ইউকে বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪
হেডলাইন

বিষণ্নতায় ? দূর করার উপায় জানুন

বিষণ্নতায় ? দূর করার উপায় জানুন

ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক :ক্রমাগত বিষণ্নতা থেকে মানুষ আত্মঘাতী পর্যন্ত হয়ে উঠতে পারে। এটিকে বলা যায় নীরব ঘাতক। এই সমস্যা ব্যক্তিগত বা সামাজিক কারণ, পড়াশোনা কিংবা কর্মক্ষেত্রে কোনো ঝামেলা, শারীরিক অসুস্থতাসহ আরো অনেক কারণে হতে পারে। কাজেই সুখ-দুঃখ মিলিয়ে জীবনকে সহজভাবে মেনে নিতে পারলেই মেলে বিষণ্নতার মতো মানসিক সমস্যা থেকে মুক্তি। যদিও এ সমস্যা নিয়ে অনেকেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন। তবে কিছু বিষয় চর্চা করতে পারলেই নিজেই কাটিয়ে ওঠা যায় এ সমস্যা।

চলুন জেনে নেওয়া যাক অবসাদ দূর করার কয়েকটি সহজ আর সাধারণ উপায়…

> বিষণ্নতার প্রথম এবং প্রধান কারণ হলো ঘুমের অভাব। আপনাকে পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে। ঘুমের ব্যাঘাত শুধু আমাদের শারীরিকভাবেই ক্ষতি করে না, এটা তৈরি করে মানসিক অবসাদ এবং বিষণ্নতা। প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ ঘণ্টা ঘুমালে বিষণ্নতা দূর করা অনেকটা সহজ হয়ে যায়।

> সঠিকভাবে খাদ্যগ্রহণ এই রোগ অনেকটা কমিয়ে দেয়। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, উপযুক্ত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবারের অভাবে বিষণ্নতা দেখা দিতে পারে, আর তাই তারা ভিটামিন বি সমৃদ্ধ খাবার খেতে বলেন বেশি করে।

> বিষণ্নতা দূর করার অন্যতম উপায় হতে পারে হাসি। হাসিখুশি থাকুন, যত কষ্টই হোক। মানুষের জীবনে কষ্ট থাকবেই, এমন কাউকে পাবেন না, যার জীবনে কষ্ট নেই। কাজেই হাসুন, বিষণ্নতাকে দূর করুন।

> আমরা যখন ভ্রমণে বের হই কিংবা কোথাও বেড়াতে যাই তখন আমাদের মস্তিষ্ক সেরেটোনিন নামক হরমোন নিঃসৃত করে। এতে আমরা খুশি থাকি ও নিজেকে অনেক আত্মবিশ্বাসী ভাবতে পারি। বিষণ্নতা দূর করার উপায় হচ্ছে ঘরের কোণে বসে না থেকে বাইরে বের হওয়া। সাইকোলজিস্টরা বিষণ্নতা রোগীদের এই পরামর্শ দিয়ে থাকেন যা বায়ু পরিবর্তন নামে বেশ পরিচিত।

> গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কৃতজ্ঞতা প্রকাশে বিষণ্নতা কমে। তাই কেউ আপনাকে সহযোগিতা করলে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন।

> যারা অগোছালো, তাদের এই বিষণ্নতা বেশি হয়, সেটা হতে পারে কর্মক্ষেত্রে, হতে পারে নিজের বাসায়। তাই সব কিছু সাজানো- গোছানো রাখতে চেষ্টা করুন।

> গভীরভাবে শ্বাস নিলে অনেকাংশে বিষণ্নতা দূর হয়। ধীরভাবে দীর্ঘশ্বাস নিন, সব চিন্তা ঝেড়ে ফেলুন।

> বিষণ্নতায় পড়লে সবাই নিজের ব্যর্থতার কথাই প্রথমে মনে করতে থাকেন। কী করলাম জীবনে, কী পেলাম জীবনে, আমার কিছুই হলো না, কিছুই করতে পারলাম না, সবাই খুশি থাকে, আমিই খুশি থাকি না, আমার ভাগ্য ভালো নয় এইসব ভেবে থাকেন সবাই। এই ধরনের নেতিবাচক চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। এইসব যত ভাববেন ততই বিষণ্ন হবেন।

> নিয়ম করে ধ্যান করলে বিষণ্নতা কমে যায়। গবেষকরা বলেছেন যে, ধ্যান মস্তিস্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়, চিন্তা দূর করে।

> আপনার ভবিষ্যৎ নিয়ে পরিকল্পনা করুন এবং সেটা দীর্ঘমেয়াদি হতে হবে। আজ থেকে ৫ বছর পড়ে নিজেকে কোথায় দেখতে চান এবং সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে কি করা উচিত, সেগুলা নিয়ে ভাবুন। পরিকল্পনামতো এগুলে বিষণ্নতা গ্রাস করবে না।

> কাজের ফাঁকে কিছু সময় বাচ্চাদের সাথে খেলতে পারেন, কিংবা আপনার পোষা প্রাণীর সাথে সময় কাটান, বিষণ্নতা আপনার কাছে আসবেনা।

> আমরা সামাজিক জীব, বেঁচে থাকতে হলে আমাদের সবার সাথে মিশতে হবে। যারা হাসিখুশি থাকেন, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেন, পরিবার নিয়ে ঘুরতে যান , তাদের বিষণ্নতা কম হয়। তাহলে আর কোনো বিষণ্নতা নয়, শুরু হোক সুস্থ- স্বাভাবিক জীবন।

> অনেকেই বিষণ্নতায় পড়লে সিগারেটকে সঙ্গী করে নেন। এরই মাধ্যমে পরিচয় হয় মদ ও ড্রাগের সাথে। সুতরাং ভুলেও সিগারেটের সঙ্গ নিতে যাবেন না বিষণ্নতায়। অনেকেই মনে করেন সিগারেট খেলে, ড্রাগ নিলে ও মদ পান করলে বিষণ্নতা ভুলে থাকা যায়। এটা সম্পূর্ণ ভুল একটি তথ্য।

> আপনি যদি একজন বিষণ্ন বিষণ্ণ বন্ধুর সাথে থাকেন এবং আপনি নিজেও নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করে থাকলে সমস্যা আরও বেড়ে যাবে। আপনার বন্ধু বান্ধবের মধ্যে ইতিবাচক চিন্তাধারার মানুষের সাথে মেশার চেষ্টা করুন। হাসি-খুশি ও আড্ডার মধ্যে আপনি ভুলেই যাবেন যে আপনি বিষণ্ন ছিলেন।

> অনেককেই দেখা যায় বিষণ্নতার সময় করুন সুরের গান শুনতে। এই কাজটি ভুলেও করতে যাবেন না। এতে করে আপনি আরও বিষণ্ন হয়ে পড়বেন। তার পরিবর্তে ব্যায়াম করুন। সম্প্রতি গবেষণায় দেখা যায় দিনে ৩০ মিনিটের শারীরিক ব্যায়াম কিংবা ধ্যানে বসা বিষণ্নতা প্রায় ৬০ শতাংশ কমিয়ে দেয়। সুতরাং নিজেকে বিষণ্ন মনে হলে ঘরের কোণায় বসে করুন গান না শুনে ব্যায়াম করে নিন অথবা ধ্যানে বসুন। বিষণ্নতা অনেক কমে যাবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন :

সর্বশেষ সংবাদ