
ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :রাজশাহীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে চলছে ভিন্ন চিত্র—কোথাও স্বাভাবিকভাবে ক্লাস চলছে, কোথাও আবার শিক্ষকেরা পূর্ণদিবস কর্মবিরতিতে অংশ নিচ্ছেন। সহকারী শিক্ষকদের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো পালিত হচ্ছে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি।
একদিকে জানা গেছে পাঠদান অব্যাহত রেখেছে রাজশাহী নগরের বিনোদপুর এলাকার মির্জাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যাল। সেখানে পাঠদান স্বাভাবিকভাবেই চলছিল। শিক্ষকেরা ক্লাস নিচ্ছেন এবং অধিকাংশ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হোসনে আরা জেসমিন জানান, বিদ্যালয়ে মোট সাতজন শিক্ষক কর্মরত আছেন এবং কেউ কর্মবিরতিতে নেই। তাই শ্রেণি কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
অন্যদিকে, তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকার খাদেমুল ইসলাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একেবারে ভিন্ন চিত্র বিরাজ করছে। সেখানে শিক্ষকেরা অফিসকক্ষে অবস্থান করলেও ক্লাস হচ্ছে না। কিছু শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে এলেও তাদের শ্রেণিকক্ষে না পাঠিয়ে একটি কক্ষে বসিয়ে রাখা হয়—কেউ গল্প করছে, কেউ লিখছে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাহমুদা বেগম বলেন, “আমরা মে মাসের শুরু থেকে ধাপে ধাপে কর্মসূচি পালন করে আসছি। এখন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি চলছে। আমরা চাই ১৩তম গ্রেড থেকে ১১তম গ্রেডে উন্নীত হওয়া। সরকার দিতে চায় ১২তম গ্রেড, কিন্তু সেই সঙ্গে ‘সহকারী প্রধান শিক্ষক’ পদ তৈরি করতে চায়—যেটা আমরা চাই না।”
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামিলা তারিন নিশ্চিত করেছেন, পাঠদান বন্ধ আছে এবং শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে রয়েছেন।
রাজশাহীর গ্রামীণ অঞ্চলেও একই চিত্র। গোদাগাড়ী উপজেলার সোনাদীঘি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও পাঠদান বন্ধ। প্রধান শিক্ষক কল্যাণী মিনজি জানান, শিক্ষকরা পূর্ণদিবস কর্মবিরতিতে অংশ নিচ্ছেন।
প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক ঐক্য পরিষদের ডাকে আন্দোলন চলছে সারা দেশব্যাপী। তাদের তিনটি মূল দাবি:
১. সহকারী শিক্ষক পদকে শুরুর পদ হিসেবে গণ্য করে ১১তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ
২. ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন
৩. শতভাগ পদোন্নতির ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ ও দ্রুত পদোন্নতি কার্যকর
এর আগে শিক্ষকরা ৫-১৫ মে পর্যন্ত: ১ ঘণ্টা কর্মবিরতি, ১৬-২০ মে: ২ ঘণ্টা, ২১-২৫ মে: অর্ধদিবস, ২৬ মে থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু করেন।
রাজশাহীর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম আনোয়ার হোসেন বলেন, “সব বিদ্যালয়ে কর্মসূচি পালিত হচ্ছে না। কোথায় কতটা প্রভাব পড়েছে, তা জানতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।”