ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক : ব্রিটেনের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। দেশটিতে ৬৫০ আসনের জন্য ৯ রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে ৪ হাজার ৫১৫ জন প্রার্থী নির্বাচন করবেন। মুসলিম ও বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকায় গাজা ইস্যুকে কেন্দ্র করে অন্তত শতাধিক প্রার্থী স্বতন্ত্র নির্বাচন করছেন। এবারের নির্বাচনে এখন পর্যন্ত ৩৪ জন বাংলাদেশি প্রার্থী বিভিন্ন আসন থেকে নির্বাচন করছেন।
যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমন্সে সংখ্যালঘু জাতিগত পটভূমি থেকে বর্তমানে ৬৫ জন সংসদ সদস্য (এমপি) রয়েছেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক এশিয়ান বংশো™ূ¢ত। প্রথম বাংলাদেশি এমপি হিসেবে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ইতিহাস সৃষ্টি করেন রুশনারা আলী। তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে ড. রূপা হক, টিউলিপ সিদ্দিক ও আপসানা বেগম ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের প্রতিনিধিত্ব করছেন।
যুক্তরাজ্যের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়া ৩৪ জন বাংলাদেশি প্রার্থীর মধ্যে আটজন লেবার পার্টি থেকে নির্বাচন করছেন। তাদের মধ্যে ছয়জনই নারী। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি থেকে নির্বাচন করছেন দুজন। স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি থেকে একজন, লিবডেম থেকে একজন। এ ছাড়া ১২ জন স্বতন্ত্র নির্বাচন করছেন। বাকি নয়জন নির্বাচন করছেন ওয়ার্কার্স পার্টি অব ব্রিটেন, রিফর্ম ইউকে, গ্রিন পার্টি ও সোশিয়ালিস্ট পার্টি থেকে।
লেবার পার্টি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন রুশনারা আলী (বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো), টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক (হ্যাম্পস্টেড এবং হাইগেট), আপসানা বেগম (পপলার ও লাইমহাউস), ড. রূপা হক (ইলিং সেন্ট্রাল এবং অ্যাক্টন), নুরুল হক আলী (গর্ডন এবং বুকান), রুমি চৌধুরী (উইথাম), রুফিয়া আশরাফ দক্ষিণ নর্থহ্যাম্পটনশায়ার) ও নাজমুল হোসাইন (ব্রিগ এবং ইমিংহাম)।
ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন আতিক রহমান (টটেনহ্যাম), সাইদুজ্জামান সাঈদ (ইলফোর্ড দক্ষিণ), (স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি (এসএনপি) থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন নাজ আনিস-মিয়াহ (ডানফার্মলাইন এবং ডলার)। লিবড্যাম থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন রাবিনা খান (বেথনাল গ্রিন এবং স্টেপনি)। একই আসন থেকে গাজা ইস্যু সামনে নিয়ে স্বতন্ত্র নির্বাচন করছেন আজমল মাসরুর (বেথনাল গ্রিন এবং স্টেপনি), ব্যারিস্টার শাম উদ্দিন (বেথনাল গ্রিন ও স্টেপনি) ও মো. সুমন আহমেদ (বেথনাল গ্রিন ও স্টেপনি)। পপলার লাইম হাউসে বর্তমান লেবার এমপি আপসানা বেগমকে স্বতন্ত্র হিসেবে চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন তার সাবেক স্বামী এহতাশামুল হক। বর্তমান লেবার লিডার, সব জরিপে যিনি ভবিষ্যৎ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সেই স্যার কিয়ার স্টারমারকে চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন ব্রিটিশ বাংলাদেশি ওয়াইস ইসলাম (হলবর্ন এবং সেন্ট প্যানক্রাস)। এখানে গাজা ইস্যু নিয়ে কথা বলে ভোটারদের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করছেন ওয়াইস ইসলাম। বাংলাদেশি অধ্যুষিত বো-স্ট্রাটফোর্ড আসনে ওয়ার্কাস পার্টি থেকে হালিমা খান প্রার্থী হয়েছেন। হালিমা লেবার পার্টির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ক্যাম্পেইন চালাচ্ছেন। একই আসনে ব্যারিস্টার ওমর ফারুক ও নিজাম আলী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এ ছাড়া ইলফোর্ড সাউথ থেকে গ্রিন পার্টির মনোনয়ন পেয়েছেন সৈয়দ সিদ্দিকী। একই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন নূরজাহান বেগম। একই আসনে জর্জ গ্যালওয়ের ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে নির্বাচন করছেন গোলাম টিপু। একই পার্টি থেকে হ্যাকনি সাউথ শোরডিচে মোহাম্মদ শাহেদ হোসেন নির্বাচন করছেন। এ ছাড়া ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে বেডফোর্ডে নির্বাচন করছেন প্রিন্স সাদিক চৌধুরী। এর আগে তিনি লেবার পার্টি থেকে নির্বাচন করেছিলেন ২০১৫ সালে। হঠাৎ করে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে চরম রক্ষণশীল দল রিফর্ম ইউকে থেকে ইলফোর্ড সাউথ থেকে প্রার্থী হয়েছেন রাজ ফরহাদ। এ ছাড়া ওল্ডহাম ওয়েস্ট, চ্যাডারটন, ও রাস্টন থেকে রাজা মিয়া দাঁড়িয়েছেন স্বতন্ত্র হিসেবে, একই আসন থেকে সৈয়দ সামসুজ্জামান শামস দাঁড়িয়েছেন গ্রিন পার্টি থেকে। ব্যাক্সহিল অ্যান্ড বেটল থেকে আবুল কালাম আজাদ, নিউক্যাসল সেন্ট্রাল ও ওয়েস্ট থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন হাবিব রহমান, মমতাজ খানম ফকস্টোন থেকে সোশিয়ালিস্ট পার্টি থেকে প্রার্থী হয়েছেন। ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে ফাইসাল কবির প্রার্থী হয়েছেন আলথ্রিনচাম ও সালে ওয়েস্ট থেকে। ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে মোহাম্মদ বিলাল ম্যানচেস্টার রুশহল্ম থেকে প্রার্থী হয়েছেন।
এদিকে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছেন আপসানা বেগম, রুপা হক ও টিউলিপ সিদ্দিক। রুশনারা আলী বলেন, কনজারভেটিভ সরকার গত ১৪ বছরে পাঁচবার প্রধানমন্ত্রী দিয়েছে কিন্তু দেশকে ধ্বংস করেছে অর্থনৈতিকভাবে।