ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক : সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় এক ব্যক্তি বাঘের আক্রমণে আহত হওয়ার পর থেকে এলাকাজুড়ে বাঘ আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ভয়ে লোকজন বাড়ি থেকে সন্ধ্যার পর বের হচ্ছেন না। দিনের বেলাও কেউ কেউ একা গ্রামের সড়কে চলাফেরা করেন না।
এরই মধ্যে গত চার দিন ধরে রাতে গ্রামে মেছোবাঘ ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, গত বুধবার ভোরে উপজেলার ধারণ গাজীপুর গ্রামের লেজু মিয়া (৭০) ফজরের নামাজ পড়ার জন্য নিজ বাড়ির পুকুর ঘাটে অজু করতে যান। পুকুর ঘাটে লেজু মিয়াকে মেছোবাঘ আক্রমণ করে। এ সময় লেজু মিয়ার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। মেছোবাঘ লেজু মিয়াকে জাপটে ধরে আছে দেখে লোকজন লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মেছোবাঘকে মেরে ফেলেন। এরপর থেকে ধারণ গাজীপুর ও পার্শ্ববর্তী গ্রামের লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ধারণ গাজীপুর গ্রামের যুবক হাসান আল মাজেদ বলেন, সন্ধ্যার পর থেকে এলাকা সুনসান নীরব হয়ে যায়। বাঘের ভয়ে কেউ বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। দিনের বেলাও কেউ একা বের হন না। এর মধ্যে গত চার দিন ধরে রাতেও গ্রামে দুটি বাঘকে দেখা গেছে বলে জানাচ্ছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এরপর আরও আতঙ্ক বেড়ে গেছে এলাকাবাসীর মধ্যে।
গ্রামের একাধিক লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঘিলাছড়া এলাকায় টিলা বেশি। সেজন্য এলাকাবাসীর মধ্যে বাঘ আতঙ্ক বিরাজ করছে। এলাকাবাসীর ধারণা বাঘ আবার বের হয়ে যে কোন সময় মানুষকে আক্রমণ করতে পারে।
ঘিলাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লেইছ চৌধুরী বলেন, একটি বাঘ দেখা গেছে বলে আমাকে গ্রামের লোকজন জানিয়েছেন। বাঘটি ধারণ গাজীপুর ও বিয়ালীবাজার এলাকায় ঘোরাফেরা করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। লেজু মিয়াকে একটি মেছোবাঘ আক্রমণ করার পর থেকে মানুষের মধ্যে বাঘ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সীমা শারমিন বলেন, মেছোবাঘ না মারার জন্য ও এলাকাবাসীকে সতর্ক থাকার জন্য বলেছি।
সিলেট বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা (ওয়াইল্ড-লাইফ রেঞ্জার) শহিদুল্লাহ বলেন, মেছোবাঘ খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে সম্ভবত এসেছিল। মেছোবাঘ নিরাপদ স্থান না পাওয়ায় সে যেখানে আশ্রয় নেয়, কোনো কোনো পরিস্থিতিতে মানুষের ওপর আক্রমণ করতে পারে। স্থানীয়দের পক্ষ থেকে আমরা বিষয়টি শুনেছি।