ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :চিকিৎসাশাস্ত্র অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় তিন বা তার বেশিবার পাতলা পায়খানা হলে সে অবস্থাকে ডায়রিয়া বলা হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় এ রোগটি প্রকোপ দেখা দেয়।
ডায়রিয়ার লক্ষণ
ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে রোগীর বারবার পাতলা পায়খানা হয়। পাতলা পায়খানার পাশাপাশি থাকে বমি কিংবা বমিভাব। মাথাব্যথা ও মাথা ঘোরা। এমনকি শারীরিক দুবর্লতায় কার্যক্ষমতাও হারাতে বসে রোগী।
ডায়রিয়ার কারণ
পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, হাত না ধুয়ে কোনো কিছু খেলে অথবা বাসি, পচা খাবার খাওয়ার অভ্যাস ডায়রিয়া রোগের কারণ। অনেকেই লাইনের পানি না পুটিয়ে পান করেন। এ মাধ্যমেও ডায়রিয়ার জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে।
ডায়রিয়া হলে করণীয়
শিশু থেকে বয়স্ক সবারই ডায়রিয়ায় আদর্শ খাবার ওরস্যালাইন। ডায়রিয়ায় তাই নিরাপদ স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি খেতে হবে ওরস্যালাইন।
ডায়রিয়ায় খাবার স্যালাইন তৈরি ও খাওয়ার নিয়ম
আধা লিটার বিশুদ্ধ পানিতে এক প্যাকেট খাবার স্যালাইন ভালোভাবে মিশিয়ে রোগীকে খাওয়াতে হবে। বয়স দুই বছরের নিচে হলে প্রতিবার পাতলা পায়খানার পর ১০ থেকে ২০ চা-চামচ, দুই বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে ২০ থেকে ৪০ চা-চামচ করে খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে। গোলানো স্যালাইন একবারে না খেয়ে অল্প করে সারা দিন বারবার খেতে হবে। প্যাকেটের ওরস্যালাইন ১২ (বারো) ঘণ্টা পর্যন্ত খাওয়ানো যায়।
প্যাকেটের ওরস্যালাইন হাতের কাছে না পেলে আধা লিটার পানি, এক মুঠো গুড় ও এক চিমটি লবণ দিয়ে ঘরে খাবার স্যালাইন বানানো যায়। বাড়িতে তেরি ওরস্যালাইন ৬ (ছয়) ঘণ্টা পর্যন্ত খাওয়ানো যায়। এরপর প্রয়োজন হলে আবার নতুন করে খাবার স্যালাইন বানাতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি বিভিন্ন তরল খাবার যেমন: ভাতের মাড়, স্যুপ, ডাবের পানি, চিড়ার পানি, লবণ-গুড়ের শরবত, বিশুদ্ধ খাবার পানি খাওয়াতে হবে রোগীকে। পাশাপাশি চালিয়ে যেতে হবে স্বাভাবিক সব খাবার। শিশুর ক্ষেত্রে মায়ের বুকের দুধ খাবার হিসেবে বন্ধ করা যাবে না।
ডায়রিয়া প্রতিরোধে করণীয়
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডায়রিয়া প্রতিরোধের জন্য সর্বপ্রথম যে বিষয়টির ওপর জোর দিতে হবে তা হলো সুরক্ষিত খাবার খাওয়ার আগে সব সময় হাত ধোয়ার অভ্যাস মেনে চলা।
পাশাপাশি ডায়রিয়া থেকে সুরক্ষিত থাকতে নিরাপদ পানির জন্য তা ফুটিয়ে পান করার ওপরও জোর দিচ্ছেন তারা।
ডায়রিয়া থেকে দূরে থাকতে সবচেয়ে বেশি নিরাপদ পদক্ষেপ হলো বাইরের খোলা খাবার এবং শরবত খাওয়া থেকে সব সময় বিরত থাকা।