ইউকে রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫
হেডলাইন

যেসব কাজ আল্লাহর ওপর ভরসার পরিপন্থী

Untitled 12 copy 2 - BD Sylhet News

ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক : তাওয়াক্কুলের মূল কথা হলো আল্লাহর ওপর পরিপূর্ণ ভরসা করা, সেই সঙ্গে পার্থিব উপায়-উপকরণ গ্রহণ করা। যে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘আর যে আল্লাহকে ভয় করে তিনি তার জন্য বেরোনোর পথ বের করে দেন এবং তাকে এমন স্থান থেকে জীবিকা দেন, যা সে ভাবতেও পারে না। আর যে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে তিনি তার জন্য যথেষ্ট হন।

নিশ্চয়ই আল্লাহ তার কাজ চূড়ান্তকারী। অবশ্যই আল্লাহ প্রত্যেক কাজের জন্য একটা পরিমাপ ঠিক করে রেখেছেন।’ (সুরা : তালাক, আয়াত : ২-৩)
মহান আল্লাহ প্রত্যেক কাজের সমজাতীয় প্রতিফল নির্ধারণ করে রেখেছেন। তিনি তাওয়াক্কুলের প্রতিদান নির্ধারণ করেছেন প্রাচুর্যতা।

সুতরাং যে ব্যক্তি আল্লাহকে যথেষ্ট জানবে, আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট হবেন। আর আল্লাহ যার তত্ত্বাবধান করবেন, তার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। কিছু কাজ আছে, যেগুলো তাওয়াক্কুলের পরিপন্থী। নিম্নে সেসব কাজ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :

কোনো কিছু কুলক্ষণ মনে করা : অশুভ বাসনা আল্লাহর ওপর ভরসার পরিপন্থী। কেননা আল্লাহর ওপর ভরসাকারী কোনো অন্তরকে কখনো বাঁ দিক দিয়ে পাখি উড়ে যাওয়া, প্যাঁচা দেখে অশুভ লক্ষণ মনে করা ইত্যাকার কোনো বাতিল কথা তার গন্তব্য থেকে ফিরিয়ে দিতে পারে না। নবী করিম (সা.) কুলক্ষণ ও অশুভ মনে করা সম্পর্কে সবাইকে হুঁশিয়ার করেছেন। তিনি বলেছেন, কুলক্ষণ ও অশুভ বলে কিছু নেই। (বুখারি, হাদিস : ৫৭৫৪)

জ্যোতিষী ও গণকের কাছে যাওয়া : জ্যোতিষী, গণক ও হারানো বস্তুর সন্ধানদাতাদের কাছে যাওয়া তাওয়াক্কুল পরিপন্থী কাজ। মুহাম্মাদ ইবনে মুসান্না আনাজি (রহ.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.)-এর কিছু স্ত্রীর সূত্রে নবী (সা.) থেকে বর্ণিত, যে ব্যক্তি গণকের কাছে গেল এবং তাকে কোনো ব্যাপারে প্রশ্ন করল- ৪০ রাত তার কোনো নামাজ গ্রহণযোগ্য হবে না। (মুসলিম, হাদিস : ৫৭১৪)

গাছ, পাথর থেকে বরকত কামনা করা : গাছ, পাথর ও বস্তু থেকে বরকত লাভের আশায় ভক্তি বা এগুলো সংগ্রহ করে রাখা তাওয়াক্কুলবিরোধী কাজ। কখনো কখনো এ ধরনের কাজ শিরকের দিকে ধাবিত করে।

উপায়-অবলম্বন গ্রহণ না করা : উপায়-অবলম্বন গ্রহণ করা তাওয়াক্কুলের অন্যতম শর্ত। অবলম্বন গ্রহণ না করা তাওয়াক্কুল পরিপন্থী। কোনো কাজ সম্পন্ন করতে যে উপায়-উপকরণ অবলম্বনের কথা অস্বীকার করে এবং নিশ্চেষ্ট বসে থাকে, সে গণ্ডমূর্খ ও পাগল। আবার যে আল্লাহর কুদরতের ওপর ভরসা না করে শুধুই উপায়-উপকরণ নিয়ে পড়ে থাকে তার আচরণ শিরকি। আনাস বিন মালেক (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! আমি কি তাকে (আমার উষ্ট্রী) বেঁধে রেখে (আল্লাহর ওপর) ভরসা করব, না কি তাকে বন্ধনমুক্ত করে দিয়ে ভরসা করব? তিনি বলেন, আগে বেঁধে রাখো, তারপর ভরসা করো। (তিরমিজি, হাদিস : ২৫১৭)

তাই বেকার বসে না থেকে কামাই-রোজকার করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কোনো ব্যক্তি নিজ হাতের কামাইয়ের মাধ্যমে যা খায় তার থেকে উত্তম কোনো খাদ্য সে কখনো খায়নি। আল্লাহর নবী দাউদ নিজ হাতের কামাই থেকে জীবিকা নির্বাহ করতেন। (বুখারি, হাদিস : ২০৭২)

চিকিৎসার চেষ্টা না করা : রোগশোক দেখা দিলে চিকিৎসার চেষ্টা না করা তাওয়াক্কুল পরিপন্থী কাজ। নবী করিম (সা.) তো বলেছেন, আল্লাহ তাআলা এমন কোনো রোগ দেননি, যার প্রতিষেধক বা চিকিৎসা তিনি দেননি। (বুখারি, হাদিস : ৫৬৭৮)

একইভাবে তিনি রোগের চিকিৎসা করাতেও আদেশ দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, হে আল্লাহর বান্দারা, তোমরা চিকিৎসা করাও। (তিরমিজি, হাদিস : ২০৩৮)

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন :

সর্বশেষ সংবাদ