ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :ভূমধ্যসাগরে দুটি পৃথক উদ্ধার অভিযানে বিপদসংকুল অবস্থায় থাকা ১১৯ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করেছে বেসামরিক উদ্ধারকারী জাহাজ সি-ওয়াচ ফাইভ।
সাগর থেকে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিরাপদে উদ্ধার করে জাহাজে তোলার পর তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ৩২ জন শিশুও রয়েছে। সবচেয়ে কনিষ্ঠ শিশুটির বয়স মাত্র তিন বছর।
বিজ্ঞাপনজাহাজটিকে দূরের বন্দর মেরিনা দ্য ক্যারারায় নোঙ্গরের নির্দেশ দিয়েছে ইতালি। ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় শুরু হয় প্রথম উদ্ধার অভিযান। ভূমধ্যসাগরে লিবিয়ার আন্তর্জাতিক জলসীমায় একটি রাবারের নৌকা থেকে ৫৫ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করা হয়।
অভিযানটি শেষ হতে না হতেই, সমুদ্রে বিপদগ্রস্ত একটি নৌকা সম্পর্কে কল আসে সি-ওয়াচ ফাইভের কাছে। ইতালির মেরিটাইম রেসকিউ কো-অর্ডিনেশন সেন্টারের (এমআরসিসি) নির্দেশনা অনুযায়ী ঘটনাস্থলের দিকে ছুটে যায় উদ্ধারকারী জাহাজ সি-ওয়াচ ফাইভ।
দ্বিতীয় অভিযানে ৬৪ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করা হয়। সবমিলিয়ে জাহাজটিতে ১১৯ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী রয়েছেন। তাদের অনেকেই ক্লান্তি, পানিশূন্যতা এবং নৌকার তেল আর সমুদ্রের পানি মিশে রাসায়নিক প্রদাহে ভুগছেন।
উদ্ধার অভিযান শেষে জাহাজটি ভেড়ার জন্য এক হাজার ১৫০ কিলোমিটার দূরের মারিনা দ্য ক্যারারা বন্দর বরাদ্দ করেছে ইতালি। এই মুহূর্তে ভূমধ্যসাগরের ওই অংশে একমাত্র উদ্ধারকারী জাহাজ হিসেবে কাজ করছে সি-ওয়াচ ফাইভ।
সি-ওয়াচের মুখপাত্র অলিভার কুলিকভস্কি বলেন, বর্তমানে এই এলাকায় আমরাই একমাত্র উদ্ধারকারী জাহাজ এবং এক হাজার ১৫০ কিলোমিটার দূরের একটি বন্দরে আমাদের পাঠানো হচ্ছে।
ইতালির সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন অভিবাসন চুক্তি ভূমধ্যসাগরে উদ্ধার চ্যালেঞ্জ এবং হাজার হাজার মৃত্যুর সমাধান নয়। এটি শুধু সীমান্তে দুর্ভোগ বাড়িয়ে তুলবে।
জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইওএমর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর এ পর্যন্ত ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে দুই হাজার ৬৭৮ জন মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন।
সি-ওয়াচ ফাইভের অপরাশেন প্রধান অ্যান ডেকার বলেন, এমন কোনো দিন নেই, যেদিন নিরাপত্তার খোঁজে অভিবাসনপ্রত্যাশীরা সমুদ্র পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেন না। এ বছর দুই হাজার ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ ডুবে মারা গেছেন। যারা ভূমধ্যসাগরে মৃত্যু থামাতে চায়, তাদের অবশ্যই নিরাপদ পথ তৈরি করতে হবে।