যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন কিংবদন্তি তবলাবাদক ওস্তাদ জাকির হোসেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।
এক বিবৃতিতে তার পরিবার জানিয়েছে, ফুসফুসজনিত অসুস্থতা থেকে উদ্ভূত জটিলতার কারণে জাকির হোসেন মারা গেছেন।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, তিনি গত দুই সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে ছিলেন এবং অবস্থার অবনতি হলে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়েছিল।
জাকির হোসেনকে চেনেন না এমন মানুষের সংখ্যা পৃথিবীতে কম। বিশ্ব ধ্রুপদী সঙ্গীতবাদ্যের জগতে তিনি এক নক্ষত্রের নাম। পদ্মশ্রী থেকে শুরু করে পদ্মভূষণ, পদ্মবিভূষণ, গ্র্যামি- সব পুরস্কারই রয়েছে উস্তাদের ঝুলিতে। শিল্পীর আচমকা এমন পরিণতিতে শোকের ছায়া সব মহলেই।
১৯৫১ সালে মুম্বইয়ে জন্ম হয় জাকির হুসেনের। মাত্র তিন বছর বয়স থেকে তাঁর তবলার সফর শুরু। সাত বছর বয়সে একা মঞ্চে অনুষ্ঠান করেছেন তিনি। শিল্পীর সম্মানে গর্বিত হিন্দুস্তানি ধ্রুপদী সঙ্গীত জগৎও।
চলতি বছর গ্র্যামি পুরস্কার পেয়েছিলেন জাকির হুসেন। বেস্ট গ্লোবাল মিউজিক অ্যালবাম হিসেবে ‘শক্তি’ ব্যান্ডের গানের অ্যালবাম ‘দিস মোমেন্ট’ পুরস্কার পায়। ব্যান্ডের কণ্ঠশিল্পী শঙ্কর মহাদেবন এবং তবলাবাদক ছিলেন তিনি। জুটির হাত ধরেই ২০২৪ সালে ভারতে গ্র্যামি আসে।
জাকির হোসেনের বাবা ওস্তাদ আল্লারাখা খানও একজন প্রখ্যাত তবলাবাদক ছিলেন। জাকির হোসেন শৈশব থেকেই তবলা বাজানোয় দক্ষতা অর্জন করেন।
ভারতীয় ক্লাসিক্যাল সংগীতের একজন পুরোধা হিসেবে বিবেচনা করা হয় জাকির হোসেনকে। ১৯ বছর বয়সে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। পণ্ডিত রবিশঙ্করের সাহচর্যে ১৯৭০ সালে প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের একটি সঙ্গীতানুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন তিনি।
নিউইয়র্কে থাকা অবস্থায় ইংলিশ গিটারিস্ট জন ম্যাকলাফলিনকে নিয়ে ব্যান্ডদল ‘শক্তি’ প্রতিষ্ঠা করেন জাকির হোসেন। ভারত ও ভারতের বাইরে অনেক বিখ্যাত সংগীত শিল্পী ও মিউজিক গ্রুপের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি।
যার মধ্যে রয়েছেন প্রখ্যাত আইরিশ গায়ক ভ্যান মরিসন ও ব্রিটিশ মিউজিক গ্রুপ ‘লন্ডন স্ট্রিং কোয়ার্টলেট’।