ইউকে সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫
হেডলাইন

আটটার মধ্যে হল খুলে দেওয়ার দাবি কুয়েটের আবাসিক শিক্ষার্থীদের

ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীরা রোববার বিকেলে প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন, রাত ৮টার মধ্যে যেন আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়া হয়। বিকেল ৫টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা এ সংক্রান্ত একটি লিখিত আবেদন জমা দেন। আবেদন গ্রহণ করেন ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) অনুষদের ডিন অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম।

শিক্ষার্থীরা জানান, দাবি আদায় না হলে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থানকালে তাঁরা স্লোগান দেন— “মানি না মানব না, হল ভ্যাকান্ট মানব না”, “আমার হল, আমার হল, খুলতে হবে খুলতে হবে”।

এর আগে দুপুর সোয়া ৩টার দিকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে থাকেন। ধীরে ধীরে ক্যাম্পাসের মূল ফটকে জড়ো হন তাঁরা, কেউ একা, কেউবা দলবদ্ধভাবে। নতুন করে কেউ আসলে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা হাততালি দিয়ে স্বাগত জানান।

শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধ করতে শিক্ষকদের একাংশ তাঁদের শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, সিন্ডিকেটের অনুমতি ছাড়া হল খুলে দেওয়া সম্ভব নয়। শিক্ষকরা জানান, তদন্ত প্রতিবেদন আজ জমা পড়বে, সে অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

এক শিক্ষক বলেন, “তোমরা চাইতে পারো সাত বা দশ দিনের মধ্যে হল খুলে দেওয়া হোক, কিন্তু আজ রাতেই খুলে দিতে বললে সেটা আমাদের এখতিয়ারে নেই।” জবাবে শিক্ষার্থীরা বলেন, “২৫ ফেব্রুয়ারিতে যদি মাত্র কয়েক ঘণ্টায় সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত নিতে পারে, এখন কেন সম্ভব নয়?”

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন রোকেয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক আশরাফুল আলম, কুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ফারুক হোসেন, ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের সহকারী পরিচালক রাজন রাহা, বিভিন্ন হলের প্রভোস্টসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

ক্যাম্পাসে উত্তেজনা আরও বেড়েছে একটি মামলার খবরে। ১৮ ফেব্রুয়ারি সংঘর্ষের ঘটনায় ২২ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন নগরের মহেশ্বরপাশা এলাকার হোচেন আলী নামের এক ব্যক্তি। তিনি অভিযোগ করেন, কুয়েট গেটের সামনে শিক্ষার্থীরা তাঁকে মারধর করে স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয়। আদালত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ১৮ ফেব্রুয়ারি সংঘর্ষে শতাধিক মানুষ আহত হয়েছিলেন। পরদিন বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি কুয়েট সিন্ডিকেট সব হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়। ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে এবং তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

পরিস্থিতি থামার পরও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যান। উপাচার্যের পদত্যাগসহ ৬ দফা দাবিতে ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছেন তাঁরা।

এখন কুয়েট ক্যাম্পাসে উত্তেজনা নতুন রূপ নিচ্ছে। শিক্ষার্থীরা সরাসরি হলে ফেরার ঘোষণা দেওয়ায় প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছাড়াও অভিভাবকদের কাছে বার্তা পাঠিয়ে শিক্ষার্থীদের ফিরতে নিষেধ করা হয়েছে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন :

সর্বশেষ সংবাদ