
ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :তিন হাইভোল্টেজ প্রার্থীর প্রচারে জমে উঠেছে সুনামগঞ্জ-১ আসনের নির্বাচনী পরিবেশ। বিস্তীর্ণ এই এলাকার ভোটারদের কাছে নিজেদের বার্তা পৌঁছাতে প্রার্থীরাও সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছেন। ধারণা করা হচ্ছে আওয়ামী লীগ ও দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর ত্রিমুখী ভোটের লড়াই দেখা যাবে এই আসনে।
এই আসনে মাঠের প্রচারে পরস্পরকে টেক্কা দিচ্ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রনজিত সরকার (নৌকা), কেটলি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী, বর্তমান এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এবং ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সেলিম আহমদ।
জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, তাহিরপুর ও মধ্যনগর উপজেলা নিয়ে গঠিত সুনামগঞ্জ-১ আসনে ভোটের লড়াই জমেছে তিনজন প্রার্থীকে ঘিরে। তাদের সবাই একই রাজনৈতিক দলের নেতা।
স্থানীয় ভোটার ও বিভিন্ন পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই আসনের নির্বাচনী প্রচারে চলছে টাকার খেলা। কম-বেশি প্রত্যেক প্রার্থীই মাঠে আধিপত্য ধরে রাখতে এবং স্থানীয় দলীয় নেতাদের নিজেদের বলয়ে যুক্ত করতে টাকা খরচ করছেন। এ ছাড়া অনুসারী নেতাকর্মী ও সাধারণের মাঝেও নানা পন্থায় টাকা ছড়ানো হচ্ছে।
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক ধর্মপাশা আওয়ামী লীগের এক নেতার দাবি– নির্বাচনে অংশ নেওয়া শক্তিশালী দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী দলীয় নেতাদের নিজেদের পক্ষে টানতে টাকা বিলাচ্ছেন।
ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ বিলকিসের অভিযোগ কেটলি ও ঈগল প্রতীকের দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী টাকার বস্তা নিয়ে মাঠে ঘুরছে। তারা প্রকাশ্যে টাকা ছড়িয়ে ভোটের মাঠে আধিপত্য বিস্তার করতে চাচ্ছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শামীম আহমদ মুরাদ জানান, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংগঠন ও মাদ্রাসার নামে কিছু লোকের মাধ্যমে মাঠে টাকা ছড়াচ্ছেন প্রার্থীরা। মুরাদের দাবি দুর্গাপুর, মহেষপুর ও চাঁনপুর মসজিদে কেটলি ও ঈগল মার্কার দুই প্রার্থী ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা করে দিয়েছেন। বংশিকুণ্ডার তেলিগাঁও মসজিদেও টাকা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে জামালগঞ্জের সাচনা বাজারের ব্যবসায়ী মহসিন মিয়া জানান, উপজেলার বিছনা এলাকার আওয়ামী লীগ কর্মী শামছুল হক তাঁকে জানিয়েছেন, স্বতন্ত্র এক প্রার্থী তাঁকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে এলাকায় নির্বাচানী অফিস করতে বলেছেন। সেখানে প্রতিদিনের খরচও দেওয়া হবে। একই কথা জানিয়েছেন উপজেলার বেহেলী ইউনিয়নের হরিনাকান্দির শাহেনশাহ।
এদিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী রনজিত সরকারের শোডাউনেও প্রতিদিন টাকা উড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা। এর আগে এই এলাকায় নির্বাচনে এত টাকার উত্তাপ কখনো ছিল না।
স্বতন্ত্র প্রার্থী সেলিম আহমদ জানান, তিনি সব সময়ই মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির, অসুস্থ মানুষের চিকিৎসা এবং দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সহায়তা করেন। এর সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। একটি পক্ষ এসব ইস্যু বানিয়ে তাঁকে বিতর্কিত করতে চাচ্ছে।
এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন জানান, প্রচুর টাকা ছড়ানো হচ্ছে এ কথা সত্য। এর আগে এত টাকার ছড়াছড়ি দেখেননি। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের নজরদারি বাড়ানো দরকার।
এদিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী রনজিত সরকার জানান, তিনি পেশাগত রাজনীতিক। নির্বাচনের মাঠে ছড়ানোর মতো অত বাড়তি টাকা
তাঁর নেই। তাঁর নির্বাচনী প্রচার ও আনুষঙ্গিক কার্যক্রমে তাঁর পাশে থাকা স্থানীয় নেতারাই সাধ্যমতো খরচ করছেন।