আহমেদ শামীমঃ সাত্তার ভাইকে নিয়ে লিখতে গেলে কত কথাই লিখা যায়। অসম্ভব নেতৃত্বগুণসম্পন্ন, মেধাবী, চৌকস, দূরদর্শী, পরিশ্রমী, নির্ভীক এবং সুদক্ষ সাংবাদিকতার পুরোধা ব্যক্তিত্ব; সর্বোপরি একজন গ্রেট বস ! তাঁর কলমের আঁচড় যেমন পাঠকসমাজকে যেমন মোহাবিষ্ট করে, তেমনি তাঁর বক্তব্যের প্রতিটি শব্দের মাদুর্য্যতা শ্রোতামণ্ডলীর মনের গভীরে শিহরণ জাগানো নির্ণয়হীন এক অবিনাশী গদ্যকথা ! তিনি সারারাত জেগে লিখতে পারেন অনায়াসে।প্রতিনিয়ত তাঁর সহকর্মীদের উজ্জীবিত করে থাকেন কর্মস্পৃহা বৃদ্ধিতে। যারা সাত্তার ভাইয়ের সাথে কাজ করেছেন তাঁরাই বলতে পারবেন তাঁর যোগ্যতার মানদণ্ড কতখানি উচ্চমার্গীয়।
১. এক সময় (হয়তো এখনো) সিলেটের বহুল প্রচারিত দৈনিক ‘সিলেটের ডাক’-এ কাজ করার সুযোগের অপেক্ষায় থাকতেন স্থানীয় (অধিকাংশ) সাংবাদিকেরা।সেখানে দীর্ঘকাল অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে নির্বাহী সম্পাদকের গুরুদায়িত্ব পালন করেছেন প্রিয় সাত্তার ভাই। অক্লান্ত পরিশ্রম আর একনিষ্ঠ সাংবাদিকতার উজ্জ্বল সাক্ষর রেখে তিনি সময়ের ‘অখ্যাত’ দৈনিক ‘সিলেটের ডাক’কে কালক্রমে ‘সিলেটবাসীর মুখপত্র’-এ পরিণত করেন এবং পত্রিকাটিকে ‘সিলেটের ইত্তেফাক’ হিসেবে সর্বস্তরের পাঠক বোদ্ধাদের কাছে সমাদৃত করতে সমর্থ হন।উল্লেখ্য, সাত্তার ভাই বিভিন্ন পন্থায় যাচাই বাছাই এবং টার্গেট করে, কখনোবা পরীক্ষার মাধ্যমে তাঁর টীমে কাজ করার উপযোগী সাংবাদিক নিয়োগ দিতেন।বলতে দ্বিধা নেই, আমিও তাঁর টার্গেটের একজন সৌভাগ্যবান সংবাদকর্মী ছিলাম ! ফলশ্রুতিতে ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত একটানা প্রায় ৬ বছর সিলেটের ডাক-এ কাজ করে ইউরোপ চলে যাই।প্রায় ৪ বছর পরে দেশে প্রত্যাবর্তন করলে আবার সিলেটের ডাক-এ যোগ দেই এবং আরো ২ বছরের মতো কাজ করি।
২.ঐতিহ্যবাহী সিলেট প্রেসক্লাব এবং লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সফল (সাবেক) সাধারণ সম্পাদক শ্রদ্ধেয় সাত্তার ভাই বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের দু’জন প্রভাবশালী নেতার অন্তর্দ্বন্দ্বের নিরসন ঘটিয়েছিলেন তাঁর ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বগুণে, সেকথা হয়তো অনেকেরই অজানা। সবাই জানেন যে, (মরহুম) জাতীয় নেতা আব্দুস সামাদ আজাদ ও হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর মধ্যে এক সময় চরম মতবিরোধ ছিল। দলের শীর্ষ নেত্বত্ব পর্যন্ত একাধিকবার চেষ্টা চালিয়েও যেখানে সফল হননি, সেখানে (বৃহত্তর সিলেটবাসীর উন্নয়নের স্বার্থে) সাত্তার ভাই অবতীর্ণ হন ত্রাতার ভূমিকায়। নিজ ইচ্ছা শক্তির দৃঢ় মনোবলে দু:সাহসিক ভূমিকার মাধ্যমে এ জাতীয় দু’নেতাকে একত্রে এক টেবিলে বসিয়ে তাদের দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্বের পরিসমাপ্তি ঘটাতে সক্ষম হয়েছিলেন।
৩.ঢাকা এবং সিলেটে আমার দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনে সাত্তার ভাইয়ের মতো এমন সুদক্ষ, সৃজনশীল, কর্তব্যপরায়ণ এবং কর্মীবান্ধব দ্বিতীয় কোন বস পাইনি।তিনিই আমার দেখা শ্রেষ্ঠ বস !
সুতরাং সাত্তার ভাইকে (আগামী ৩০ জানুয়ারী অনুষ্ঠেয় লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের নির্বাচনে) সভাপতি নির্বাচিত করা হলে লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে তিনি নি:সন্দেহে পালন করবেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা- এটা আমি দৃঢ়তার সাথে বিশ্বাস করি।
(লেখক: বার্তা সম্পাদক, সাপ্তাহিক বাংলা সংলাপ (লন্ডন) এবং সদস্য, লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাব।)