ইউকে রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫
হেডলাইন

একান্ত ভাবনা

অলিউল্লাহ নোমান: জামায়াতে ইসলামীর সাবেক কেন্দ্রীয় মজলিসে সূরার সদস্য এবং ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি মুজিবুর রহমান মঞ্জুর নেতৃত্বে গতকাল একটি নতুন উদ্যোগের আত্মপ্রকাশ হতে দেখা গেছে। মুজিবুর রহমান মঞ্জুর নেতৃত্বে প্রকাশিত আন্দোলনের নাম ‘জন আকাঙ্খার বাংলাদেশ’।

এই উদ্যোগ ভবিষ্যতে কতদূর যেতে পারে সেটা তাদের কর্মকৌশলের উপর নির্ভর করবে। সফল হবে, নাকি ব্যর্থ হবে, এটা বলার সুযোগ নেই। কর্মকৌশল এবং সময় বলে দেবে তাদের সাফল্য এবং ব্যর্থতা। যদিও তাদের কর্মকৌশল এবং লক্ষ্য উদ্দেশ্য বা গঠনতন্ত্র এখনো নির্মানাধীন রয়েছে। দেখা যাক তাদের কর্মকৌশল ও গঠনতন্ত্রে লক্ষ্য উদ্দেশ্য কি নির্ধারণ করা হয়। সে পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকলাম।

তবে, সোস্যাল মিডিয়ায় মুজিবুর রহমান মঞ্জুর উদ্যোগ নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখতে পাচ্ছি। ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হচ্ছে এই উদ্যোগ গুরুত্ব পাচ্ছে। গুরুত্ব না পেলে এতটা প্রতিক্রিয়া হওয়ার কথা নয়। গুরুত্বহীনকে কেউ পাত্তা দেয় না। এটাই স্বাভাবিক নিয়ম। সুতরাং প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হচ্ছে, মুজিবুর রহমান মঞ্জুর উদ্যোগ গুরুত্ব পেয়েছে।

মুজিবুর রহমান মঞ্জু সংবাদ সম্মেলনে ঘোষনা করেছেন, তাদের কোন আদর্শ ভিত্তিক রাজনীতি করবেন না। তাদের আদর্শ হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষনাপত্রের ৩ মূলনীতি সাম্য, সামাজিক ন্যায় বিচার ও মানবিক মর্যদা বা মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। তারা অধিকার প্রতিষ্ঠার রাজনীতি করবেন, এমনটাই বলতে শোনা গেছে। রাজনীতি বিজ্ঞানের ছাত্র হিসাবেও পড়েছি, রাজনীতির মূল লক্ষ্য হচ্ছে মানুষের সার্বিক কল্যানে কাজ করা।

অনেকের প্রতিক্রিয়ায় দেখলাম, ইসলাম শব্দ না থাকায় উষ্মা প্রকাশর করেছেন। মুজিবুর রহমান মঞ্জুর কঠোর সমালোচনা করেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, সাম্য, সামাজিক ন্যায় বিচার ও মানবিক মর্যদা বা মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা কি ইসলাম বিরোধী কোন মতবাদ? ইসলাম এসেছিল অশান্তি দূর করে সাম্য, ইনসাফ ও মানুষের অধিকার এবং মার্যদা প্রতিষ্ঠার জন্য। কেউ যদি ইসলাম শব্দ ব্যবহার না করে এই নীতি গুলো অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন, তিনি কি ইসলামের বাইরে চলে যাবেন! তবে এনিয়ে বিস্তর আলোচনা হতে পারে। এর সুযোগও রয়েছে। যুগে যুগে এ নিয়ে বহু আলোচনা হয়েছে। মতবিরোধও কম হয়নি। তাই বলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে কেউ নতুন উদ্যোগ নিতে পারবে না, এটা ত আর ইসলামে বাঁধা নেই!

বৃটেনে জনসংখ্যার ৫৯.৩% হচ্ছে খৃষ্টান ধর্মাবলম্বী। এখানে ধর্মীয় লেবাসে কোন রাজনৈতিক দল নেই। তবে এখানে সাম্য, সামাজিক ন্যায় বিচার বা ইনসাফ, মানুষের অধিকার ও মানবিক মর্যদা সুপ্রতিষ্ঠিত। যা বাংলাদেশের ৯০% মুসলমানের দেশে কল্পনাও করা যায় না। তাই কেউ কেউ বলেন, বাংলাদেশে মুসলমান আছে কিন্তু আচার আচরণে, ইসলাম নেই। কিন্তু বৃটেনে সংখ্যাগরীষ্ঠ মানুষ মুসলমান নয়, তবে তাদের মাঝে ইসলামের সাম্য, মানবিক মর্যদা, মানুষের অধিকার, ইনসাফ সবই রয়েছে।

সুতরাং কেউ যদি ভাল উদ্দেশ্য সামনে রেখে মানুষের কল্যাণ সাধনের জন্য বা মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনীতি করেন তাতে মন্দ কিছু দেখছি না। মুজিবুর রহমান মঞ্জুর নেতৃত্বে সেই আন্দোলন কতটুকু পারেন সেটাই এখন দেখার বিষয়। কারন বাংলাদেশের রাজনৈতিক চরিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সবাই নিজের কল্যানের জন্য রাজনীতি করেন। সেই ধারা থেকে মুজিবুর রহমান মঞ্জুরা বের হয়ে এসে ‘আমাদের’ শব্দের উর্ধ্বে উঠে সার্বজনিন হতে পারেন কি না তা দেখার অপেক্ষায় রইলাম।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন :

‘মুক্তমত’ বিভাগে প্রকাশিত মতামত ও লেখার দায় লেখকের একান্তই নিজস্ব। ‘ইউকে বাংলা অনলাইন ডট কম’ সকল মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তবে ‘মুক্তমত’ বিভাগে প্রকাশিত লেখার দায় ‘ইউকে বাংলা অনলাইন ডট কম’ এর নয়। - সম্পাদক

সর্বশেষ সংবাদ