ইউকে শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪
হেডলাইন

আকাশে ড্রোন উড়িয়ে জমি দখল করতেন বেনজীর

ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের বিপুল সম্পদ গড়ে তোলার খবর এখন ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’। এ নিয়ে চায়ের দোকান-অলিগলি থেকে সর্বত্র চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। ঠিক তখনই একে একে মুখ খুলতে শুরু করেন ভুক্তভোগীরা। এতে বেরিয়ে আসছে বেনজীরের বিরুদ্ধে ভয়ংকর সব কর্মকাণ্ডের তথ্য।

সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্ক নির্মাণের আগে বেনজীর আহমেদ উপস্থিত থেকে ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে প্রথমে নকশা করেন। পরে ফসলি জমিতে পিলার দিয়ে দখলে নেন বেনজীরের লোকজন। ভয়ভীতি দেখিয়ে লিখে নেন সম্পত্তি।

হিন্দু অধ্যুষিত গোপালগঞ্জের সাহাপুর ইউনিয়ন। এখানকার বৈরাগীর টোল গ্রামের বাসিন্দা জুয়েল বল। আড়াই বছর আগেও তার ছিল দুই বিঘা ফসলি জমি। ধান, সরিষা ও আলু ফসল ফলাতেন তিনি। চাপের মুখে পড়ে এই জমি লিখে দিতে হয়েছে বেনজীর আহমেদের পরিবারকে। চোখেমুখে এখনো বিরাজ করছে আতঙ্ক। ফসলি জমি হারিয়ে এখন, বেঁচে থাকার জন্য বাড়ির কাছে নির্মাণ করছেন মুরগির খামার।

বেনজীরের ভয়ে নিজের জমিতে আর কখনো চাষাবাদ করতে পারবেন না, এমন চিন্তাতেই শত শত কৃষক এখন বেছে নিচ্ছেন অন্য পেশা। হুমকির আতঙ্কও কাটেনি বাসিন্দাদের।

তাদের অভিযোগ, প্রথমে বেনজীর আহমেদ পুলিশ ও লোকজন নিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে আকাশে ড্রোন উড়িয়ে নকশা করেন, পরে পিলার দিয়ে দখলে নেন জমি।

জমি লিখে না দিলে শুরু হয় অত্যাচার নির্যাতন। এভাবেই ক্ষমতার অপব্যবহার করে লিখে নেন শত শত কৃষকের জমি। আর কোনদিন জমিতে ফসল চাষাবাদ করতে পারবেন না, এতে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা।

জানা যায়, জোর করে কৃষকদের সম্পত্তি লিখে নেয়ার ঘটনায় ভুক্তভোগীরা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, গোপালগঞ্জে ৫০০ বিঘা জমি লিখে নিয়েছেন সাবেক পুলিশ প্রধান। হিন্দুদের জমি জোর করে লিখে নিয়ে পার্ক বানিয়েছেন বেনজীর আহমেদ। এসব ফসলি জমি ফেরতের পাশাপাশি তদন্তপূর্বক দোষীদের বিচার দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগী জুয়েল বল বলেন, আমাদের জমি দিতে চাই নাই। হিন্দু মানুষ, ভয় আর আতঙ্কে দুই বিঘা জমি লিখে দেই। প্রথমে ড্রোন ব্যবহার করে জমি নকশার পর দখলে নেই। বলেছিল টাকাও দিবে না। তাই সবকিছুই হারানোর ভয়ে জমি লিখে দেই। পরে বাধ্য হয়ে একটি মুরগির খামার বানাচ্ছি। জীবন বাঁচানোর জন্য বিকল্প পথ এটি।’

বৈরাগীর টোল গ্রামের কিরণ বল বলেন, দুই থেকে আড়াই বছর আগে বেনজীর আহমেদ স্বয়ং উপস্থিত থেকে ড্রোন দিয়ে প্রথমে জমি পছন্দ করেন। পরে লাল পতাকা টানিয়ে আস্তে আস্তে দখল করে নেন জমি। অনেকেই টাকা না দিয়েই ভোগ করছেন ফসলি জমি। এতে অসহায় এখানকার কৃষকরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় দুইজন প্রভাবশালীদের সমন্বয়ে এই জমি কিনেন বেনজীর। এতে সহায়তা করেন পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন :

সর্বশেষ সংবাদ