ইউকে সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫
হেডলাইন

গোয়াইনঘাটে লোকালয় থেকে লজ্জাবতী বানর উদ্ধার

গোয়াইনঘাটে লোকালয় থেকে লজ্জাবতী বানর উদ্ধার
ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :সিলেটের গোয়াইনঘাটে লোকালয় থেকে একটি বিলুপ্ত প্রায় লজ্জাবতী বানর উদ্ধার করা হয়েছে।

সোমবার দুপুরে উপজেলার শান্তিনগর এলাকার একটি বসত বাড়ি থেকে জাফলং বন বিটের লোকজন লজ্জাবতী বানরটিকে উদ্ধার করেন। উদ্ধার অভিযানে জাফলং বনবিট কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে বনবিভাগের একটি টিম উপস্থিত ছিলেন। বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকালে তাঁরা জানতে পারেন, গত দু’দিন ধরে জাফলংয়ের শান্তিনগর এলাকায় আবু হানিফ মিয়ার বাড়িতে একটি লজ্জাবতী বানর আটকে রাখা হয়েছে। খবর পেয়ে তাঁরা আবু হানিফ মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁকে বুঝিয়ে বানরটি ছেড়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ জানান। একই সঙ্গে তাকে জানানো হয় প্রচলিত বন্য প্রাণী আইনে যেকোনো বন্য প্রাণী লালন, পালন, ধরা এবং হত্যা করা দন্ডনীয় অপরাধ। পরে সারী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. সালাহ উদ্দিনকে অবগত করে জাফলং বনবিটের লোকজন গিয়ে তার বাড়ি থেকে লজ্জাবতী বানরটি উদ্ধার করেন। বন্য প্রাণী গবেষকদের সূত্রে জানা গেছে, লজ্জাবতী বানর লাজুক বানর নামেও পরিচিত। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) লজ্জাবতী বানরকে বিপন্ন প্রায় প্রাণী হিসেবে লাল তালিকাভুক্ত করেছে। এটি দেশের ক্ষুদ্রতম বানর জাতীয় প্রাণী।

লজ্জাবতী বানর মূলত বাংলাদেশে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের চিরসবুজ বনের বাসিন্দা। এগুলো নিশাচর ও বনের গভীরে উঁচু গাছে থাকতে পছন্দ করে। দিনে গাছের খোঁড়লে বা ঘন পাতার আড়ালে ঘুমিয়ে কাটায়। বিরল, নিশাচর ও লাজুক হওয়ায় দিনে সহজে চোখে পড়ে না। এগুলো গাছে গাছেই থাকে এবং সহজে মাটিতে নামে না। অত্যন্ত ধীরগতিতে চলাফেরা করে। এগুলো সাধারণত ফল, পাতা, উদ্ভিদের কষ বা নির্যাস ইত্যাদি খায়। মাঝেমধ্যে বড় কীটপতঙ্গ, পাখির ডিম-ছানা, সরীসৃপও খেয়ে থাকে। আবু হানিফ মিয়ার ছেলে শেখ ফরিদ মিয়া জানান, গত দু’নি আগে আমি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ বানরের মতো কি যেন একটা চোখে পড়ে। প্রথমে একটু ভয় পেয়েছিলাম। ঠিক বানরের মতো দেখতে। পরে অনেক কষ্ট করে আরেক জনের সহযোগিতায় এটিকে ধরে বাসায় নিয়ে আসি। এটি ধরতে গেলেই আমার হাতে কামড় মারে। প্রথমে এটি চিনতে পারিনি।

পরে স্থানীয়রা বলছেন এটি লজ্জাবতী বানর। এরপর তাকে খাবার হিসেবে কলা দিয়েছিলাম। বানরটিকে পেয়ে আমার পরিবার লালন পালন করে আসছিলাম। আজ বন বিভাগ কতৃপক্ষ আমাদের বুঝিয়ে বললে বানরটি আমরা তাদের হাতে তুলে দেই। এ ব্যাপারে জাফলং বনভিট কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান বলেন, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পাশেই লজ্জাবতী একটি বানর আটকা পড়েছে খবর পেয়ে সাথে সাথে এটি উদ্ধার করে তা অবমুক্ত করা হয়েছে।

বানরটি প্রথমে দিতে না চাইলেও বুঝিয়ে বলার পর আবু হানিফ মিয়া সেটি বন বিভাগকে হস্তান্তর করেন। পরে বানরটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বানরটিকে খাবার দিয়ে সারী রেঞ্জ’র জাফলং সংরক্ষিত বনাঞ্চলে স্থানীয় সাংবাদিক ও এলাকার ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে বানরটি অবমুক্ত করা হয়েছে। বানরটি সুস্থ রয়েছে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন :

সর্বশেষ সংবাদ