
ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :জাতীয় সংসদের মোট ১১টি নির্বাচনের মধ্যে ৭টি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল দলীয় সরকারের অধীনে এবং তাতে ক্ষমতাসীনরা কেউই পরাজিত হয়নি। প্রশাসনিক আনুকূল্য, অর্থ ও পেশী শক্তির ব্যবহার, কারচুপি ও জাল ভোটসহ নানা অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে তারা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকে। এরমধ্যে ২০১৪ সালের ভোটারবিহীন নির্বাচন ও ২০১৮ সালের রাতের ভোটের নির্বাচন দেশের নির্বাচনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ অনিয়মের কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও ক্ষমতাসীনরা একই পথে ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়। তাই একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন আজ জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়েছে। মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে একটি জবাবদিহিবিহীন পরিবেশ তৈরি করে দেশে আজ ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন কায়েম করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ স্বকীয় বৈশিষ্ট্য হারিয়ে সরকারের হুকুমের দাসে পরিণত হয়েছে। নজিরবিহীন দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থপাচার অর্থনীতির স্বাভাবিক বিকাশকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতি জনগণের ঘাড়ে ঋণের বোঝা বাড়িয়েই চলেছে। সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় একটি গোষ্ঠী সিন্ডিকেট করে দুর্নীতি, লুটপাট আর নিত্যপণ্েযর দাম বাড়িয়ে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ছে আর অন্যদিকে দেশের উন্নয়নের মূল কারিগর কৃষক, শ্রমিক আর সাধারণ মানুষের প্রকৃত আয় দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। সরকারের দুঃশাসন ও ধনিক গোষ্ঠীর লুটপাট আর অর্থ পাচারের কারণে আজ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিম্নগামী, খেলাপী ঋণের পরিমাণ ১ লক্ষ ৫৬ হাজার কোটি টাকা, নিত্যপণ্যের অগ্নিমূল্য, সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি, প্রায় ৪ কোটি মানুষ প্রয়োজনীয় খাবার খেতে পান না, কর্মসংস্থানের অভাব, বিদ্যুতের লোডশেডিং, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাটকল, চিনিকল, বস্ত্রকল সংস্কার না করে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এসবের বিরুদ্ধে জনগণের ঐক্যবদ্ধ সচেতন আন্দোলন গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি। বতর্মান দুঃসহ অবস্থা উত্তরণে সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন, বর্তমান আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন বাতিল করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন, সিন্ডিকেট দমন করে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, রেশন ব্যবস্থা ও ন্যায্যমূল্েযর দোকান চালু, উৎপাদক-ক্রেতা সমবায় গঠন, ন্যায্যমূল্েয কৃষি উপকরণ ও যন্ত্রপাতি প্রদান, শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ সহ অন্যান্য দাবিতে এবং সর্বোপরি ঘুণে ধরা সমাজ ব্যবস্থা বদল করে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইকে এগিয়ে নিতে আগামী ১৪ অক্টোবর শনিবার বিকাল ৪টায় সিলেট কোর্টপয়েন্টে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), সিলেট জেলা কমিটি এক জনসভার আয়োজন করেছে।
উক্ত জনসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স। উক্ত জনসভায় সর্বস্তরের জনগণকে উপস্থিত থাকার জন্য জেলা কমিটির সভাপতি সৈয়দ ফরহাদ হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক খায়রুল হাছান এক যুক্ত বিবৃতিতে সকলের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।