ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক : সৌদি আরবে অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার তরুণীকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে গতকাল শনিবার ভোররাতে একটি বিমানে তাকে নিয়ে আসা হয়েছে।
বিমানবন্দরে আসার পর নির্যাতিতার পরিবারকে নানাভাবে নাজেহাল করেছে দালাল চক্র। তাদের কাছ থেকে কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেছে।
ঢাকা থেকে মাধবপুর আসার পথে রাস্তায় তাদের অনুসরণ করা হয়েছে। সৌদি আরবে নির্যাতনের কারণে ওই তরুণী এখন শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। জরুরি ভিত্তিতে শনিবার দুপুরে তাকে মাধবপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভিকটিমের পিতা মেয়ের বরাত দিয়ে জানান, গত ২৭ সেপ্টেম্বর চুনারুঘাটের কাশেম নামের এক দালাল বিদেশে ভালো চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে সৌদি আরবে পাঠায়। কিন্তু সৌদি আরবে যাওয়ার পর এক বাসায় তাকে গৃহকর্মীর কাজ দেয়া হয়। কিন্তু, তাকে নানাভাবে নির্যাতন করে ওই বাড়ির লোকজন। এক পর্যায়ে গত ২ অক্টোবর ইমোর মাধ্যমে নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী বাবার কাছে আকুতি জানায় তাকে যেন দেশে নিয়ে আসা হয়। অন্যথায় তাদের নির্যাতনে মারা যেতে পারে।
ভুক্তভোগী তরুণীর পক্ষে তাদের আত্মীয় স্থানীয় সাংবাদিক মুজাহিদ মুন্সি প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে সৌদিতে নির্যাতিতা তরুণীকে দেশে ফেরত আনতে একটি আবেদন করেন। বৃহস্পতিবার সৌদি আরবের রিয়াদ বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর (শ্রম) বরাবরে একটি চিঠি দেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. সারওয়ার আলম। স্বাক্ষরিত পত্রে জরুরিভিত্তিতে তাকে উদ্ধার করে দেশে প্রেরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানান তিনি।
পত্রের প্রেক্ষিতে সৌদি আরবের রিয়াদ দূতাবাস কাউন্সিলর (শ্রম) তাকে উদ্ধার করে সেফ হোমে নিয়ে আসা হয়। শুক্রবার রাতে সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্টের সহযোগিতায় তাকে দেশে প্রেরণ করা হয়।
মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ ইশতিয়াক আল মামুন জানান, তার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। মানসিকভাবেও সে অনেকটা স্বাভাবিক নয়। তার বিশ্রাম ও চিকিৎসা প্রয়োজন।
ভিকটিমের পিতা আব্দুল কুদ্দুছ জানান, যারা ছলচাতুরি করে বিদেশ পাঠিয়ে তার মেয়েকে নির্যাতন ও হয়রানি করেছে তাদের বিরুদ্ধে তিনি মামলা করবেন।
গতকাল দুপুরে মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. আলাউদ্দিন হাসপাতালে গিয়ে নির্যাতিতা তরুণীকে দেখে তার চিকিৎসার খোঁজ খবর নিয়ে তার পরিবারের কাছে সমঝে দিয়েছেন। বর্তমানে ওই তরুণী মাধবপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।










