
ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের পর খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা বিভাগের কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শাহাদুজ্জামান শেখ।
ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।
পরে ক্যাম্পাসের বাইরে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় রেলিগেট, তেলিগাতিসহ আশপাশের বিএনপি নেতাকর্মীরা ছাত্রদলের সঙ্গে এবং সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়। তারপর থেকেই ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
বুধবার সকাল থেকে ক্যাম্পাসের ফটকের চারপাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নেন। এছাড়া টহল দিতে দেখা গেছে সেনাবাহিনীকেও। তবে কোনও ক্লাস-পরীক্ষা হয়নি। দুপুরে প্রশাসনিক, অ্যাকাডেমিকসহ সব ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে কিছু শিক্ষার্থীকে আবাসিক হল ছাড়তে দেখা গেছে।
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ছাত্রদলের কেউ জড়িত ছিল না বলে দাবি করেছেন সংগঠনটির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবু আফসান মো. ইয়াহিয়া। দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে জরুরি সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি করেছেন তিনি।
খুলনা মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (উত্তর) মো. নাজমুল হাসান রাজীব বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় মঙ্গলবার রাতেই পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। তবে এখনও কোনো মামলা হয়নি।
মঙ্গলবার রাতে শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেল করে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ছাত্ররাজনীতি পুরোপুরি নিষিদ্ধ, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের শাস্তি এবং উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবি জানান। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কুয়েটে সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে বলেও ঘোষণা দেয়া হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।
কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেছেন, বুধবার বেলা ১টা পর্যন্ত তাদের আল্টিমেটাম ছিল। এ সময়ের মধ্যে প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। তাই সাধারণ শিক্ষার্থীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রশাসনিক, অ্যাকাডেমিকসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছি। সকাল ৯টা থেকে কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগসহ পাঁচ দাবিতে কুয়েট চিকিৎসাকেন্দ্রের বাইরে অবস্থান করছেন শিক্ষার্থীরা। ওই চিকিৎসাকেন্দ্রের দোতলায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদ।
মঙ্গলবার রাতে অসুস্থ হওয়ার পর থেকে তিনি সেখানে আছেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা বিভাগের শাহাদুজ্জামান শেখ।
এদিকে বুধবার দুপুরে কুয়েটের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে খুলনা প্রেস ক্লাবে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছে ছাত্রদল কুয়েট শাখা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবু আফসান মো. ইয়াহিয়া।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার সঙ্গে ছাত্রদল জড়িত নয়। সেইসঙ্গে হামলার ঘটনার জড়িতদের শাস্তি দাবি করছি।