ইউকে শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
হেডলাইন

স্বামীর আত্মহত্যার মামলায় দ্বিতীয় স্ত্রী গ্রেফতার, অতপর…

340841229 3153973208241659 4293006636444864838 n - BD Sylhet News

ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে স্বামীর আত্মহত্যা প্ররোচনায় প্রথম স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় দ্বিতীয় স্ত্রী আমিনা খাতুন (৪০) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৪ মে) দুপুরে আমিনাকে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত আমিনার জামিন নামঞ্জুর বিকেলে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে বুধবার রাতে আত্মহত্যার প্ররোচনার ঘটনায় প্রথম স্ত্রী লাইজু আক্তার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের পর বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার গোগাউড়া নিজ বাড়ি থেকে আমিনাকে গ্রেফতার করা হয়।

আমিনা খাতুন উপজেলার উত্তর গোগাউড়া গ্রামের আ:ছালামের কন্যা। গত ৩ মে সকালে চুনারুঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর গোগাউড়া দ্বিতীয় স্ত্রীর বাড়ি থেকে ইউসুফ আলীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। গত ২ মে তিনি দ্বিতীয় স্ত্রীর বাড়িতে আসেন । শশুর বাড়ি এসে দ্বিতীয় স্ত্রী আমিনা খাতুনকে বাড়ি ফিরিয়ে নিতে ব্যর্থ হয় ইউসুফ ।

বরং স্ত্রী আমিনা খাতুন ইউসুফকে তালাক দেয় এবং ইউসুফ আলীকে তুই বিষ খাইয়া মর, তুই ফাঁসি লাগাইয়া মর এবং তোর মত স্বামী আমার প্রয়োজন নাই বলে ধিক্কার দিতে থাকে। এ ঘটনায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে রাতেই কোন একসময় শ্বশুবাড়ির পেছনে বিষপান করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে । থানায় দায়ের করা অভিযোগ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, বিগত ১৪ বছর পূর্বে সামাজিকভাবে বাহুবল উপজেলার লামাতাশি ইউনিয়নের ভাতকাটিয়া গ্রামের হারুনশাহর মেয়ে লাইজু আক্তার(৩০) কে বিয়ে করেন ইউসুফ আলী। তাদের দাম্পত্য জীবনে তানিম আহমেদ (১৩) ও তাহিম আহমেদ (১০) নামে দুটি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করে। ইউসুফ আলী ১ম স্ত্রী লাইজু আক্তার ও দু’ পুত্র সন্তানকে নিয়ে সুখেই দিন কাটছিল। এর মধ্যে উপজেলার বাঘমারা গ্রামের ইউসুফের ঘনিষ্ঠ বন্ধু আমিনার পুর্বের স্বামী বাচ্চু মিয়া স্ত্রীর সঙ্গে ইউসুফের পরকিয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। আমিনা খাতুনের স্বামী বাচ্চু মিয়ার ঔরষের ২টি সন্তান আছে। কিছুদিন পর বাচ্চু মিয়া দুবাই প্রবাসে চলে গেলে আমিনা খাতুনের সাথে ইউছুফ আলীর সম্পর্ক আরও গভীর হয়ে যায়। একে অপরকে কাছে পেতে ব্যাকুল হয়ে উঠে। বন্ধুর স্ত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের কথা মহল্লায় ছড়িয়ে পরলে আমিনা ইউসুফের হাত ধরে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন । দীর্ঘ ৫ বছর পর্যন্ত তারা পাশ্ববর্তী মৌলভীবাজার জেলার অজ্ঞাত স্থানে আত্মগোপন করে। এমন ঘটনায় ১ম স্ত্রী লাইজুও অভিমান করে তার দুই সন্তাকে নিয়ে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার অলিপুরে বাসা ভাড়া নিয়ে আর এফ এল কোম্পানীতে চাকুরী করে জীবিকা নির্বাহ করিতে থাকে। ইউছুফ আলী ও আমিনা খাতুন দীর্ঘ ৫ বছর আত্মগোপনে স্বামী স্ত্রী হিসাবে বসবাস করে। এর পর ঘটনার ৪/৫ দিন পূর্বে ইউছুফ আলী তার ২য় স্ত্রী আমিনা খাতুনকে তার ১ম স্ত্রী লাইজু ও তার সন্তানদেরকে মেনে নিয়ে মিলেমিশে একত্রে বসবাস করতে প্রস্তাব করে। তখন আমিনা খাতুন তার প্রস্তাবে অসম্মতি প্রকাশ করলে ইউছুফ আলী ও আমিনা খাতুনের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও তর্কবিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে আমিনা খাতুন ইউছুফ আলীর সাথে রাগ দেখাইয়া তার পিতার বাড়ী চলে যায়। ঘটনার আগের দিন গত- ২ মে রাত্র অনুমান ৯ টায় ইউছুফ আলী তার ১ম স্ত্রী লাইজুকে ফোন করে জানায়, আমিনা খাতুন ইউসুফ আলীকে অপমান করেছে এবং ১ম স্ত্রীর সাথে অনেক অন্যায় করেছে বলে ক্ষমা চেয়ে মাফ করে দিতে বলে। পর দিন ৩ মে সকালে ইউছুফ আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী আমিনা খাতুনের পিতার বসত বাড়ীর বসত ঘরের পিছনে ঘরের কাঠের রোয়ার সাথে গলায় রশি দিয়ে ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ ।

এসব তথ্য নিশ্চত করে চুনারুঘাট থানার ওসি রাশেদুল হক বলেন, আমরা আসামি আমিনাকে গ্রেফতার করেছি। ইউসুফ আত্মহত্যা করেছে নাকি হত্যাকান্ড ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে জানা যাবে বলে জানান তিনি। ১ম স্ত্রী লাইজু আক্তার জানায়, আমিনা আমার স্বামীর বন্ধু বাচ্চু মিয়ার স্ত্রী আমার বাড়িতে আসা যাওয়ার সুবাদে স্বামীর সাথে পরকীয়া করে আমাকে বাড়ি ছাড়া করে আমার সন্তানদের এতিম করেছে আমিনা । আমি এ হত্যার বিচার চাই। নিহত ইউসুফ আলীর বোন রাজিয়া খাতুন বলেন, আমার ভাইকে আমিনা খাতুন ও তার লোকজন বাড়িতে ডেকে নিয়ে হত্যা করে আত্নহত্যার নাটক সাজিয়েছে। আমি আমার ভাই হত্যার সঠিক বিচার চাই।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন :

সর্বশেষ সংবাদ