ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক : প্রেমিকার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলার পর ফেইসবুকে আবেগঘন স্টাটাস দিয়ে ঘরের আড়ার সাথে গলায় কাপড় পেচিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের জেলেখালি গ্রামের বাসুদেব মন্ডলের ছেলে প্রদীপ কুমার মন্ডল ওরফে দ্বীপ।
বুধবার দিবাগত রাত (১৮ এপ্রিল) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে যমুনা রানী মন্ডল তার ছেলের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান।
যমুনা রানী মন্ডল বলেন, তার ছেলে হায়বাদপুর এ সোবহান মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১০ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনা করে। জীবন জীবিকার তাগিদে সে বোন মাধবী মন্ডলের কীর্তণ দলসহ বিভিন্ন কীর্তনদল ও যাত্রাদলে করতাল বাজাতো। বাজাতো আড়বাঁশিও। দুই বছর আগে বংশীপুর কয়ালপাড়ার প্রদীপ কুমার মন্ডল ওরফে পাগলের মেয়ে লক্ষী রানী মন্ডল ওরফে পাখির সঙ্গে পরিচয় হয়। এরপর থেকে দ্বীপ ও পাখির মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। কথা ছিল পাখির ১৮ বছর বয়স পার হলে দুজনে বিয়ে করবে। তা আর হলো না। পাখি অন্যত্র সম্পর্ক গড়ে তুলে তার সঙ্গে বেইমানী করেছে এমন অভিমানে ঘরের আড়ার সাথে কীর্তানিয়া হিসেবে নিজের ব্যবহৃত ওড়না পেচিয়ে দ্বীপ আত্মহত্যা করেছে।
ফেইসবুকে দেওয়া আবেগঘন স্টাটাসে দ্বীপ উল্লেখ করেছে যে, ‘বিদায় পাখি, তুমি যে এইভাবে আমার সাথে বেইমানি করবে তা আমি কখনো বুঝিনি। আর কখনোই তোমাকে বিরক্ত করবো না। বিন্তু একটা কথা বলবো, তুমি আমাকে যেভাবে ঠকালে এইভাবে অন্য কোন মায়ের কোল খালি করো না প্লীজ। আর কখনই তোমার জন্য পাগলামি করবে কেউ। ভালো থেকো পাখি। আবার যে নতুন মানুষটার সাথে কথা বলছো তাকে যেন কাঁদাইও না। তোমার দেওয়া জামা, প্যান্ট ও জুতো পরে মরলাম পাখি। আমি আমার কথা রেখেছি পাখি। দুই বছর আগে বলেছিলাম না পাখি যেদিন তুমি আমাকে ভুলে যাবে সেই দিনই আমার মরণ হবে। রেখেছি পাখি আমার কথা। আমি তোমার মত বেইমান না। আর আমার মৃত্যুর জন্য তুমি ও তোমার পরিবার দায়ী।’
এদিকে দ্বীফ এর মৃত্যুর খবর পেয়ে বুধবার ভোরেই পালিয়ে যায় পাখি ও তার পরিবারের সদস্যরা। বুধবার সকালে পাখির বাড়িতে তালা ঝুলছিল। তবে পাখিদের অবস্থান সম্পর্কে কোন মন্তব্য করতে চাননি প্রতিবেশী ও পাখির স্বজনরা।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আবুল কালাম আজাদ জানান, দ্বীপ এর মরদেহ উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
