ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :দেশজুড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা ও শিক্ষার্থীদের হত্যার বিচারসহ নয় দফা দাবি আদায়ে রোববার (৪ আগস্ট) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘সর্বাত্মক অসহযোগ’ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। একই সাথে আগামীকাল শনিবার সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয়া হয়েছে। এ সময় তারা সারাদেশের মানুষকে অলি-গলি ও পাড়ায় পাড়ায় সংগঠিত হয়ে কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানিয়েছেন।
শুক্রবার (২ আগস্ট) রাত ৮টায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্ট ও ভিডিও বার্তায় এ ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ ও সহ-সমন্বয়ক রিফাত রশিদ।
সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, সারা দেশে ছাত্র-নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা করে খুনের প্রতিবাদ ও ৯ দফা দাবিতে আগামীকাল শনিবার (৩ আগস্ট) সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও রোববার (৪ আগস্ট) থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয়া হলো।
তিনি বলেন, আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট ঘোষণা করছি, আগামীকাল সারা দেশের প্রতিটি পাড়া-মহল্লায়, প্রতিটি জায়গায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে। আগামীকালের পর থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন পালিত হবে।
কালকের পর থেকে এ সরকারকে কোনো ট্যাক্স দেয়া হবে না। এ সরকারের কোনো অফিসে যাওয়া হবে না। সরকারকে সর্বাত্মক অসহযোগিতা করা হবে বলেও জানান তিনি।
মাসুদ আরও বলেন, সারা দেশের ছাত্র-নাগরিক, অভিভাবক, মা-বোন যে যেখানে আছেন আগামীকাল থেকে প্রত্যেকে রাজপথে নেমে আসবেন। কেউ বাড়িতে বসে থাকবেন না। এটা আপনাদের দায়বদ্ধতা, প্রতিটি শহীদের প্রতি আপনাদের এই দায়বদ্ধতা আছে।
একই সাথে সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল ও অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘সর্বাত্মক অসহযোগ’ আন্দোলনের ডাক দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে এক পোস্টে আসিফ মাহমুদ লেখেন, সারা দেশের আপামর জনসাধারণকে অলিতে-গলিতে, পাড়ায় পাড়ায় সংগঠিত হয়ে কর্মসূচি সফল করার আহ্বান করা যাচ্ছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবদুল কাদের প্রেরিত এক বার্তায় শুক্রবার সারা দেশে ‘প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল’ নামে নতুন কর্মসূচি পালন করার আহ্বান জানানো হয়। বার্তায় বলা হয়, আপনারা জানেন আমরা আমাদের কোনো ব্যক্তিস্বার্থের জন্য আন্দোলন করছি না। আমাদের আন্দোলন আপনার ও আপনার সন্তানের মুক্তির জন্য। কী অপরাধ ছিল আমাদের? সাংবিধানিক অধিকার চাওয়াটা কি আমাদের অপরাধ? কী অপরাধে শত শত ভাইদের হত্যা করা হলো? আমরা এর জবাব জানি না।
কিন্তু এর জবাব ও বিচার না নিয়ে আমরা আমাদের আন্দোলনকে থামাব না। জাতির এই দুর্দিনে আন্দোলনে অংশ নেওয়ার অপরাধে শহীদ, আহত, পঙ্গু ও গ্রেপ্তার হওয়া সকলের স্মরণে শুক্রবার দেশব্যাপী ‘প্রার্থনা ও ছাত্র জনতার গণমিছিল’ কর্মসূচি ঘোষণা করছি।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ১৬ জুলাই থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ঘটনা ঘটতে থাকে। এসব ঘটনায় সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত ১৫০ জন নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। যদিও বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ সংখ্যা দুই শতাধিক বলে দাবি করা হচ্ছে।