ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, ফিলিস্তিনের হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে ‘কাপুরুষোচিতভাবে’ হত্যার জন্য ইসরায়েলকে ‘অনুশোচনা’ করতে হবে। ইরান তার আঞ্চলিক অখণ্ডতা, সম্মান গর্ব ও মর্যাদা রক্ষা করবে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসমাইল হানিয়ার নিহতের ঘটনায় ইরানে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোকের ঘোষণা করা হয়েছে। এক বিবৃতিতে ইরানের প্রেসিডেন্ট হানিয়াকে একজন ‘সাহসী নেতা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, ইসমাইল হানিয়ার মৃত্যুর প্রতিশোধ নেয়া ‘তেহরানের কর্তব্য’। ইসরায়েল- যারা এ হত্যার দায় স্বীকার করেনি তাদের ‘কঠোর শাস্তি’ এর ভিত্তি তৈরি করেছে।
এদিকে ইসমাইল হানিয়া নিহতের ঘটনায় এখনও সরাসরি কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি ইসরায়েল। তবে পরিস্থিতি ‘মূল্যায়ন’ করছে ইসরায়েল। দেশটির সামরিক মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি এ কথা জানিয়েছেন।
ইসমাইল হানিয়া ২০১৯ সালে ফিলিস্তিনের গাজা ছেড়ে কাতারে নির্বাসিত জীবনযাপন করছিলেন। ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মঙ্গলবার ইসমাইল হানিয়া তেহরানে গিয়েছিলেন। এরপর সেখানেই অবস্থান করছিলেন তিনি। যে ভবনে ছিলেন সেখানে বুধবার সকালে এক হামলায় তিনি ও তার দেহরক্ষী নিহত হন। হামাস এই হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে। তবে হানিয়াকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি ইরান।
ইরানের সংবাদমাধ্যম ফার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তেহরানে বিমান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইসমাইল হানিয়াকে হত্যা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে হোয়াইট হাউস থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
হত্যাকাণ্ডটি এমন এক সময় ঘটল যখন বাইডেন প্রশাসন হামাস ও ইসরায়েলকে একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মিদের মুক্তির চুক্তিতে সম্মত হওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে সর্বশেষ আলোচনার জন্য সিআইএ পরিচালক বিল বার্নস ইসরায়েল, কাতার ও মিশরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করতে রোববার রোমে গেছেন।
ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানী এবং দেশটির পরমাণু কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত অন্যদের লক্ষ্য করে বছরব্যাপী হত্যার অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ২০২০ সালে একজন শীর্ষস্থানীয় ইরানি সামরিক পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদেহকে ইরানে একটি গাড়িতে রিমোট নিয়ন্ত্রিত মেশিনগানের সাহায্যে হত্যা করা হয়েছিল।
ইসমাইল হানিয়া ২০১৯ সালে ফিলিস্তিনের গাজা ছেড়ে কাতারে নির্বাসিত জীবনযাপন করেছিলেন। গাজার শীর্ষস্থানীয় হামাস নেতা হলেন ইয়াহিয়া সিনওয়ার, যিনি ৭ অক্টোবরের হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন। গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় ১২০০ জন নিহত এবং প্রায় আড়াইশ জনকে জিম্মির ঘটনায় ইসমাইল হানিয়া এবং হামাসের অন্যান্য নেতাদের হত্যার ঘোষণা দিয়েছিল ইসরায়েল। অক্টোবরের ওই হামলার পর থেকে হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েল যুদ্ধে ঘোষণা করে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে; এরই মধ্যে ৩৯ হাজার ৩৬০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৯০ হাজার ৯০০ জনের বেশি আহত হয়েছে।