
ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে তার অবস্থান নমনীয় করেছেন। কারণ তিনি কেন্দ্রে সরকার গঠনের বিষয়ে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সঙ্গে আলোচনা করতে রাজি হয়েছেন। বৃহস্পতিবার পার্টি সূত্র জিও নিউজকে এ তথ্য জানিয়েছে।
সূত্রের খবর, কারাবন্দি খান পিপিপির সঙ্গে কথা বলতে ‘প্রস্তুত’।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যকার সম্পর্ক এগিয়ে নেয়া হবে। সরকার গঠন নিয়ে পিটিআই ও পিপিপির মধ্যে আলোচনার জন্য কমিটি গঠন করা হবে।
গত ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জাতীয় পরিষদের সর্বোচ্চসংখ্যক আসনে জয়ী হয়েছেন। কিন্তু দলটির নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সরকার গঠন করতে পারছে না। ফলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসনে জয় পাওয়া পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) কেন্দ্রে জোট সরকার গঠনের লক্ষ্যে পিপিপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জোট গড়ার চেষ্টা করছে। যদিও এখন পর্যন্ত কোনও দলই সরকার গঠনের বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছায়নি।
নির্বাচনে ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জাতীয় পরিষদের ৯২টি আসনে জয় পেয়েছে। এ ছাড়া দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ৭৯টি ও বিলাওয়াল জারদারি ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ৫৩টি আসনে জয় পেয়েছে। দেশটিতে কোনও দলই সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় ব্যাপক রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।
জমিয়ত উলেমা-ই-ইসলাম-ফজল, আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি, জামায়াত-ই-ইসলামি এবং অন্যান্য জাতীয়তাবাদী দলগুলোর মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গেও জোট সরকার গঠনের বিষয়ে আলোচনার পরিকল্পনা করেছে পিটিআই। এসব রাজনৈতিক দল দেশটিতে নির্বাচনে কারচুপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে।
পিপিপির কো-চেয়ারম্যান আসিফ আলি জারদারি পিটিআইয়ের সঙ্গে আলোচনা করতে রাজি আছে বলে জানানোর দুদিন পর পিটিআইয়ের সূত্রগুলো প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের নতুন অবস্থানের বিষয়ে এই তথ্য জানিয়েছে।
এর আগে, গত মঙ্গলবার ছয় দলের একটি জোটের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আসিফ আলি জারদারি বলেন, আমরা পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফকেও পুনর্মিলন প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করতে চেয়েছিলাম। কারণ আমরা কেবল পিটিআইকে এই সমঝোতার প্রক্রিয়ার অংশ নয় বরং প্রত্যেকটি রাজনৈতিক শক্তিকেও পুনর্মিলন প্রক্রিয়ার অংশ করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, আমরা অর্থনৈতিক, প্রতিরক্ষা এজেন্ডা এবং অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে চাই। মিয়া সাহেব ও অন্যান্য বন্ধুদের সফল করতে চাই, যাতে পাকিস্তান ও এর জনগণ সফল হয়।
এদিকে, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পিটিআই মহাসচিব ওমর আইয়ুবকে প্রধানমন্ত্রী পদে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে। ওমর আইয়ুব দেশটির সাবেক সামরিক স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের নাতি। বৃহস্পতিবার রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতার সঙ্গে কথা বলার পর দলটির নেতা আসাদ কায়সার এই ঘোষণা দিয়েছেন। দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন, রয়টার্সের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানা গেছে।