ইউকে বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫
হেডলাইন

আবারও পানির দাপট: ফেনী-নোয়াখালী-লক্ষ্মীপুর-লালমনিরহাটে দুর্ভোগ

ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার এক বছর না পেরোতেই আবারও পানিতে ডুবেছে ফেনী। নোয়াখালীতে টানা বৃষ্টিতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা, লক্ষ্মীপুরে সড়ক ভেঙে পরিণত হয়েছে খালে, আর উত্তরে তিস্তার পানি বাড়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে লালমনিরহাটের চরে চরে।

ফেনী: টানা বৃষ্টি ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফেনীর পাঁচ উপজেলার বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল ও নদীতীরবর্তী এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। জেলা প্রশাসনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, কৃষি, সড়ক, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাতে প্রায় ২৩৮ কোটি টাকার বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে শুধু কৃষিতে ক্ষতির পরিমাণ ৭৫ কোটি টাকা।

অবকাঠামো খাতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৮২ কোটি টাকার। পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসাবে বাঁধ ভেঙে ক্ষতি হয়েছে ৫৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকার। প্রাণিসম্পদ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জনস্বাস্থ্য ও বিদ্যুৎ বিভাগেও ব্যাপক ক্ষতির তথ্য মিলেছে।

ফেনীর ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মাহবুব আলম জানান, ক্ষতির তালিকা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে, বরাদ্দ এলেই পুনর্গঠনের কাজ শুরু হবে।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের আগস্টে ভয়াবহ বন্যায় ফেনীতে প্রাণ হারিয়েছিলেন ২৯ জন। সেই বন্যা ফেনীর ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ংকর হিসেবে বিবেচিত।

নোয়াখালী: গত ২৪ ঘণ্টায় টানা বর্ষণে নোয়াখালী জেলা শহরের একাধিক এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। মাইজদী প্রেস ক্লাব সড়ক, ডিসি সড়ক, মহিলা কলেজ সড়কসহ বেশ কিছু এলাকায় হাঁটুপানি জমেছে। এতে চলাচলে ভোগান্তি বাড়ছে সাধারণ মানুষের।

জেলা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। জেলা প্রশাসক জানান, বড় সড়কগুলো সচল থাকলেও পাশের কিছু রাস্তা ডুবে গেছে।

লক্ষ্মীপুর: কমলনগর উপজেলার বলিরপোল-নাছিরগঞ্জ সড়ক অতিবৃষ্টি ও মেঘনার জোয়ারে ভেঙে গিয়ে খালে পরিণত হয়েছে। এতে দুই ইউনিয়নের অন্তত ২০ হাজার মানুষ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। কোমরপানি মাড়িয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। চরমার্টিন ও চরকালকিনিসহ বিভিন্ন এলাকায় কাঁচা সড়কগুলো একেবারে চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।

জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার জানান, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।

লালমনিরহাট: উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও ভারী বৃষ্টির কারণে তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে তিস্তা ও ধরলা নদীসংলগ্ন ১১০টি চরের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। অনেক নিচু এলাকার ফসলের খেত পানিতে তলিয়ে গেছে, কিছু ঘরে পানি ঢুকেছে।

তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রকল্প বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী। তিনি বলেন, “আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি। চরের মানুষদেরও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।”

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন :

সর্বশেষ সংবাদ