
ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধারা তিন দফা দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে টানা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। শনিবার (১০ মে) রাত থেকে তারা সেখানে অবস্থান শুরু করেন এবং সেখানেই রাত কাটিয়েছেন। তাঁদের প্রধান দাবি, আওয়ামী লীগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা, ‘জুলাই সনদ’ প্রকাশ এবং আহতদের জন্য সুচিকিৎসার নিশ্চয়তা।
তিন দিনের ধারাবাহিক আন্দোলনের পর শনিবার গভীর রাতে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা শাহবাগ ছেড়ে গেলেও আহত যোদ্ধারা অবস্থান থেকে সরেননি। শহীদ পরিবারগুলোর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে তারা একই মঞ্চে কর্মসূচি অব্যাহত রাখেন।
রোববার (১১ মে) দুপুরে শাহবাগ মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, আন্দোলনকারীরা সড়কের চারটি প্রবেশমুখে ব্যারিকেড বসিয়েছেন, ফলে শাহবাগ এলাকায় যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। বিকল্প রুট হিসেবে ফার্মগেট ও সায়েন্স ল্যাবের যানবাহন মৎস্য ভবন হয়ে হেয়ার রোড ব্যবহার করছে।
আন্দোলনকারীদের একজন, আহত যোদ্ধা আবু হাসান বলেন, “শুধু আশ্বাসে কিছু হবে না, আমরা বাস্তব পদক্ষেপ চাই। যাদের ক্ষমতায় আনতে আমরা রক্ত দিয়েছি, তারাই যদি আমাদের স্বীকৃতি না দেয়, তবে আমাদের জায়গা কোথায়?”
আন্দোলনকারীরা জানান, তারা শাহবাগে জড়ো হয়েছেন হাসনাত আবদুল্লাহর আহ্বানে সাড়া দিয়ে। যদিও রাত গভীর হলে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা-কর্মীরা কর্মসূচি স্থগিত করে চলে যান, আহত যোদ্ধারা আন্দোলন চালিয়ে যান দাবির পূর্ণ বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত।
এদিকে রাতেই অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠকে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দলটির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলাকালীন নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। পাশাপাশি, ট্রাইব্যুনাল আইনে সংশোধনী অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যার ফলে এখন দলীয় ভিত্তিতেও বিচার প্রক্রিয়া চালানো যাবে।
রাত সাড়ে তিনটার দিকে শাহবাগে উপস্থিত হয়ে এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “সোমবার সরকারিভাবে প্রজ্ঞাপন জারি হলে আমরা বিজয় মিছিল করব।” যদিও এনসিপি ও অন্য দলের কর্মীরা সরে যায়, আহত যোদ্ধারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তাদের তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন ছাড়া আন্দোলন শেষ হবে না।