ইউকে মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫
হেডলাইন

জিংক আলুতে বদু মিয়ার বাজিমাত

জিংক আলুতে বদু মিয়ার বাজিমাত

ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :রাসায়নিক সার ও বিষ প্রয়োগ না করে নিত্যনতুন ফসল আবাদ করেন কৃষক বদু মিয়া। জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত আলোচিত এ কৃষকের  জমিতে এবার ভালো ফলন হয়েছে জিংক আলু। আবার রমজান সামনে রেখে বিস্তীর্ণ জমিতে আবাদ করেছেন হরেক রকমের ফসল। হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার অজপাড়া গ্রাম গোপিনাথপুরে এখন সবুজের সমারোহ। বিদেশি ও ব্যতিক্রমী ফসল আবাদ করে তাক লাগানো বদু মিয়া এ বছর বাজিমাত করেছেন জিংক আলু বা কালো রঙের আলুর আবাদ করে।

কৃষক বদু মিয়া জানান, দুই বছর আগে বিএডিসির কর্মকর্তা রেজাউল করিমের কাছ থেকে তিনি জিংক আলুর বীজ সংগ্রহ করেন। হল্যান্ডে এই আলুর আবাদ করা হয়। অত্যন্ত পুষ্টিকর জিংক আলু বাংলাদেশে তিনিই প্রথম আবাদ করেছেন। বীজের অভাবে এ বছর মাত্র ২০ শতাংশ জমিতে আবাদ করেছেন এই আলু। ফলন হয়েছে ৪০ মণ। ঘরে আনার আগেই শেষ হয়েছে বিক্রি।

কৃষক বদু মিয়া জানান, জিংক আলু উৎপাদন করার পর ৬০ টাকা কেজি দরে আগাম বিক্রি হয়ে যায় সব আলু। নাফকো নামের একটি প্রতিষ্ঠান ১০ মণ, হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান ও মাধবপুর থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক তিন মণ করে এই আলু ক্রয় করেছেন। এ আলু দেখতে ও কিনতে তার বাড়ি ও খামারে ভিড় জমায় অনেক মানুষ। আগামীতে আরো বেশি পরিমাণ জমিতে এই আলু আবাদ করার ইচ্ছার কথাও জানান তিনি।

জিংক আলু নিয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা  ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. বিমল কুণ্ড জানান, বারিতে এই জাত আছে। এটি জিংক এবং আয়রনসমৃদ্ধ হওয়ায় স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তবে এটি শিক্ষিত সমাজে সমাদৃত হলেও সাধারণ লোকজন এখনো এটি পছন্দ করে না। কারণ, এর রং কালো এবং রান্না করলে গলে যায়। তবে বিদেশিরা এটিকে হালকা সিদ্ধ করে সালাদের সঙ্গে খান। আমাদের দেশেও একসময় এটি জনপ্রিয় হবে। কৃষক বদু মিয়া এই আলু আবাদ করেছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি।

এদিকে বদু মিয়া রমজানের আগেভাগেই তার জমিতে লাগিয়েছেন বিভিন্ন ধরনের ফসল। এর মাঝে ইন্ডিয়ান গ্রিন ব্ল্যাক ক্যাপসিকামে ভরে গেছে মাঠ। রমজানের কয়েক দিন আগে থেকেই এই ফসল বাজারে নেওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন বদু মিয়া। বাহুবলী ও বিউটিফুল টমেটোও পাকতে শুরু করেছে। সাম্মামগাছে ফল ধরেছে। পুরো রমজান মাসেই বিক্রি হবে বেগুন। শসার ফলনও পুরো রমজান চলবে। আবার ঈদ সামনে রেখে আলাদা করে আবাদ করা হয়েছে শসা।

এ ব্যাপারে কৃষক বদু মিয়া জানান, গাছ লাগানো থেকে শুরু করে ফসল আসা এবং পরিপক্ব হওয়ার জন্য যে সময় প্রয়োজন, সেই সময় হিসাব করে রমজান মাসকে টার্গেট করে ওই সময়ে যে ফসলের চাহিদা বেশি থাকে, সেই ফসল বেশি করে আবাদ করা হয়েছে। আবহাওয়া যাতে ক্ষতি করতে না পারে তার জন্য সেচ ও গ্রিন  হাউসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই ফসল থেকে ভালো লাভবান হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

তিরি আরো জানান, এ বছর জিংক আলু, ডায়মন্ড আলু, দেশি আলু, মিষ্টি আলু, পার্পল ভুট্টা, টমেটোসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল ফলিয়ে লাভবান হয়েছেন। বিষমুক্ত হওয়ায় লোকজন তার বাড়িতে এসেই তা কিনে নেন।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন :

সর্বশেষ সংবাদ