সঠিক বলেননি। তাকে কোট করে কোনো কথা বলেনি বিএনপির প্রতিনিধি।
‘কয়েকটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাতে ষড়যন্ত্র করছে’- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ বক্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য থেকে প্রমাণিত হয় যে, সরকার দেশ পরিচালনায় সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। দেশকে সুষ্ঠু জায়গায় নিয়ে আসতে এবং দেশে সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, আজকে এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে, ক্ষমতা দখলকারী এ অবৈধ সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দেশের গণতন্ত্র হরণ করেছে। মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। একইসঙ্গে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, অর্থনীতি চরম দুর্যোগের দিকে গেছে। ভয়াবহ দুর্নীতির করাল গ্রাসে পরিণত করেছে দেশ।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের মানুষ দাবি তুলেছে, এ মুহূর্তে সরকারের পদত্যাগ করা উচিত। নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় জনগণের একটি নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠাই জনগণের দাবি।
‘আওয়ামী লীগের অপরাধটা কী যে সরকার হটাতে চায়’- প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তিনি বলেছেন তাদের অপরাধ কী। আমি বলছি, উনারদের অপরাধ হচ্ছে ভয়ংকর অপরাধ। এ দেশে তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছেন, মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছেন, দেশকে দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছেন।
নিউমাকেটে শিক্ষার্থী-ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, এ সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে আবার প্রমাণিত হয়েছে, দেশে আসলে কোনো সরকার নেই। এ সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ সরকারে পরিণত হয়েছে। রাষ্ট্রকেও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।
তিনি বলেন, পুলিশের চোখের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সংঘর্ষ হয়েছে। সেটাকে বন্ধ করার কোনো পদক্ষেপ তারা নেয়নি। নিরপেক্ষতার নামে সংঘর্ষ ছড়িয়ে দিতে তারা আরও বেশি সহযোগিতা করেছে। সংঘর্ষে মৃত্যুর জন্য সরকারই দায়ী।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নবগঠিত আংশিক কমিটির সদস্যদের শপথ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল, দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করে ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটি শপথ গ্রহণ করেছে। তারা জাতীয়তাবাদী দলকে অত্যন্ত সবল ও গতিশীল এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য সর্বাত্মক শক্তি নিযোগ করবে। একইসঙ্গে অতি অল্প সময়ের মধ্যেই তারা পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে সারাদেশে একটি শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত হবে।