এতদিন বিদেশি যাত্রীদের যুক্তরাজ্যগামী ফ্লাইটে ওঠার অন্তত ৭২ ঘণ্টা আগে করোনা টেস্ট করানো এবং তার রিপোর্ট সঙ্গে রাখা বাধ্যতামূলক ছিল। এমনকি সেই রিপোর্ট সঙ্গে থাকলেও যুক্তরাজ্যে পৌঁছানোর পর বিমানবন্দরে করোনা টেস্ট করাতে হতো বিদেশি যাত্রীদের।
কিন্তু সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, এখন থেকে আর এই ক্লান্তিকর প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে না বাইরের দেশের কোনো যাত্রীকে। শুক্রবার ভোর চারটা থেকে দেশটিতে কার্যকর করা হয়েছে এই নিয়ম।
টিকা না নেওয়া যাত্রীদের জন্য আগেই করোনা টেস্ট করানো বিষয়ক বাধ্যবাধকতা শিথিল করেছিল ব্রিটেনের সরকার। এবার সব যাত্রীর জন্যই প্রযোজ্য হলো এক নিয়ম।
যুক্তরাজ্যের বিমান পরিষেবা বিষয়ক মন্ত্রী রবার্ট কোর্টস বলেন, ‘করোনার দৈনিক সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে টিকাদান কর্মসূচি, করোনা টেস্টসহ যা যা করার দরকার— তার সবই আমরা করেছি এবং মহামারির দুই বছর পেরোনোর পর এখন আমরা উপলব্ধি করতে পারছি যে, ভ্রমণের ক্ষেত্রে আর আমলাতান্ত্রিক কোনো বিধিনিষেধের প্রয়োজন নেই।’
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে বিশ্বের প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটিও ঘটেছিল চীনে।
তারপর অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
কিন্তু তাতেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় অবশেষে ওই বছরের ১১ মার্চ করোনাকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।
এই ঘোষণার পরই বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের মতো বিদেশী যাত্রীদের জন্য সীমান্ত বন্ধ করেছিল যুক্তরাজ্য এবং এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর ছিল দীর্ঘদিন। পরে গত বছর থেকে সীমান্ত খোলা হলেও যুক্তরাজ্যে যেতে ইচ্ছুক বিদেশি যাত্রীদেরকে ফ্লাইটে ওঠার ৭২ ঘণ্টা আগে এবং যুক্তরাজ্যে পৌঁছানোর পর বিমানবন্দরে— দু’বার করোনা টেস্ট করাতে হতো।
অবশ্য ব্রিটেনে যে সংক্রমণ পরিস্থিতির কাঙ্ক্ষিত উন্নতি হয়েছে, এমন নয়। বৃহস্পতিবারও দেশটিতে করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৮৯ হাজার ৭১৭ জন এবং এই রোগে মৃত্যু হয়েছে ১৩৮ জনের। এছাড়া মহামারির দু্ই বছরে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ২ কোটি ১ হাজার ৬২৭ জন এবং মারা গেছেন মোট ১ লাখ ৬৩ হাজার ৩৮৬ জন।