ইউকে সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫
হেডলাইন

অ্যাসাঞ্জকে আমেরিকার হাতে তুলে দেবে না ব্রিটেন

অ্যাসাঞ্জকে আমেরিকার হাতে তুলে দেবে না ব্রিটেন

 

ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক : উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে মার্কিন সরকারের হাতে তুলে দেয়ার বিপক্ষে রায় দিয়েছে যুক্তরাজ্যের আদালত। তার মানসিক অবস্থার কারণ দেখিয়ে এ রায় দেয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে গুপ্তচরবৃত্তিসহ কয়েকটি অভিযোগেরআসামি জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে সে দেশের হাতে তুলে দেয়ার অনুরোধ ফিরিয়ে দিয়েছেন ব্রিটিশ বিচারক ভেনেসা ব্যারাইটজার।

বিচারক আসাঞ্জের মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে বলেন, তাকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দিলে কাজটি হবে ‘নিপীড়নমূলক’। তিনি বলেন, মার্কিন দেশে ফেরত পাঠালে অ্যাসাঞ্জ হয়ত আত্মহত্যা করবেন।

২০১০ সালে উইকিলিকসের নামে আমেরিকান মিলিটারির প্রায় পাঁচ লাখ নথি ফাঁস করে দেন অ্যাসাঞ্জ। এসব নথিতে আফগানিস্তান ও ইরাকে মিলিটারির নানা কার্যক্রমের তথ্য রয়েছে। এরপর তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ১৮টি অভিযোগ আনা হয়, যার একটি গুপ্তচরবৃত্তি। অভিযোগ প্রমাণ হলে তাকে ১৭৫ বছর জেল খাটতে হবে।

বিচারক মানসিক অবস্থার দোহাই দিলেও, বাক-স্বাধীনতার যুক্তি খারিজ করে দেন। তিনি বলেন, “অপরাধ প্রমাণিত হলে তা বাক-স্বাধীনতার যুক্তিতে সুরক্ষা পাবে না।”

অবশ্য মার্কিন জেলে একাকী থাকার শঙ্কা অ্যাসাঞ্জকে হতাশাগ্রস্ত করে তুলছে বলে মনে করেন বিচারক। তিনি বলেন, আসাঞ্জের সেই ‘বুদ্ধি ও দৃঢ়তা’ আছে, যা ব্যবহার করে তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন এবং কর্তৃপক্ষ তা ঠেকাতে পারবে না।

৪৯ বছর বয়সী জুলিয়ান ১৯৭১ সালে উত্তর-পূর্ব অস্ট্রেলিয়ার টাউনসভিলে জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৬ সালে তিনি উইকিলিকস নামের একটি ওয়েব প্লাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করেন। যে কেউ চাইলে গোপন নথি সেখানে প্রকাশের জন্য দিতে পারত।

২০১০ সালে উইকিলিকস আলোচনায় আসে। তারা তখন ২০০৭ সালের একটি গোপন ভিডিও প্রচার করে, যেখানে বাগদাদে অ্যাপাচি হেলিকপ্টার ব্যবহার করে মার্কিন মিলিটারি ডজনখানেক মানুষকে মেরে ফেলে, যার মধ্যে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের দুই সংবাদকর্মী ছিলেন।

এরপর উইকিলিকস মার্কিন কূটনীতির লাখ লাখ গোপন নথি প্রকাশকরতে শুরু করে। সেখানে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন থেকে শুরু করে সৌদি রাজপরিবারের সদস্যদের বিষয়ে নানান সমালোচনামূলক বার্তা, আফগান যুদ্ধের মার্কিন অপারেশনের নানা তথ্য ছিল।

পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে গুপ্তচরবৃত্তিসহ ১৮টি অভিযোগ আনা হয়। যৌন নিপীড়নের অভিযোগে বিচার করতে চায় সুইডেন। ২০১২ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি লন্ডনে ইকুয়েডরের এম্বেসিতে রাজনৈতিক আশ্রয় পান। ২০১৯ সালে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

অ্যাসাঞ্জকে গ্রেফতার ও তাকে বিচারের মুখোমুখি আনা সংবাদমাধ্যম ও বাক-স্বাধীনতার ওপর আঘাত বলে মনে করেন অনেকে। সোমবার ব্রিটিশ আদালত যেন তাকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে না দেয় সেজন্য বিভিন্ন পর্যায় থেকে আহ্বান জানানো হচ্ছিল। জাতিসংঘের বিশেষ দূত নিলস মেলজার বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাকে অপরাধমূলক কাজ হিসেবে দেখাতে চাইছে।” সূত্র: ডয়েচে ভেলে।

 

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন :

সর্বশেষ সংবাদ