ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার সীমান্ত অতিক্রম করে লোকালয়ে ঢুকে জমির ধান নষ্ট করেছে বন্য হাতির দল। এ সময় সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে পার্শ্ববর্তী এলাকায় গিয়ে আশ্রয় নেয়।
গত শনিবার রাত ৯টা থেকে শুক্রবার ভোররাত পর্যন্ত হাতিগুলো উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের বড়গুপটিলা এলাকার দুরানী গুপের ধানের জমিতে হানা দেয়। এতে কৃষকের প্রায় ৭ কিয়ার (৩০ শতকে এক কিয়ার) জমির ধান সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়।
বড়গুপ গ্রামের কৃষক জয়দর আলী জানান, ভারতের পাহাড়ি বন এলাকা থেকে নেমে আসা বন্য হাতির পাল তাঁর ৫ কিয়ার জমির ধান একেবারে শেষ করে দিয়েছে। মহাজনি সুদে ৩০ হাজার টাকা ধার এনে তিনি তাঁর জমিগুলোকে ধান রোপণ করেছিলেন। হাতির পাল সব নষ্ট করে দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, কয়েক দিন ধরে হাতির পালটি রাতে নেমে আসে। ভোরে চলে যায়। শনিবার রাতে সেগুলো স্থানীয় কৃষকদের ফসলি জমিতে হানা দেয়।
একই গ্রামের আনোয়ার হোসেন জানান, ভারত থেকে আসা বন্য হাতির পালটি তাঁর ও প্রতিবেশী আক্তার হোসেনের দুই কিয়ার জমির ধান নষ্ট করে দিয়েছে। গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
কড়ইগড়া গ্রামের শঙ্কর মারাক জানান, মাসখানেক ধরেই হাতিরপাল ভারত থেকে বড়গুপ এলাকাতে আসা-যাওয়া করছে। হাতি দেখে এলাকার লোকজন আতঙ্কে থাকে। অনেকেই প্রাণের ভয়ে টিন বাজায় ও শিঙায় ফুঁ দেয়। রাতে জঙ্গলের ভেতরে বাজারের সাধারণ টর্চলাইটে হাতিকে দেখা যায় না। এ অবস্থায় তিনি ঢাকা থেকে তিন হাজার টাকায় একটি সার্চলাইট কিনে এনেছেন, যাতে হাতির নজরদারি করতে পারেন।
তাহিরপুর উপজেলার দলইরগাঁও বন বিট কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম জানান, বন্য হাতি লোকালয়ে হানা দিলে সাধারণত স্থানীয়দের ডেকে এনে সচেতন করা হয়। হাতিকে আঘাত করার কোনো সুযোগ নেই। বর্তমানে তিনি ঢাকা আছেন। এলাকায় ফিরেই এ নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে বসবেন।
তাহিরপুরের ইউএনও সুপ্রভাত চাকমা জানান, ভারত থেকে আসা বন্য হাতিগুলো বড়গুপ এলাকার কৃষকদের ধানের জমি ক্ষতি করছে। বিষয়টি সম্পর্কে তিনি জেনেছেন। এ ব্যাপারে তিনি সীমান্তের বিজিবি ও উত্তর বড়দল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।