
ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :ভারত ও পাকিস্তান চারদিন ধরে পাল্টাপাল্টি হামলার পর অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পরস্পরের বিরুদ্ধে ‘লঙ্ঘনের’ অভিযোগ করেছে।
ভারত শাসিত কাশ্মীরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাওয়ার পর ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেছেন, “আমরা যে বোঝাপড়ায় পৌঁছেছি তা বারবার লঙ্ঘন করা হয়েছে।”
এর কিছুক্ষণ পর পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলে, “কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভারত দ্বারা সংঘটিত লঙ্ঘন সত্ত্বেও আমরা অস্ত্রবিরতি বিশ্বস্তভাবে বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
চারদিন ধরে পারমাণবিক শক্তিধর এই দুই প্রতিবেশীর মধ্যে হওয়া লড়াই কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র ছিল।
গত মাসে ভারত শাসিত কাশ্মীরের পাহেলগামে হওয়া প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারত বুধবার দুপুর রাতে পাকিস্তান ও পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীরের বিভিন্ন লক্ষ্যস্থলে হামলা চালায়। তখন থেকেই যুদ্ধ বিমান, ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও কামান নিয়ে সীমান্ত বরাবর দুই পক্ষ লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে।
চারদিন ধরে প্রাণঘাতী হামলা, পাল্টা হামলা চলার পর ভারত ও পাকিস্তান জানায়, তারা অবিলম্বে পূর্ণ অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প শনিবার সকালে এই খবর তার সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ঘোষণা করেন। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এই অস্ত্রবিরতি হয়েছে।
পরে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা হওয়ার কথা নিশ্চিত করে জানায়, এই কূটনীতিতে ‘তিন ডজন দেশ’ যুক্ত ছিল।
কিন্তু এসব ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর ভারত শাসিত জম্মু ও কাশ্মীরের প্রধান শহর শ্রীনগরের বাসিন্দারা ও বিবিসির প্রতিবেদকরা বিস্ফোরকের শব্দ শুনতে পান ও আকাশে আলোর ঝলক দেখেন।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, “সন্ধ্যার আগে আমরা যে বোঝাপড়ায় পৌঁছেছি গত কয়েক ঘণ্টা ধরে তা বারবার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। এটি আজকের বোঝাপড়ার লঙ্ঘন।”
মিশ্রি জানান, ভারতের সশস্ত্র বাহিনী ‘যথাযথ জবাব দিচ্ছে’ এরপর ‘পাকিস্তানকে এই লঙ্ঘনের প্রতিকার করার আহ্বান’ জানিয়ে তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন।
এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, “পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে আজকে ঘোষিত অস্ত্রবিরতির বিশ্বস্তভাবে বাস্তবায়নের বিষয়ে পাকিস্তান প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিছু এলাকায় ভারতের লঙ্ঘন সত্ত্বেও আমাদের বাহিনী দায়িত্বশীলতা ও সংযমের সাথে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি যে অস্ত্রবিরতি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হলে তা যথাযথ পর্যায়ে যোগাযোগের মাধ্যমে সমাধান করা উচিত।
“মোতায়েন থাকা সেনাদেরও সংযম প্রদর্শন করা উচিত।”
পরে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেন, “অস্ত্রবিরতি হয়েছে সবার সুবিধার জন্য।”