
ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :ভারতের বিহার রাজ্যের পূর্ণিয়া জেলায় ‘ডাইনি বিদ্যা’ চর্চার অভিযোগ তুলে একই পরিবারের পাঁচজনকে বেধড়ক মারধর করে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। রোববার (৭ জুলাই) সন্ধ্যায় পূর্ণিয়ার মুফাসিল থানার অন্তর্গত তেতগামা গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
সোমবার টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, নিহতরা হলেন—বাবু লাল ওরাঁও (৫০), তার মা কান্তো দেবী (৭০), স্ত্রী সীতা দেবী (৪৫), ছেলে মনজিত কুমার (২৫) এবং পুত্রবধূ রাণী দেবী (২২)।
পুলিশ জানিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ‘ঝাড়ফুঁক’, ‘ডাইনি বিদ্যা’ বা লোকজ চিকিৎসা চর্চার সম্পর্ক রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, নিহত বাবু লাল ওরাঁও গ্রামে ঝাড়ফুঁকের মাধ্যমে চিকিৎসা করতেন। কিছুদিন আগে প্রতিবেশী রামদেব ওরাঁওয়ের পরিবারের এক শিশু মারা যায় এবং অপর এক সদস্য গুরুতর অসুস্থ হলে বাবুলাল ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ‘ডাইনি বিদ্যা’র অভিযোগ তোলে গ্রামবাসীরা।
পূর্ণিয়া সদরের এসডিপিও পঙ্কজ কুমার শর্মা জানান, “ঘটনার সময় বাবুলালের ১৬ বছর বয়সী ছোট ছেলে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। তার বর্ণনায় জানা গেছে, গ্রামবাসীরা তাদের বাড়িতে হানা দিয়ে মারধর করে এবং পরে পাঁচজনকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করে।”
তিনি আরও বলেন, “ঘটনার সঙ্গে পুরো গ্রামই জড়িত থাকতে পারে বলে আমাদের ধারণা। ইতোমধ্যে চারজনের নাম উল্লেখ করে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে।”
এই নৃশংস ঘটনার পর বিহার রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়িয়েছে। বিরোধীদলীয় নেতা ও আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব এক্স (সাবেক টুইটার)-এ লিখেছেন, “পূর্ণিয়ায় একই পরিবারের পাঁচজনকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। বিহারে আইনশৃঙ্খলা একেবারে ভেঙে পড়েছে। কেউ দায় নিচ্ছে না।”
বিহার কংগ্রেস সভাপতি রাজেশ কুমার বলেন, “বিহারে গরিব, দলিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী কেউই নিরাপদ নয়। এই হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করে ‘জঙ্গলরাজ’ চলছে।”
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।