ইউকে শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
হেডলাইন

চুনারুঘাটে দূষিত পানিতে বিনষ্ট এলাকা

চুনারুঘাটে দূষিত পানিতে বিনষ্ট এলাকা

ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :জেলার চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ওসমানপুরে শিল্প কারখানার সৃষ্ট বর্জ্য ও নিষ্কাশিত দূষিত পানিতে বিনষ্ট হচ্ছে এলাকার খাল-বিল, নদী-নালার পানি, মাছ ও কৃষি জমি। উত্কট দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ স্কুল কলেজ মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীসহ এলাকাবাসী। মুরগির বর্জ্য ও বিষাক্ত পানির দ্বারা আশেপাশের গ্রামের পরিবেশ ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। অবশেষে দৈনিক সিলেটে প্রতিবেদন প্রচারিত হবার পর কারখানার সৃষ্ট বর্জ্য ও নিষ্কাশিত দূষিত পানিতে বিনষ্ট এলাকা পরিদর্শন করেন হবিগঞ্জের পরিবেশ অধিদপ্তরের ইন্সপেক্টর মো: মমিনুল ইসলাম । বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) বিকেল ৩ টায় ওই এলাকা পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয়দের সাথে কথা বলেন।এসময় ওই কোম্পানীর প্রতিনিধিসহ স্থানীয় লোকজন উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গত ২৭ মার্চ দৈনিক চুনারুঘাটে প্রত্যন্ত গ্রামেও বিষাক্ত শিল্পবর্জ্যের থাবা স্থানীয়রা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশের পর হবিগঞ্জের পরিবেশ অধিদপ্তরের নজরে আসে এরই প্রেক্ষিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের ইন্সপেক্টর মো: মমিনুল ইসলাম এর নেতৃত্বে একটি টিম পরিদর্শন করেন। প্রসঙ্গত : উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ওসমানপুর এলাকায় প্রায় ৭ বছর আগে বিশাল পাহাড়ি জমি ক্রয় করে শিল্প কারখানা স্থাপন করা হয়। সাইনবোর্ড বিহীন এ কারখানার নাম স্থানীয়দের কাছে অজানা।

এখানে মুরগী থেকে ডিম উৎপাদন হচ্ছে। পাশাপাশি মুরগীর বিষ্ঠা থেকে উপৎপাদন হচ্ছে সার। কারখানার সৃষ্ট বর্জ্য ও নিষ্কাশিত দূষিত পানিতে বিনষ্ট হচ্ছে এলাকার খাল-বিল, নদী-নালার পানি, মাছ ও কৃষি জমি। উত্কট দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ স্কুল কলেজ মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীসহ এলাকাবাসী। মুরগির বর্জ্য ও বিষাক্ত পানির দ্বারা আশেপাশের গ্রামের পরিবেশ ও ফসলের স্থানীয় কৃষকরা ক্ষতির সম্মুখীন হলেও এ সমস্যা সমাধানে দেখার কেউ ছিল না। এ নিয়ে জাতীয় পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রচারিত হলে সংশ্লিষ্টদের নজরে আসে । সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে ওই কারখানার ভেতর থেকে কালো পানি প্রথমে ধলাজাই খালে প্রবেশ করে। পরে ভূইছড়া হয়ে খোয়াই নদীতে কালো পানি প্রবেশ করছে। এমনকি কৃষকদের ধান্য জমিতেও এ পানি প্রবেশ করছে। এ সময় আলাপকালে ধলাজাই গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মতিন, আব্দুল হামিদ, রহিমা খাতুন, জায়েদা খাতুনরা বলেন- কারখানা করার পূর্বে ওই পাহাড়ি জমিতে নানা ধরণের ফসল চাষ হত। এখন ডিম ও সার উৎপাদন হচ্ছে। এসব কিভাবে উৎপাদন করছে, তা আমাদের অজানা। তবে কারখানার ভেতর থেকে কালো পানি বেরুচ্ছে।

এ পানি ধলাজাই খাল, বিল থেকে আমাদের জমিতে ছড়িয়ে পড়ছে। এছাড়াও ভূইছড়া হয়ে খোয়াই নদীতে প্রবেশ করছে বিষাক্ত পানি। কোম্পানির বিষাক্ত পানিতে প্রচুর পরিমাণে দুর্গন্ধযুক্ত বর্জ্য তৈরি করে। কৃষকরা এসব বর্জ্যের পানি থাকায় কৃষি জমিতে কাজ করতে পারছেননা। তারা বলেন, আমরা কৃষির উপর নির্ভর। কৃষি কাজে খালের পানি ব্যবহার করা হত। বর্তমানে ব্যবহার করা যাচ্ছে না। কারখানার কালো পানি থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে করে স্থানীয়রা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। কারখানার মালিক পক্ষ স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও একশ্রেণির লোক ম্যানেজ করে রেকেছে। এ কারণে এলাকার নিরীহ লোকেরা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না। তারা বলেন, প্রায় ৭ বছর পূর্বে জমি ক্রয় করে কারখানা নির্মাণ কাজ শুরু হয়।

নির্মাণ শেষে প্রায় দুই বছর ধরে কারখানায় উৎপাদন চলছে। যত দিন যাচ্ছে কারখানা থেকে কালো পানি অধিকহারে বেরুচ্ছে। সেই সাথে বাড়ছে দুর্গন্ধ। শুধু তাই নয়, মশা ও মাছির উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থায় স্থানীয়রা নাভিশ্বাস নিয়ে বসবাস করছেন। খাল থেকে কালো পানি জমিতে প্রবেশ করায় কাজ করতে গিয়ে কৃষকরা বিরাট সমস্যার মুখে পড়েছেন। স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা বলেন, কালো পানির দুর্গন্ধের পাশাপাশি এর বাতাস লাগলেই শরীরে চুলকানি শুরু হয়। তাই স্কুলে যেতে মন চায় না। স্থানীয়রা দ্রুত এর প্রতিকার চেয়েছেন। এদিকে বর্জ্যের দুর্গন্ধ স্থান পরিদর্শন শেষে পরিবেশ অধিদপ্তরের ইন্সপেক্টর বলেন, মো: মমিনুল ইসলাম জানান, কারখানার সৃষ্ট বর্জ্য ও নিষ্কাশিত দূষিত এলাকা পরিদর্শন করেছি, আমার ঊর্ধ্বতনের কাছে তদন্ত রিপোর্ট পাঠিয়ে দিব এবং তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন :

সর্বশেষ সংবাদ

ukbanglaonline.com