
ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চলমান সামরিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় প্রায় এক হাজার রিজার্ভ সেনাকে বরখাস্ত করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে একটি খোলা চিঠিতে স্বাক্ষর করার পরই তাদের বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল আইয়াল জামির এই বরখাস্তের আদেশ অনুমোদন করেন—এমন তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটর।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে ইসরায়েল বিমানবাহিনীর শত শত রিজার্ভ সদস্য একটি যৌথ বিবৃতিতে বলেন, গাজায় চলমান যুদ্ধ “জাতীয় নিরাপত্তার জন্য নয়, বরং রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষায় পরিচালিত হচ্ছে”। তারা দাবি করেন, “যুদ্ধ নয়, বরং যুদ্ধবিরতিই বন্দিদের মুক্তির একমাত্র বাস্তব পথ”।
সেনাপ্রধান জামির এই অবস্থানকে “গুরুতর অপরাধ” হিসেবে আখ্যা দেন এবং বলেন, “এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া সদস্যরা সেনাবাহিনীতে ফেরার যোগ্য নন।”
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজও এই চিঠির তীব্র সমালোচনা করেছেন। তার মতে, “এই উদ্যোগ ইসরায়েলের যুদ্ধচেষ্টার বৈধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপপ্রয়াস।”
চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) ড্যান হালুৎস, সাবেক বিমানবাহিনী প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) নিমরড শেফার এবং সাবেক বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের প্রধান কর্নেল (অব.) নেরি ইয়ারকোনির মতো গুরুত্বপূর্ণ সাবেক কর্মকর্তারা।
তারা সকল ইসরায়েলি নাগরিককে গাজা যুদ্ধ বন্ধে এবং বন্দিদের মুক্ত করতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করার আহ্বান জানান।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, চিঠিতে স্বাক্ষর করা প্রায় ১০ শতাংশ রিজার্ভ সদস্য বর্তমানে সক্রিয় দায়িত্বে ছিলেন, বাকিরা সাবেক বা অবসরপ্রাপ্ত।
বিশ্লেষকদের মতে, এই বরখাস্ত কেবল সামরিক শৃঙ্খলার প্রশ্নই নয়, বরং ইসরায়েলের ভেতরে যুদ্ধবিরোধী মতকে কঠোরভাবে দমন করার চেষ্টারই প্রতিফলন। সামরিক প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরেই যুদ্ধ নিয়ে দ্বিমত ক্রমেই প্রকাশ্য হয়ে উঠছে, যা আন্তর্জাতিক পরিসরে ইসরায়েলের অবস্থানকে আরও চাপে ফেলতে পারে।