ইউকে বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
হেডলাইন

বিসিবি’র সভাপতি ও পরিচালকের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ

ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশ ক্রিকেটে বোর্ডে (বিসিবি) পরিবর্তনের দাবি উঠেছে। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে বিসিবি’র প্রধান কার্যালয়ের সামনে প্রায় প্রতিদিনই চলছে মিছিল-মিটিং। গতকাল সাবেক ফুটবলার বিএনপি’র ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা উত্তর সিটির সদস্য সচিব আমিনুল হকের নেতৃত্বে সেখানে উপস্থিত হন ক্রীড়া সংগঠকরা। তারা বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সহ বর্তমান বোর্ড পরিচালকদের পদত্যাগ দাবি করেন। গতকাল স্টেডিয়ামের সামনে বিক্ষোভ করেন বাংলাদেশ ক্রীড়া উন্নয়ন পরিষদের ব্যানারে থাকা ক্রীড়া সংগঠকরা। ব্যানারে লেখা ছিল, ‘বিসিবিকে দুর্নীতিবাজদের হাত থেকে মুক্ত করার এটাই সময়। বাংলাদেশ ক্রিকেট আজ কোথায়? জবাব চাই।’ কোনও কোনও ব্যানারে লেখা, ‘বিসিবির সকল অযোগ্য পরিচালকদের পদত্যাগ করতে হবে।’ সেই সময় বিসিবির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাবু ও কোয়াবের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পালও উপস্থিতি ছিলেন। এই তিনজনের সঙ্গে প্রতিবাদ সভায় আরও অনেকেই বক্তব্য রাখেন। তাদের একটাই দাবি- বিসিবির সব পরিচালকদের পদত্যাগ করতে হবে।
তবে বিসিবি একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। যে গুলো সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত হলেও তাদের নিজেদের আইন তৈরি করার অধিকার আছে এবং নিজেদের মতো করে নিজেদের প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে।

যে পরিচালনার ভিতর সরকার বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান হস্তক্ষেপ করে না। শুধু তাই নয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) নিয়ম মেনেই নির্বাচিত হয়ে আসতে হয় বিসিবি’র কার্যনির্বাহী পরিষদকে। অনির্বাচিত কারো বিসিবি পরিচালনার সুযোগ নেই। তাই জোর করে বোর্ড ভেঙে দিলে আইসিসি বাংলাদেশ ক্রিকেটকে নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা রাখে। শুধু তাই নয়, স্টেডিয়ামের বাইরে এই ধরনের মিছিল, মিটিংকে আইসিসি নিরাপত্তা ইস্যু হিসেবে বিবেচনায় নিতে পারে। এতে করে কোনো দেশ বাংলাদেশ সফর করতে এলে নিরাপত্তার বিষয়টি জোরালো ভাবে সামনে চলে আসবে। এখন ধারণা করা হচ্ছে নিরাপত্তাকে ইস্যু করে বাংলাদেশ থেকে সরিয়ে নেয়া হতে পারে আইসিসি নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। যা ৩রা অক্টোবর বাংলাদেশে হওয়ার কথা রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে নিরাপত্তার কথা ভেবে ভিন্ন ভেন্যুতে বিশ্বকাপ সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিতে পারে আইসিসি। গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ই আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে হদিস পাওয়া যাচ্ছে না বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপনের। কর্মকর্তাদের একটি বড় অংশও বিসিবি কার্যালয়ে আসছেন না। এই সুযোগে গত কয়েকদিন ধরেই বিসিবিতে আসছেন বিএনপিপন্থী সংগঠকরা। তারা বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস, বিপিএল গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান ইসমাইল হায়দার মল্লিক, পরিচালক ওবেদ রশীদ নিজাম, ক্রিকেট বোর্ডের শীর্ষ এই কর্মকর্তাদের নাম উল্লেখ করে বিক্ষোভ করেছেন গতকাল।
তবে প্রশ্ন হচ্ছে পাপনের অনুপস্থিতিতে কীভাবে চলবে বিসিবি! পরিচালকদের শূন্যস্থান কীভাবে পূরণ করা যাবে তা নিয়েও। গুরুতর পদে থাকা এসব কর্তাব্যক্তিকে এ মুহূর্তে চাইলেও সরিয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। তেমন কিছু ঘটলে আইসিসির তরফ থেকে নিষেধাজ্ঞায় পড়বে বাংলাদেশের ক্রিকেট। তবে বিসিবির গঠনতন্ত্রের ১৫(২)-এর ধারা অনুযায়ী, শারীরিক অসুস্থতা, বিদেশ গমন বা যথাযথ কারণ ছাড়া পরপর তিনটি বোর্ডসভায় অনুপস্থিত থাকলে পরিচালকের সদস্যপদ বাতিল হবে। তবে সেটি থেকে বাঁচতেও আছে নানা অজুহাতের সুযোগ। যে কারণে এখনই পাপনের পদত্যাগের বিষয়টি সমাধাণ হওয়ার নয় যদি না তারা স্বেচ্ছায় সেটি করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সংগঠক জানিয়েছেন, ‘আমরা দাবি রাখছি ক্রিকেট বোর্ডে পরিবর্তনের। তবে এখন যদি সেটি জোর করে করার চেষ্টা হয় তাহলে হীতে বিপরীত হতে পারে। বিপদে পড়তে পারে বাংলাদেশ ক্রিকেট। তাই সবদিক বিবেচনা করে গঠনতন্ত্র মেনে ও আইসিসির সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত।’

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন :

সর্বশেষ সংবাদ

ukbanglaonline.com