ইউকে শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪
হেডলাইন

সিআরবির গাছগুলোকে ঐতিহ্যবাহী বৃক্ষ ঘোষণার দাবি বেলার

ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :চট্টগ্রাম নগরের টাইগারপাস থেকে সিআরবিমুখী মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী সড়কের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী গাছ কেটে র‍্যাম্প নির্মাণের সকল উদ্যোগ বাতিলের দাবি জাানিয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সিমিতি (বেলা)।

একইসঙ্গে চিহ্নিত এবং একই সড়কের অন্যান্য পুরোনো ও শতবর্ষী গাছগুলোকে ঐতিহ্যবাহী ঘোষণার দাবি জানানো হয়েছে নোটিশে।

নোটিশটির অনুলিপি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বরাবর পাঠানো হয়েছে।

এর আগে ১ এপ্রিল (সিডিএ) শীর্ষক একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, র‌্যাম্প নির্মাণ করতে চট্টগ্রামের আইকনিক দ্বিতল সড়ক হিসেবে পরিচিত টাইগারপাস থেকে সিআরবিমুখী পাহাড়ি রাস্তাটির মাঝের ঢালে আনুমানিক প্রায় ১০ প্রজাতির শতবর্ষী ও ঐতিহ্যবাহী ৪৪টি গাছ কাটার জন্য গাছের গায়ে নাম্বার বসিয়েছে সিডিএ।

নগরীর লালখানবাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটর এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মাণ করা হবে। চট্রগ্রামের দ্বিতল এই সড়কের মাঝে পাহাড়ের ঢালে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী ও শতবর্ষী রেইনট্রি, কড়ই, কৃঁষ্ণচূড়া, মেহগনি, শিরিষ গাছ।

এ শতবর্ষী বৃক্ষগুলোর মধ্য থেকে ৪৪টি গাছ কেটে সড়কটির সৌন্দর্য ও সংলগ্ন এলাকার প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করে এলিভেটর এক্সপ্রেসওয়ের র‌্যাম্প নির্মাণের এ উদ্যোগে চট্টগ্রামবাসী ক্ষুদ্ধ ও বিস্মিত। এরইমধ্যে গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে প্রধান বন সংরক্ষক এবং জমি ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে, চট্টগ্রামের মহাব্যবস্থাপক (পূর্ব)এর নিকট সিডিএ এর চেয়ারম্যান আবেদন করেছে মর্মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হয়েছে।

প্রাণ, প্রকৃতি ও পরিবেশের নিরাপত্তার বিধানে সংবিধানের ১৮ (ক) অনুচ্ছেদে অঙ্গীকার করেছে রাষ্ট্র। ফলে যে কোনো উন্নয়ন কার্যক্রমই পরিবেশ রক্ষা করে করতে হবে। কিন্তু তা না করে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে তা জনস্বার্থের অনুকূলে নয়।

র‌্যাম্প নির্মাণের নামে এ গাছগুলো কাটা হলে তা হবে বৃক্ষ ও প্রাকৃতিক ঐতিহ্য হত্যার সামিল। এ গাছগুলো বিভিন্ন সংখ্যক পাখির আবাস্থল যা পথচারীকে প্রকৃতির সান্নিধ্য পেতে সাহায্য করে। উপরন্তু নগর পরিকল্পনাবিদ ও বিশেষজ্ঞগণ র‌্যাম্প নির্মাণের জন্য উপযুক্ত বিকল্প জায়গার প্রস্তাবনা করেছেন।

সিডিএ এর আইনি দায়িত্ব হচ্ছে চট্টগ্রামের উন্নয়ন অর্থাৎ পরিবেশেরও উন্নয়ন করা। সিডিএ যদি পরিবেশের উন্নয়ন বাদ দিয়ে অবকাঠামোর উন্নয়নকেই তার একমাত্র আইনি দায়িত্ব মনে করে, তবে তা হবে টেকসই উন্নয়নের অন্তরায়। যে তথাকথিত উন্নয়নের জন্য এ গাছগুলো কাটা হচ্ছে সে উন্নয়ন অন্যত্র হলে চট্টগ্রামবাসীর কোন ক্ষতি হবে না কিন্তু এ গাছগুলো কাটা হয়ে গেলে চট্টগ্রামবাসীর যে ঐতিহ্য বিলুপ্ত হবে যা অপূরণীয় ক্ষতি।

পুরোনো ও ঐতিহাসিক বৃক্ষ রক্ষায় সরকার বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ এর ২৩ ধারায় সরকারি জমিতে থাকা সাংস্কৃতিক গুরুত্ব ধারণ করে, যা জাতীয় স্মারক হিসেবে চিহ্নিত এবং বিভিন্ন পাখির আবাসস্থল- এমন বৃক্ষকে জাতীয় ঐাতিহ্য বা স্মারক বৃক্ষ হিসেবে ঘোষণা করতে পারে।

এরূপ ঐতিহ্য বা স্মারক বৃক্ষের সংরক্ষণের প্রয়োজনে এর ১৪,১৫ ও ১৬ ধারায় বিভিন্ন বিধি নিষেধ আরোপিত আছে। সিডিএ প্রযোজ্য এই আইনের অধীনে মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী সড়কের প্রাচীন ঐতিহ্য ও স্মৃতিবাহী বৃক্ষগুলোকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার আবেদন না জানিয়ে কেটে ফেলার অনুমোদন চেয়েছে, যা জনস্বার্থের পরিপন্থী।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন :

সর্বশেষ সংবাদ

ukbanglaonline.com