ইউকে রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫
হেডলাইন

সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষার লড়াই এখনই শুরু করতে হবে

অলিউল্লাহ নোমান: হিন্দুত্বাবাদী সংস্কৃতির প্রবল আগ্রাসনের কবলে আজকের বাংলাদেশ। ১৯৪৭ সালের পর থেকেই শুরু হয়েছিল পরিকল্পিত সাংস্কৃতিক আগ্রাসন। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার পর সাংস্কৃতিক আগ্রাসন বিস্তার লাভ করে প্রকটভাবে। এক শ্রেনীর মুসলমান নামধারী কথিত সুশীল সমাজ ও তাদের নিয়ন্ত্রণে গড়ে উঠা মিডিয়া হিন্দুত্ববাদী সংস্কৃতির ধারক ও বাহক হিসাবে ইসলাম বিদ্ধেষ ছড়িয়ে দিতে অগ্রনী ভুমিকা পালন করছে। হিন্দুত্ত্ববাদী সংস্কৃতির এই পরিকল্পিত আগ্রাসন প্রতিরোধ এবং আমাদের ঐতিহ্য রক্ষায় লড়াই শুরু করেছিল দৈনিক আমার দেশ। বিশেষ করে ২০০৮ সালের জুলাই মাসে শ্রদ্ধেয় মাহমুদুর রহমান পত্রিকাটির দায়িত্ব নেয়ার পর দৃঢ় প্রত্যয়ে শুরু করেন সাংস্কৃতিক আগ্রাসন প্রতিরোধ লড়াই।

দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার মূল শ্লোগান হিসাবে তিনি নির্ধারণ করেন ‘স্বাধীনতার কথা বলে’। ৯০ শতাংশ মানুষের ধর্মীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের স্বাধীনতার কথা বলতেই পত্রিকাটি ছিল দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এতে হিন্দুত্ববাদী সংস্কৃতির ধারক ও প্রচারকদের গা জ্বালা শুরু হয়। এদেশের সংখ্যাগরীষ্ঠ ৯০ শতাংশ মানুষের কোন মুখপাত্র গড়ে উঠুক, এটা তারা কোন ভাবেই সহ্য করতে পারেনি। সাংস্কৃতিক আগ্রাসন প্রতিরোধ লড়াই থামিয়ে দিতেই পত্রিকাটিকে বন্ধ করে দেয়ার ষড়যন্ত্র শুরু হয়। এ ষড়যন্ত্রে সার্বিক সহযোগিতা করে হিন্দুত্ববাদী সংস্কৃতির ধারক ও প্রচারক কথিত মুসলমান সম্পাদকবৃন্দ। পত্রিকাটি জোর করে বন্ধ করার পর সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার ও নির্যাতনের পক্ষে সাফাই গাইতেও দেখা গেছে হিন্দুত্বাবাদী সংস্কৃতির প্রচারক সম্পাদক এবং সাংবাদিকবৃন্দকে।

পত্রিকাটি জোর পূর্বক বন্ধ করে দেয়ার আগে শ্রদ্ধেয় সম্পাদক মাহমুদুর রহমান পত্রিকার অফিসে অবরুদ্ধ ছিলেন প্রায় ৬ মাস। তখন তিনি অবরুদ্ধ অবস্থা থেকেও আমাদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষার লড়াইয়ের ডাক দিয়েছিলেন।

আজকের এই বাংলাদেশের সমস্যা অনেক গভীরে। শুধু ক্ষমতার রাজনৈতিক পরিবর্তনের মাধ্যমে মানুষের মুক্তি মিলবে না। সাংস্কৃতিক আগ্রাসন প্রতিরোধ করে নিজেদের ঐতিহ্য ফিরিয়ে না আনতে পারলে হিন্দুত্ববাদের আগ্রাসনের কবলেই পুড়তে হবে সংখ্যাগরীষ্ঠ নিপীড়িত জনগনকে। ১৯৪৭ সালের আগে হিন্দু জমিদারদের নিপীড়ন থেকে মুক্তির লড়াই শুরু করেছিলেন আমাদের পূর্বপুরুষরা। সেই লড়াইয়ের ফসল ছিল ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতা। এরই ধারাবাহিকতায় আসে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা। ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতার মূল শ্লোগান ছিল আমাদের মুসলিম ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রক্ষা করা। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার মূল শ্লোগান ছিল সাম্য, মানবিক মর্যদা ও সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা। সুতরাং মানচিত্রে যারা বসবাস করেন তাদের ৯০ শতাংশ মানুষ মুসলমান। তাদের রয়েছে নিজস্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। সাংস্কৃতিক আগ্রাসনে কেড়ে নেয়া সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজি ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই প্রয়োজন সংস্কৃতির লড়াই।

আর দেরি নয়। এখনো সময় আছে। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষার লড়াই শুরু করতে বিলম্ব হলে দীর্ঘ পরাধীনতা আমাদের অনিবায্য।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন :

‘মুক্তমত’ বিভাগে প্রকাশিত মতামত ও লেখার দায় লেখকের একান্তই নিজস্ব। ‘ইউকে বাংলা অনলাইন ডট কম’ সকল মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তবে ‘মুক্তমত’ বিভাগে প্রকাশিত লেখার দায় ‘ইউকে বাংলা অনলাইন ডট কম’ এর নয়। - সম্পাদক

সর্বশেষ সংবাদ