ইউকে রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫
হেডলাইন

কমলগঞ্জে খাদ্যসংকট থাকায় লোকালয়ে বানরের উৎপাত

কমলগঞ্জে খাদ্যসংকট থাকায় লোকালয়ে বানরের উৎপাত

ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে খাদ্যসংকট থাকায় প্রায়ই লোকালয়ে বের হয়ে আসছে প্রাণীরা। বেড়েছে দলছুট বানরের উৎপাত। এসব বানর মানুষের ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে আক্রমণ করছে। পালাতে গিয়ে যানবাহনের চাপা পড়ে বা বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে কয়েকটি বানর মারা গেছে। পরিবেশবিদেরা মনে করছেন, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান প্রাণীদের উপযোগী করে না তুললে এদের লোকালয়ে আসার প্রবণতা কমবে না।

মৌলভীবাজার বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, দলছুট বানর লোকালয়ে কিছুদিন থেকে আবার চলে যায়। শুধু লোকালয়ে কতগুলো বানর মারা গেছে, সেই হিসাব তাঁদের কাছে নেই।

২৩ জানুয়ারি শ্রীমঙ্গল শহরের কলেজ সড়কের সাবরেজিস্ট্রি অফিসের সামনে দেখা যায় একটি বড় বানর। বানরটি একটি দোকান থেকে চিপসের প্যাকেট নিয়ে যেতে অনেক চেষ্টা করলে স্থানীয় লোকজন বানরটিকে সরিয়ে দেন। পরে লোকজন দোকান থেকে বিস্কুট কিনে বানরটিকে দেন।

সেখানে উপস্থিত ছিলেন শহরের বাসিন্দা সবুর খান। তিনি বলেন, এ রকম আরও চার থেকে পাঁচটি বানর কলেজ রোড, স্টেশন রোড, কালীঘাট রোড, মিশন রোড এলাকায় একা একা ঘুরে বেড়ায়। প্রায়ই বিভিন্ন দোকান থেকে জিনিস নিয়ে পালিয়ে যায়। অনেক মানুষ আবার নিজ থেকে এসব প্রাণীকে খাবার তুলে দেয়। বানরগুলো রাস্তায় হঠাৎ করে গাড়ির সামনে দিয়ে দৌড় দেয়। মানুষের ঘরে ঢুকে যায়। এসব দলছুট বানরকে দেখা বন বিভাগের কাজ।

কমলগঞ্জের আলীনগর ইউনিয়নের তিলকপুর গ্রামের কৃষ্ণ কুমার সিংহ ও রাজন্দ্র সিংহ বলেন, প্রায়ই দল বেঁধে বানর বাড়িতে আসে। খেতের ফসলের ক্ষতি করে, শিশুদের আক্রমণ করে।

বাংলাদেশ বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক সজল দেব বলেন, বনে খাদ্য ও বাসস্থানের সংকটের কারণে প্রায়ই বন্য প্রাণীরা লোকালয়ে চলে আসছে। শহরে প্রায়ই দলছুট বানর দেখা যায়। এরা বিভিন্ন দোকানে গিয়ে চিপসসহ বিভিন্ন খাবারের প্যাকেট নিয়ে পালিয়ে যায়। তাঁরা খবর পেয়ে ছুটে গিয়ে সেগুলোকে উদ্ধার করেন। এখন যে হারে প্রাণীরা শহরমুখী হচ্ছে, এতে প্রাণীরা ঝুঁকিতে পড়ছে। শহরের বিভিন্ন যানবাহনের ধাক্কায় বা বিদ্যুতের তারে লেগে বন্য প্রাণীদের মৃত্যুর খবর মিলছে। এদের মধ্যে বানরের সংখ্যা বেশি।

লাউয়াছড়া জীববৈচিত্র্য রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক জলি পাল বলেন, লাউয়াছড়ায় যে পরিমাণ পর্যটক প্রতিদিন আসেন, যেভাবে তাঁরা প্রাণীদের বিরক্ত করেন, সেটা বন্ধ করা জরুরি। লাউয়াছড়াকে বলা হয় রেইন ফরেস্ট। লাউয়াছড়ার ভেতরে ঘন বন থাকায় মাটি সব সময় ভিজা থাকত, কত রকমের গাছ ছিল, ছড়ায় ও নালায় পানি ছিল। এখন লাউয়াছড়ার ভেতর ফাঁকা। একটা প্রাকৃতিক বনের ভেতরে লেবু-আনারসের বাগান করা হয়েছে। এই লাউয়াছড়া রক্ষায় যাঁরা নীতিনির্ধারক রয়েছেন, তাঁরা এসব বিষয় নিয়ে মাথা ঘামান না। বন কর্তৃপক্ষ যদি এখন সঠিক সিদ্ধান্ত না নেয়, তাহলে যে প্রাণীগুলো এখনো লাউয়াছড়ায় রয়েছে, সেগুলোও আর থাকবে না।

বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, লাউয়াছড়ায় কয়েক বছরে বানরসহ কিছু প্রাণীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। বন্য প্রাণী রক্ষায় তাঁরা নানাভাবে কাজ করছেন। বন্য প্রাণী রক্ষায় তাঁরা নানান উদ্যোগ নিয়েছেন।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন :

সর্বশেষ সংবাদ