ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক : জিহাদ করে কিংবা অ’স্ত্র ধরে হেফাজতে ইস’লামের আ’লোচিত ১৩ দফা দাবি আদায় সম্ভব নয় বলে মনে করেন হেফাজতে ইস’লামের সদ্যনিযু’ক্ত আমির আল্লামা মহিবুল্লাহ বাবুনগরী। তিনি বলেন, অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইস’লাম কাউকে ক্ষমতায় বসানো কিংবা কারও পতন ঘটানোয় ভূমিকা রাখতে চায় না। এমনকি আওয়ামী লীগ ২০০ বছর ক্ষমতায় থাকলেও তাঁর আ’পত্তি নেই। মহিবুল্লাহ আমির নির্বাচিত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার দুপুরে ফটিকছড়ির বাবুনগরের নিজ বাসভবনে প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপ করছিলেন।
হেফাজতে ইস’লামের আ’লোচিত ১৩ দফা দাবির আ’ন্দোলন নিয়ে মহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, সরকারের দিকে অ’স্ত্র তুলে, জিহাদ করে দাবি আদায় করা সম্ভব নয়। র’ক্তপাত ও অ’স্ত্রের মহড়ায় বিশ্বা’স করে না হেফাজতে ইস’লাম। আম’রা সব সময় শান্তিপূর্ণ আ’ন্দোলন করে ১৩ দফা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছি। ২০১৩ সালে ঢাকা ঘেরাও কর্মসূচিতে ইতিহাসের বড় জমায়েত হওয়ার পরও র’ক্তপাত হয়নি। হেফাজতে ইস’লাম র’ক্তপাতে বিশ্বা’সী নয়। সরকার পারলে আমাদের দাবি পূরণ করবে, না পারলে আল্লাহর কাছে জবাব দেবে। তিনি বলেন, হেফাজতে ইস’লামের ১৩ দফা দাবি আদায়ের আ’ন্দোলন এখনো চলমান। আমাদের যেসব দাবি সরকারের পক্ষে বাস্তবায়ন সম্ভব তা মেনে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। সংবিধানে কিছু অংশ রয়েছে যা ইস’লামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এসব অংশ ই’মানের জন্য ক্ষতিকর। এ অংশগুলো সংস্কারের জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ করছি। এ দেশের নাগরিক হিসেবে সরকারের কাছে সংবিধান সংস্কারের দাবি করতে পারি আম’রা। হেফাজতে ইস’লাম ও সরকারের স’ম্পর্ক বিষয়ে তিনি বলেন, কওমিদের নিয়ে বর্তমান সরকারের আন্তরিকতায় আম’রা খুশি। সরকারের পতন কিংবা কাউকে গদিতে বসানো আমাদের আ’ন্দোলনের উদ্দেশ্য নয়। আম’রা মু’সলিম, কোরআন এবং হাদিস মেনে চলতে হবে। কোরআন পরিপন্থী কোনো আইন চাপিয়ে দিলে আম’রা বিরোধিতা করব। আ’ন্দোলন করব। আওয়ামী লীগ সরকার ২০০ বছর ক্ষমতায় থাকলেও আমাদের কোনো সমস্যা নেই। আলেম’রা গদি (ক্ষমতা) চায় না। গদিওয়ালাদের (ক্ষমতাসীনদের) আলেম বানাতে চায়।
জামায়াতে ইস’লামীর সঙ্গে হেফাজতের আঁতাতের অ’ভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, জামায়াতের সঙ্গে হেফাজতের আদর্শিক কোনো স’ম্পর্ক নেই। বরং কওমি আলেম’রা জামায়াতের বি’রুদ্ধে সোচ্চার থাকে সব সময়। দেওবন্দের অন্যতম অলি আল্লামা হোসাইন আহম’দ মাদানি জামায়াতের বি’রুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। আম’রা তাঁর অনুসারী হিসেবে এখনো জামায়াতের বি’রুদ্ধে কথা বলি। তাই জামায়াতের সঙ্গে কওমিদের কোনো ঐক্য হতে পারে না। আদর্শিক কারণেই কওমিদের সঙ্গে জামায়াতের দূরত্ব ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত। রাজনৈতিক স্বার্থে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে ঐক্য করেছে। কিন্তু হেফাজতের সঙ্গে জামায়াতের এখনো কোনো জোট হয়নি। হেফাজতের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ নেই বলে দাবি করেন তিনি।
আল্লামা মহিবুল্লাহ বলেন, অ’তীতের মতো ভবিষ্যতেও হেফাজতের ব্যানারে কাউকে নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না। হেফাজতের কমিটি গঠন নিয়ে তিনি বলেন, হেফাজতের বর্তমান যে কেন্দ্রীয় কমিটি রয়েছে তা সম্প্রসারণ করা হবে। সবার মতামতের ভিত্তিতে জে’লা, উপজে’লা, থা’না এবং ওয়ার্ড কমিটি করা হবে। কমিটি গঠনের আগে হেফাজতের বর্তমান নেতাদের মধ্যে যে দূরত্ব রয়েছে তা বিমোচন করা হবে। এরই মধ্যে নেতাদের মধ্যকার মতপার্থক্য দূর করতে কাজ করছেন কয়েকজন শীর্ষ আলেম। যারা কমিটির বাইরে রয়েছেন তাদের নিয়েই আগামীতে কেন্দ্রীয় এবং অন্যান্য কমিটি সম্প্রসারণ ও গঠন করা হবে।