ইউকে শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫
হেডলাইন

এনবিআর ভাগ: আলোচনায় বসছেন উপদেষ্টা, কলম বিরতিও চলবে

ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) দুটি ভাগে বিভক্ত করার খসড়া অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে যাচ্ছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।

এনবিআরের জনসংযোগ বিভাগ জানিয়েছে, আলোচনাটি অনুষ্ঠিত হবে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় অর্থ মন্ত্রণালয়ে। তবে আন্দোলনকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা এখনো এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাননি। তাই সোমবারও নির্ধারিত কলম বিরতি কর্মসূচি চলবে।

আন্দোলনরত কর্মকর্তাদের প্ল্যাটফর্ম ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে,

“আমরা সংবাদমাধ্যমে জেনেছি যে অর্থ উপদেষ্টা মঙ্গলবার আলোচনা করবেন। তবে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের কিছু জানানো হয়নি। সে কারণে সোমবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত কলম বিরতি চলবে।”

তবে অন্যান্য দিনের মতো এবারও আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা, রপ্তানি কার্যক্রম এবং বাজেট প্রণয়ন প্রক্রিয়া এই কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে।

দেশজুড়ে কর অঞ্চল, ভ্যাট কমিশনারেট এবং শুল্ক স্টেশনসহ এনবিআরের সব দপ্তরেই কলম বিরতি পালন করা হবে।

আন্দোলনকারীরা এর আগে তিন দফায় কর্মসূচির সময় বাড়িয়েছে। প্রথমে বুধবার, বৃহস্পতিবার ও শনিবার কলম বিরতি পালিত হয়। এরপর তা বাড়িয়ে রোববার ও এবার সোমবার পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

আন্দোলনের পটভূমি গত ১৭ এপ্রিল উপদেষ্টা পরিষদে এনবিআরকে দুটি আলাদা বিভাগ—রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা—তে ভাগ করার খসড়া অধ্যাদেশ অনুমোদিত হয়। এর পরপরই তা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামেন এনবিআরের আওতাধীন আয়কর ও শুল্ক ক্যাডারের কর্মকর্তারা।

অবশেষে সোমবার রাতে খসড়া অধ্যাদেশ জারি করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এতে রাজস্ব সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিয়োগের সুযোগ রেখে দেয়া হয়েছে, যা শুল্ক ও কর ক্যাডারের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ তৈরি করেছে।

বিশেষ করে অধ্যাদেশের অনুচ্ছেদ ৪(৪) অনুযায়ী, রাজস্ব নীতি বিভাগের পদগুলোতে অর্থনীতি, প্রশাসন, গবেষণা, আইনসহ অন্যান্য পেশার অভিজ্ঞ সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়োগের সুযোগ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব পদে কর সংগ্রহে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন যেকোনো সরকারি কর্মকর্তা অগ্রাধিকার পাবেন বলেও উল্লেখ রয়েছে।

অধ্যাদেশ অনুযায়ী, এনবিআর বিলুপ্ত হয়ে গেলে তার বর্তমান জনবল রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগে অন্তর্ভুক্ত হবে। আর দুই বিভাগের ভবিষ্যৎ কাঠামো সরকারের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।

আন্দোলনকারীদের উদ্বেগ বর্তমানে এনবিআরের প্রশাসনিক পদগুলো মূলত বিসিএস (কর) ও বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ক্যাডারের কর্মকর্তাদের দখলে রয়েছে। নতুন অধ্যাদেশে এসব পদে প্রশাসন ক্যাডারের অংশগ্রহণের সুযোগ রাখায় এনবিআর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

তাদের আশঙ্কা, এতে পেশাগত দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও জবাবদিহি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যা রাজস্ব প্রশাসনে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন :

সর্বশেষ সংবাদ