ইউকে শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫
হেডলাইন

কুমিল্লায় মা ও দুই সন্তানকে নৃশংসভাবে হত্যা, গ্রাম পুরুষশূন্য

ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কড়ইবাড়ি গ্রামে মা ও দুই সন্তানকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার হলেও এখনো পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি, গ্রেপ্তার হয়নি কেউ। গ্রাম পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে, অধিকাংশ পুরুষ এলাকাছাড়া।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকালে কড়ইবাড়ি বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বাড়িতে হামলা চালিয়ে রোকসানা বেগম (৫৩), তার ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) ও মেয়ে তাসপিয়া আক্তার জোনাকিকে (২৯) নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। গুরুতর আহত হন রোকসানার আরেক মেয়ে রুমা আক্তার, যাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের দাবি, নিহত পরিবারটি দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিল, যা স্থানীয়দের ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মোবাইল ফোন চুরিকে কেন্দ্র করে এলাকার উত্তেজনা চরমে ওঠে এবং এর জের ধরেই ঘটে এই হত্যাকাণ্ড।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার এক শিক্ষকের মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে রোকসানার ঘনিষ্ঠ বোরহান নামের এক তরুণকে মারধর করে স্থানীয় মেম্বার বাচ্চু মিয়া ও ব্যবসায়ী বাছির। পরে রোকসানা গিয়ে তাদের সঙ্গে বচসায় জড়ান এবং বাচ্চুকে চড় মারেন। বৃহস্পতিবার সকালে চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাল ও মেম্বার বাচ্চু পুনরায় ঘটনাস্থলে গেলে নতুন করে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।

একপর্যায়ে বাছিরের নেতৃত্বে উত্তেজিত লোকজন রোকসানার বাড়িতে হামলা চালায় এবং তিনজনকে হত্যা করে। এই ঘটনায় নিহত রাসেলের স্ত্রী মীম আক্তার অভিযোগ করেন, “বাছিরের নেতৃত্বে পুরো হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। চেয়ারম্যান ও মেম্বার এর সঙ্গে সরাসরি জড়িত।”

তবে ইউপি চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি কাউকে আইন হাতে তুলে নিতে বলিনি। বরং উভয় পক্ষকে সরিয়ে দিয়েছি। হত্যাকাণ্ডের সময় আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না।”

এদিকে এখনো পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি। বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মাহফুজুর রহমান বলেন, “নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। গ্রেপ্তার এড়াতে অনেকেই পলাতক থাকায় তদন্তে কিছুটা সময় লাগছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।”

ঘটনার পর পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী টহল জোরদার করেছে। স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত বিচার এবং প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনা না হলে পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন :

সর্বশেষ সংবাদ