
ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :হামাসের হাতে আটক ৪ জনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। এদেরকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর অন্যান্য বন্দিদের সঙ্গে আটক করে হামাস। স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের দাবি বন্দিদের যত্নও নিওয়ে হয়েছিল এবং তাদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করা হয়েছিল। কিন্তু ইসরাইলি বাহিনী হামাসের অবস্থান লক্ষ্য করে বোমাবর্ষণ করে তাদের হত্যা করেছে।
গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীনে বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) চারজনের মরদেহ রেড ক্রসের কাছে হস্তান্তর করেছে।
কফিন হস্তান্তরের সময় হামাসের সশস্ত্র যোদ্ধারা এলাকাটি ঘিরে রেখেছিল। প্রতিটি কফিনের উপর পরিচয় শনাক্তের জন্য একটি করে ছোট ছবি লাগানো ছিল। নিরাপত্তার স্বার্থে এ সময় রেডক্রসের গাড়িগুলো ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে সরে যায়।
মরদেহগুলোর মধ্যে রয়েছে- কেফির বিবাস, অ্যারিয়েল, তাদের মা শিরি বিবাস এবং ওদেদ লিফশিতজের মরদেহ।
কফিন হস্তান্তরের পর ইসরায়েলের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়ার আগে তা ইসরায়েল মিলিটারিরা তল্লাশি করে। বৃষ্টি উপেক্ষা করে ইসরায়েলের সাধারণ জনগণ রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে কফিন বহনকারী গাড়িবহরকে শেষবারের মতো সম্মান জানিয়েছে।
ইসরায়েলের রাজধানী তেলআবিবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রধান কার্যালয়ের সামনে বন্দি চত্বরেও শোক প্রকাশ করতে জড়ো হয়েছিলেন অনেক নাগরিক।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার ট্যুর্ক মরদেহ হস্তান্তরের এই প্রক্রিয়াকে ঘৃণ্য ও বর্বরোচিত বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে বন্দির মরদেহ হস্তান্তরের জন্য এ ধরনের নির্মম ও অমানবিক পন্থা পরিহার করা উচিত।
মরদেহ হস্তান্তর করার পর এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আমরা বন্দীদের জীবিত রাখার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু ইসরাইলি বাহিনীর লাগাতার হামলার কারণে তারা নিহত হন। নেতানিয়াহুর যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তের কারণেই বন্দিদের মৃত্যু হয়েছে।
সংগঠনটি আরও জানায়, বন্দিদের যত্নও নিওয়ে হয়েছিল এবং তাদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করা হয়েছিল। কিন্তু ইসরাইলি বাহিনী হামাসের অবস্থান লক্ষ্য করে বোমাবর্ষণ করে তাদের হত্যা করেছে।
সংগঠনটি বলেছে, অপরাধী নেতানিয়াহু বন্দিদের কফিনে ফেরত পেয়ে শোক প্রকাশ করছে। কিন্তু এটি কেবল তার নিজের দোষ ঢাকার অপচেষ্টা।
নিহত বন্দিদের পরিবারের উদ্দেশ্যে হামাসের বক্তব্য, আমরা চেয়েছিলাম তাদের জীবিত ফিরিয়ে দিতে। কিন্তু তোমাদের সেনাবাহিনী এবং সরকারই তাদের হত্যা করেছে। এর সম্পূর্ণ দায় নেতানিয়াহুর উল্লেখ করে সংগঠনটি বলেছে, ইসরাইলি সরকার বারবার বন্দি বিনিময় চুক্তিতে বাধা সৃষ্টি করায় তারাই এর সম্পূর্ণ দায় বহন করবে।
একই সঙ্গে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীটি সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছে, জীবিত বন্দিদের ফেরত পেতে হলে শুধু বন্দি বিনিময় চুক্তিই একমাত্র পথ। যদি ইসরাইলি সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করে, তাহলে বন্দিরা আরও বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
এদিকে এক ফিলিস্তিনি মুখপাত্র জানান, হামাসের হাতে বন্দি থাকা অবস্থায় ওই চারজনই জীবিত ছিলেন। কিন্তু ‘জায়নিস্ট দখলদার বাহিনীর বিমান হামলায়’ তারা নিহত হন।