ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশি অভিবাসীদের নিয়ে অযাচিত মন্তব্য করে নিজ দল লেবার পার্টিরই প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীপ্রার্থী স্যার কিয়ার স্টারমার। আর তাতেই সুর পাল্টেছে তার। ব্রিটিশ গণমাধ্যম আইটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তাদের মনে আঘাত দেওয়া বা কোনো উদ্বেগ সৃষ্টি করতে চাইনি।’
স্টারমার আরও জানান, তিনি ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের অবিশ্বাস্য অবদানকে মূল্যায়ন করেন এবং লেবার পার্টি ক্ষমতায় আসলে সেই অনুযায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে এবং ভবিষ্যতে সেই সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করতে চান।
শনিবার (২৯ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সোমবার সান পত্রিকার পাঠকদের এক প্রশ্নের জবাবে লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টারমার বলেছিলেন, ‘ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশের মতো দেশগুলো থেকে আসা যাদের বৈধ কাগজপত্র নেই, তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।’
অবৈধ অভিবাসী মোকাবিলা সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের উদাহারণ টেনে স্টারমার বলেছিলেন, ‘এ মুহূর্তে বাংলাদেশের মতো দেশগুলো থেকে আসা মানুষজনকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে না। কারণ বর্তমান সরকার তেমন কোনো ব্যবস্থা দাঁড় করাতে পারেনি।’
তার এমন বক্তব্যে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। বিপাকে পড়েন লেবার পার্টির মনোনয়ন পাওয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রার্থীরা। এমনকি এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে পদত্যাগ করেন পূর্ব লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলে লেবার পার্টির ডেপুটি লিডার সাবিনা আক্তার। তিনি বলেন, ‘দলের নেতা যখন আমার সম্প্রদায়কে একঘরে করে, আমার বাংলাদেশি পরিচয়কে অপমান করে, তখন আমি আর দল নিয়ে গর্ব করতে পারি না।’
বাংলাদেশি কমিউনিটিতে তীব্র ক্ষোভের মুখে এর ব্যাখ্যা দেয় লেবার পার্টি। বাংলাদেশের সঙ্গে লেবার পার্টির সম্পর্ক তুলে ধরে দলটি জানায়, স্টারমার কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে এমন মন্তব্য করেননি। বিবৃতিতে বলা হয়, তাদের দলের সঙ্গে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ কমিউনিটির সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর ও বন্ধুত্বপূর্ণ।
শেষপর্যন্ত স্টারমারও এই কথার সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলেছেন, ‘বাংলাদেশিরা যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি এবং সংস্কৃতিতে বিরাট অবদান রেখেছে। লেবার পার্টি এবং বাংলাদেশি কমিউনিটির মধ্যে দৃঢ় একটি বন্ধন আছে। আমার সঙ্গেও বাংলাদেশ কমিউনিটির বন্ধন খুবই শক্ত। বিশেষ করে আমার নির্বাচনী এলাকায়।’
স্টারমার কথাগুলো বলার সময় বিবিসি রেডিও ৫ লাইভের উপস্থাপক নিকি ক্যাম্পবেল বলে ওঠেন, তাহলে আপনি যে মন্তব্য করেছিলেন, তা ‘আনাড়িপনা’ ছিল বলে আপনি মেনে নিচ্ছেন কিনা।
জবাবে, স্টারমার বলেন, ‘সেটি বলাই ভালো হবে। আমি কাউকে আক্রমণ করে কথা বলতে চাইনি। আমি কেবল আশ্রয়প্রার্থনা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘আমি আসলে বোঝাতে চেয়েছিলাম আশ্রয়প্রার্থীদের প্রত্যাবর্তনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি নিরাপদ দেশ এবং যুক্তরাজ্যের সাথে ফেরত পাঠানোর চুক্তি রয়েছে।’