
ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে তরুণদের সম্পৃক্ততা ও চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সম্ভাবনা নিয়ে রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হলো ‘এগ্রি ফ্রন্টিয়ার্স ২০২৫: ভবিষ্যৎ কৃষির জন্য তারুণ্য ও প্রযুক্তির সক্ষমতা উন্নয়ন’ শীর্ষক এক সেমিনার। শুক্রবার (২৫ জুলাই ২০২৫) ঢাকার তুলা উন্নয়ন বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে এই সেমিনারের আয়োজন করে ‘ইয়াং এগ্রিকালচার ক্যাডার অফিসার ফোরাম (ইয়াকফ)। এতে ৩৮ থেকে ৪৩তম ব্যাচের প্রায় ৩ শতাধিক বিসিএস কৃষি ক্যাডার অংশ নেন।
সেমিনারের প্রধান অতিথি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. সাইফুল আলম বলেন, ‘চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের কৃষিকে আরও উৎপাদনশীল, আধুনিক ও টেকসই করে গড়ে তুলতে হবে। বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে কৃষি খাতে প্রযুক্তির দক্ষ প্রয়োগই পারে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কৃষি উৎপাদনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে দেশের প্রতিটি কোণে কৃষি কর্মকর্তারা রোদ, বৃষ্টি উপেক্ষা করে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। অথচ দুঃখজনকভাবে এই নিবেদিতপ্রাণ কর্মকর্তারা অন্যান্য অনেক ক্যাডারের তুলনায় কম সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন এবং নানা ক্ষেত্রে অবহেলার শিকার হচ্ছেন। কৃষি কর্মকর্তাদের ন্যায্য অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন ডিএই-এর অবসরপ্রাপ্ত মহাসচিব আহমেদ আলী চৌধুরী ইকবাল, উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইং এর পরিচালক মো. আব্দুর রহিম, হর্টিকালচার উইং এর পরিচালক এস এম সোহরাব উদ্দিন, ক্রপস্ উইং এর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. মো. হজরত আলী, ঢাকা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক ড. মো. জাকির হোসেন, প্রশাসন ও অর্থ উইং এর অতিরিক্ত পরিচালক ড. মোহাম্মদ কাজী মজিবুর রহমান, উপপরিচালক মো. নূরে আলম সিদ্দিকী, মো. মুরাদুল হাসান, মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, আবুল কালাম আজাদ, কে এম বদরুল হক ও বনি আমিন খান।
ইয়াকফের সম্পাদক কৃষিবিদ মাইনুদ্দিন সাদ স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘বর্তমান সময়ে কৃষি শুধু মাঠে কাজ করার পেশা নয়, বরং গবেষণা, প্রযুক্তি ব্যবহার এবং আন্তর্জাতিক মানের চিন্তাশক্তির প্রয়োগের একটি বড় ক্ষেত্র।’
সেমিনারে ৩টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়, যাতে কৃষি উৎপাদনে উদ্ভাবনী প্রযুক্তির ব্যবহার, যুবসমাজকে কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা এবং কৃষিকে বাণিজ্যিক সম্ভাবনার খাত হিসেবে তুলে ধরার বিষয়ে আলোচনা হয়।
উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন বিভিন্ন ব্যাচের কৃষি কর্মকর্তারা, যারা বাস্তব অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
সমাপনী বক্তব্যে ইয়াকফের সভাপতি কৃষিবিদ মো. এমাজ উদ্দিন বলেন, ‘এই আয়োজন কোনো একদিনের অনুষ্ঠান নয় বরং এটি একটি চলমান চিন্তাধারার অংশ। আমরা চাই তরুণ কৃষিবিদরা শুধু কর্মকর্তা হিসেবে নয়, চিন্তাশীল নেতা, গবেষক ও উদ্ভাবক হিসেবেও নিজেদের গড়ে তুলুক।’
উল্লেখ্য, দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় কর্মরত ৩৮, ৪০, ৪১ ও ৪৩তম বিসিএসের ৮০০-এর অধিক কৃষি কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত ইয়াকফ কৃষির ভবিষ্যৎ উন্নয়ন ও কৃষি ক্যাডারের ন্যায্য দাবি-দাওয়ার বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে।