ইউকে মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫
হেডলাইন

ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বন্যায় বিপর্যস্ত পাঁচ জেলা

ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বন্যায় বিপর্যস্ত পাঁচ জেলা

ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :তিন পার্বত্য জেলা বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে অধিকাংশ স্থাপনা বানানো হয় টিলা কিংবা পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে। ছোটখাটো বন্যা কিংবা পাহাড়ি ঢল এসব স্থাপনাকে স্পর্শই করতে পারে না। কিন্তু এবারের বন্যার রূপটা ভয়াবহ, স্থানীয়দের কাছে নজিরবিহীনও। টানা বৃষ্টি ও ঢলের মিশেলে পানির উচ্চতা এতটাই বেড়েছে যে, ঘরবাড়ি ও অফিস-আদালতসহ তিন পার্বত্য জেলার অনেক স্থাপনাই তলিয়ে গেছে। এই তিন পার্বত্য জেলা ছাড়াও চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায়ও ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যয় নেমে এসেছে জনজীবনে।
বান্দরবানের অবস্থা সবচেয়ে নাজুক। সেখানকার প্রায় সব উপজেলাই পানিবন্দি। এর মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সদর উপজেলা। নতুন করে অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে খাগড়াছড়িতে। রাঙামাটির পরিস্থিতিও একই, সেখানকার দুই উপজেলা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সাজেকে আটকা পড়েছেন প্রায় দেড়শ পর্যটক।
বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে চট্টগ্রামের অনেক উপজেলায়ও। বিশেষ করে পাহাড়ি ঢল ও সাঙ্গু নদীর পানি উপচে বান্দববানের পাশর্^বর্তী দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, লোহাগাড়া ও চন্দনাইশ উপজেলার বসতবাড়ি পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ। পাহাড়ি ঢল ও জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে কক্সবাজারের আরও অনেক এলাকা, পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মানুষ। বন্ধ হয়ে গেছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক যোগাযোগ। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে বান্দরবান ও চট্টগ্রামে। বন্যার পানির কারণে প্রায় আট ঘণ্টা বন্ধ ছিল নোয়াখালীর সঙ্গে রেল যোগাযোগ। এ ছাড়া ফেনীর পরশুরাম উপজেলায় মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
বন্যায় ভুগছে দক্ষিণের জনপদও। ভারী বৃষ্টিতে থইথই
করছে বরিশাল নগরীর বেশির ভাগ এলাকা। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ভেসে গেছে মাছের অনেক ঘের। বন্ধ হয়ে গেছে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আমাদের সময়ের আঞ্চলিক ব্যুরো, নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিতÑ
বান্দরবান : টানা ভারী বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে বান্দরবান শহরের প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বিদ্যুৎ নেই তিন দিন ধরে। খাবার ও খাবার পানির সংকটে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এ পার্বত্য জেলার বাসিন্দারা। স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, সদর, লামা, রুমা, থানচি, আলীকদম ও রোয়াংছড়ি উপজেলার বেশির ভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। এর প্রভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে মোবাইল নেটওয়ার্কও।
বান্দরবান সদরের ক্যাচিং ঘাটা এলাকার বাসিন্দা ওসমান আলী বলেন, ‘আমার ঘরের দ্বিতীয় তলা পানিতে ডুবে গেছে। ঘর থেকে কিছুই বের করতে পারিনি। বাধ্য হয়ে সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছি।’ রাজগুরু বিহার এলাকার বাসিন্দা অংসাই ম্যা মারমা বলেন, ‘এবারের মতো এমন পানি কিংবা জলাবদ্ধতা আগে কখনো দেখিনি।’
আলীকদম উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম জানান, মাতামুহুরী নদীর পানিতে সড়ক প্লাবিত হয়ে আলীকদমে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
সদর উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর বলেন, বান্দরবান শহরের অর্ধেক অংশ পানিতে তলিয়ে গেছে। বান্দরবানের আশপাশের এলাকা যেমনÑ ক্যামলং, মাঘমারা, বালাঘাটা, ক্যচিংঘাটা, তংপ্রু পাড়া, ধোপাছড়াসহ অনেক এলাকার মানুষ দুর্ভোগে আছেন।
সদর উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশাসন থেকে ১৯২টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তবে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ থাকায় আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে কতজন আশ্রয় নিয়েছেন, তা জানা যায়নি।
বান্দরবান আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হক গণমাধ্যমকে জানান, গত সাত দিনে জেলায় ৯০৩ মিলিলিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
এদিকে টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে নাইক্ষ্যংছড়ির রবিশস্য। দৌছড়ি ইউনিয়নে পানির স্রোতে ভেসে গেছেন মেমপই ম্রো (৩০) নামের এক ব্যক্তি। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমেন শর্মা বলেন, প্রাণহানির শঙ্কায় পাহাড়ের ঢালুতে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।
খাগড়াছড়ি : চেঙ্গী নদী ও দীঘিনালা উপজেলার মাঈনী নদীর পানি বাড়ায় আরও অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিতে ডুবে গেছে দীঘিনালার মেরুং-লংগদু সড়ক। পানির নিচে মেরুং ইউনিয়নের একমাত্র বাজারও। জেলা সদর ও দীঘিনালা উপজেলার ছয় শতাধিক বাড়ি প্লাবিত হয়েছে।
চেঙ্গী নদীর পানি বাড়ায় গঞ্জপাড়া, ফুটবিল, গোলাবাড়ি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জেলার শালবাগান, কুমিল্লা টিলা, সবুজবাগ, ইসলামপুসহ বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। খাগড়াছড়ি-সাজেক সড়কের কবাখালী বাজার এলাকা ডুবে গেছে। এতে দীঘিনালার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
রাঙামাটি : বন্যার কারণে লংগদু ও বাঘাইছড়ি উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। সাজেকে আটকা পড়েছেন প্রায় দেড়শ পর্যটক। সাজেক কটেজ মালিক সমিতির সহসভাপতি চাইথোয়াই অং চৌধুরী (জয়) জানান, সাজেক-খাগড়াছড়ি সড়কের বিভিন্ন জায়গায় বন্যার পানি ওঠায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ফলে পর্যটকবাহী কোনো যানবাহন গতকাল চলাচল করেনি।
চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম শহরে জলাবদ্ধতা কিছুটা কমলেও বিভিন্ন উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এর মধ্যে জেলার দক্ষিণের চার উপজেলার পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটছে। এ অবস্থায় বান্দরবানের পাশাপাশি সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলায় বন্যাদুর্গতদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। লোহাগাড়ায় বন্যার পানিতে ডুবে এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র মারা গেছেন। তার নাম জুনায়েদুল ইসলাম জারিফ (২২)। তিনি বেসরকারি বিজিটি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সের প্রথম বর্ষের ছাত্র।
জেলার সাতটি উপজেলায় বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছেন দেড় লাখের বেশি গ্রাহক। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চন্দনাইশ ও সাতকানিয়া অংশ দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হওয়ায় যানবাহন চলাচলে বিঘœ ঘটছে। সড়কের পাশে গাড়ি উল্টে থাকতে দেখা যায়। বান্দরবান থেকে চট্টগ্রামের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান আমাদের সময়কে বলেন, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলায় বন্যার পানিতে আটকে থাকা লোকজনকে উদ্ধারের জন্য সেনা সদস্য নামানো হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় ১২০ জন করে সেনা সদস্য কাজ করবেন।
পাহাড়ে ভারী বর্ষণের কারণে শঙ্খ ও ডলু নদীর পানির উচ্চতা আরও বেড়েছে। এতে চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া উপজেলার পুরোটা এবং পটিয়া ও বাঁশখালী উপজেলার কিছু অংশে বন্যা দেখা দিয়েছে।
চন্দনাইশ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিমরান মোহাম্মদ সায়েক বলেন, মহাসড়কে হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি উঠে গেছে।
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন বিশ্বাস বলেন, কেরাণীহাট থেকে কক্সবাজারমুখী কয়েক কিলোমিটার এবং বান্দরবান অভিমুখী বাজালিয়ার প্রায় পুরো অংশ পানিতে ডুবে আছে। যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে।
কক্সবাজার : কক্সবাজারে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। পাহাড়ি ঢল ও জোয়ারের পানিতে নতুন করে আরও বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। গতকাল দুপুর পর্যন্ত জেলার সাত উপজেলার কমপক্ষে ৪৫ ইউনিয়নের সাড়ে ৪ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানির কারণে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
আবহাওয়া অফিসের কক্সবাজার আঞ্চলিক কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা (পর্যবেক্ষণ) দুলালচন্দ্র দাশ জানান, সোমবার সকাল ৬টা থেকে গতকাল সকাল ৬টা পর্যন্ত ১৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আর গতকাল সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ১৭ মিলিমিটার। আরও তিন দিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। এতে পাহাড়ধসের আশঙ্কা রয়েছে।
কক্সবাজারে সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে চকরিয়া ও পেকুয়া। এ দুই উপজেলার অন্তত আড়াই লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, অধিকাংশ ওয়ার্ড পানিতে তলিয়ে গেছে। সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম ও কাকারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাবউদ্দিন জানান, তাদের ইউনিয়নগুলো মাতামুহুরী নদীর সঙ্গে লাগোয়া। এ জন্য পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের পানি এসব ইউনিয়নে আগে আঘাত হানে।
পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূর্বিতা চাকমা বলেন, ‘পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অসংখ্য মানুষ। তাদের জন্য শুকনো খাবার নিশ্চিত করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’ চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেন, ‘প্রশাসনের হিসাবে প্রায় দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন।’ বাঁকখালী নদীর পানি বাড়ায় রামু উপজেলার চার ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এগুলো হলোÑ মিঠাছড়ি, খুনিয়াপালং, রশিদনগর ও জোয়ারিয়ানালা।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, কুতুবদিয়ায় ৭০০ পরিবার, পেকুয়ার ১০ হাজার, মহেশখালীতে ৫০০, চকরিয়ায় ৫০ হাজার, কক্সবাজার সদরে ১ হাজার ও ঈদগাঁও উপজেলায় ১৫০ পরিবার পানিবন্দি রয়েছে।
ফেনী : সোমবার রাতে পরশুরাম উপজেলার অলকা এলাকায় মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এগুলো হলোÑ পূর্ব অলক, পশ্চিম অলকা, চিথলিয়া ও ধনীকু-া।
গতকাল সকাল ৯টা থেকে মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বিকালে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল বিপদসীমার ৪৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে। এর প্রভাবে ফুলগাজীর কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়। এর মধ্যে রয়েছেÑ সদর ইউনিয়নের উত্তর দৌলতপুর, দক্ষিণ দৌলতপুর, উত্তর বরইয়া, দক্ষিণ বরইয়া, জগতপুর, বিজয়পুর, বণিকপাড়া, বসন্তপুর ও গনিয়ামোড়া।
ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা জানান, দুই উপজেলায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি।
নোয়াখালী : গতকাল ভোর ৬টার দিকে বৃষ্টির কারণে রেললাইনের ওপর গাছ পড়ায় নোয়াখালীর সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। দুপুর পৌনে ২টার দিকে রেল চলাচল স্বাভাবিক হয়।
লক্ষ্মীপুর : টানা বৃষ্টি ও মেঘনার পানিতে প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া কমলনগর ও রামগতি উপজেলার অন্তত ২৫টি সড়ক ভেঙে গেছে।
বরিশাল : বঙ্গোপসাগরে সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে গত শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত টানা তিন দিন বৃষ্টি হয় বরিশালে। বিশেষ করে রবিবার রাত থেকে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে অতিভারী বর্ষণে বিপর্যয় নেমে আসে জনজীবনে। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে নগরীর বেশিরভাগ সড়ক। নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সড়কে জমে থাকা পানি নামতে পারছে না। ফলে ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে বরিশাল নগরীর অধিকাংশ এলাকার বাসিন্দা।
বরিশাল আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক মাসুদ রানা রুবেল বলেন, উত্তর বঙ্গোপসাগরে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় আছে। এ কারণে গভীর সাগরে মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে।
কলাপাড়া : টানা বৃষ্টি ও দমকা ঝড়ো হাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন এলাকার মাছের ঘের ও পুকুর ভেসে গেছে। বন্ধ হয়ে গেছে অনেক এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। এ কারণে আমন চাষিরা রয়েছেন শঙ্কায়।
নীলগঞ্জ ইউনিয়নের গইয়াতলা বেড়িবাঁধের রিভার সাইডের প্রায় ৩০০ ফুট বাঁধ ভেঙে সোনাতলা নদীতে বিলীন হয়েছে। বাঁধের বিভিন্ন পয়েন্টে দেখা দিয়েছে ফাটল। এ কারণে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন বেড়িবাঁধ ঘেঁষা ছয় গ্রামের মানুষ। স্থানীয়দের অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের কাজের গাফিলতিতে আজ এ ভয়াবহ অবস্থা।
বগুড়া : গতকাল বগুড়ায় রাজশাহী বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান জানান, সোমবার সকাল ৬টা থেকে গতকাল সকাল ৬টা পর্যন্ত ২১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।
এদিকে বৃষ্টির পানি ঘরে ঢুকে বগুড়া শহরের খান্দার এলাকায় খসরু (৩৪) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রহিম জানান, খসরু প্যারালাইসিস রোগী। বাসায় কেউ না থাকায় বৃষ্টির পানি বাড়তে থাকলে তিনি বিছানা থেকে উঠতে পারেননি।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন :

সর্বশেষ সংবাদ