
ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :প্রেমিকাকে বিশ্বাস করে প্রেমিকরা কত কিইনা করে। অথচ প্রেমিকের সেই ভালোবাসা আর বিশ্বাসকে পুঁজি করে এক নারী উধাও হয়েছেন ৪০ কোটি টাকারও বেশি অর্থ নিয়ে। কানাডার উইনিপেগ শহরে ঘটেছে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা। লরেন্স ক্যাম্পবেল নামে এক ব্যক্তি দাবি করেছেন, তার সাবেক প্রেমিকা ক্রিস্টাল অ্যান ম্যাককে ৫০ লাখ কানাডিয়ান ডলার (প্রায় ৪৪ কোটি টাকা) লটারির অর্থ আত্মসাৎ করে তাকে ছেড়ে অন্য এক পুরুষের সঙ্গে পালিয়ে গেছেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সিটিভি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্যাম্পবেল জানান, ২০২৪ সালে তিনিই বিজয়ী লটারি টিকিটটি ক্রয় করেন। কিন্তু বৈধ আইডি না থাকায় লটারি সংস্থার পরামর্শে তিনি তার প্রেমিকা ম্যাককেকে দিয়ে পুরস্কারের অর্থ গ্রহণ করান। সেই অর্থ ম্যাককের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয়।
ক্যাম্পবেলের ভাষ্যমতে, তারা দীর্ঘ এক বছর ধরে প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন এবং পারস্পরিক বিশ্বাস ও প্রতিশ্রুতিতে সম্পর্কটি এগোচ্ছিল। লটারি জেতার পর তারা একসঙ্গে একটি ড্রাগ স্টোরে গিয়ে ভিডিও রেকর্ড করেন ও একটি ওভারসাইজ চেক হাতে ছবি তোলেন। যদিও সেই ছবিতে ম্যাককের মুখে হাসির কোনো ছাপ ছিল না। তখন প্রকাশ্যে জানানো হয়েছিল, লটারি পুরস্কারটি প্রেমিকার জন্য জন্মদিনের উপহার।
কিন্তু ঘটনার মোড় নেয় কয়েক দিন পরই। হঠাৎ করেই ম্যাককে নিখোঁজ হয়ে যান। ফোন, ম্যাসেজ কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম- কোথাও তিনি আর সাড়া দেননি। পরে ক্যাম্পবেল জানতে পারেন, ম্যাককে অন্য এক পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন এবং তার সঙ্গেই সময় কাটাচ্ছেন।
এ ঘটনায় ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়ে লরেন্স ক্যাম্পবেল ম্যানিটোবার কোর্ট অব কিং’স বেঞ্চে প্রেমিকার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। শুধু প্রেমিকা ম্যাককের বিরুদ্ধেই নয়, তিনি পশ্চিম কানাডার লটারি করপোরেশন (WCLC) ও ম্যানিটোবা লিকার অ্যান্ড লটারি করপোরেশনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ এনেছেন। তার দাবি, প্রতিষ্ঠান দুটি তাকে ঝুঁকির বিষয়ে যথাযথভাবে অবহিত করেনি বা উপযুক্ত পরামর্শ দেয়নি।
ক্যাম্পবেলের আইনজীবী জানান, এটি শুধু একটি প্রেমঘটিত প্রতারণার মামলা নয়, বরং এটি একটি বড় প্রাতিষ্ঠানিক ব্যর্থতার উদাহরণ। একজন নাগরিক কীভাবে নিজের অর্থ সুরক্ষিত রাখবেন, সে বিষয়েও এটি গুরুত্বপূর্ণ নজির স্থাপন করতে পারে।
অন্যদিকে ম্যাককের আইনজীবী ক্যাম্পবেলের অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে।
ঘটনাটি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। কেউ ক্যাম্পবেলের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করছেন, আবার কেউ প্রেমিকার ওপর ক্ষোভ ঝাড়ছেন। কেউ ব্যঙ্গ করে লিখেছেন, ‘বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তবু প্রেমে মিলতে পারে প্রতারণার দুঃখ!’