ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে কালনী নদীর ভাঙন দেখা দেওয়ায় ঝুঁকির মুখে পড়েছে তিন শতাধিক পরিবার। এরই মধ্যে ভাঙন পৌঁছেছে কারও আঙিনায়, কারও বা দোরগোড়ায়। প্রতিদিন ভাঙনের ফলে অনেকের দরজার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে নদীটি।
এরই মধ্যে সেখানকার কয়েকটি পরিবার সব হারিয়ে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। কেউ কেউ জায়গা করে নিয়েছে খাস জমিতে।
আজমিরীগঞ্জ গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বদলপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের নদী তীরবর্তী এলাকায় প্রতিদিন ভাঙছে পাড়। এতে পিরোজপুর, মাহমুদপুর, নদীপুর, পাহাড়পুরের কয়েকশ পরিবার ভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে। বাদ পড়েনি রাস্তা, বাঁধ, মসজিদ, শ্মশান, স্কুলসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ভাঙন অব্যাহত থাকায় আতঙ্কে আছে পিরোজপুরের ওই তিন শতাধিক পরিবার।
স্থানীয়রা জানান, ২০ বছর আগে পিরোজপুর গ্রামটি নদীভাঙনের কবলে পড়ে। শুরুতে মুসলিম উদ্দিন নামে এক ব্যক্তির বসতভিটা নদীতে চলে যায়। এ ছাড়া কালনী ভাঙনের কারণে নদীপাড়ের বাসিন্দা হারুন মিয়ার ১১২ শতাংশ জমির ওপর করা বাড়িটি নদীতে বিলীন হয়। শুধু বসতভিটাই নয়, নদীতে বিলীন হয় তাঁর প্রায় দেড় একর কৃষিজমি। বছর তিনেক আগে আবারও ভাঙনের কবলে পড়ে এই গ্রামটিসহ আশপাশের আরও কয়েকটি গ্রাম। একে একে ওই গ্রামের ধলাই মিয়া, ইয়াকুব মিয়া, মতি মিয়া, জাহাঙ্গীর মিয়া, মনসুর, উস্তারা, সাবুল মিয়া, শাজাহান মিয়া, আজমান মিয়া, আবদুল হামিদ, রহমত আলী, জাকির হোসেন, লাক মিয়াসহ দুই শতাধিক পরিবারের বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে পড়েছে। গত ৬ মাসে স্থানীয় ১৫ জনের বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়েছে।
পিরোজপুর গ্রামের ধলাই মিয়া জানান, ভাঙনে পিরোজপুর গ্রামটি সম্পূর্ণ বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে গ্রামবাসী বিভিন্ন জনের কাছে ধরনা দিলেও কোনো প্রতিকার পাননি। অনেকের বসতবাড়ি, মসজিদসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখনও ঝুঁকির মধ্যেই বসবাস করছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ জানান, ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে একটি প্রস্তাবনাও তৈরি করা হয়েছে। অনুমোদন হলেই কাজ শুরু হবে।