
ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক : হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের আলীনগর গ্রামে বিদ্যুৎ লাইন মেরামতকারী ঠিকাদারের দায়িত্বহীনতার কারনে দু’টো হাতই হারাতে হলো অস্টম শ্রেণির ছাত্র রুয়েল(১৪)কে। হাত হারানো রুয়েলের দরিদ্র পরিবারের ভরণ পোষনের দায়িত্ব তার উপরেই ছিলো।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসায় অবহেলা রুয়েলের হাত দু’টো কেটে ফেলতে হয়েছে। এমনটাই দাবী করছেন রুয়েলের পরিবার। সে আলীনগর গ্রামের আব্দুর রশীদের ছেলে ।পঙ্গু রুয়েল জানায়, প্রায় তিন মাস আগে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের মতিন মোল্লা তাকে নতুন বৈদ্যুতিক খুটি বসানোর হেলপারের কাজে কুমিল্লার জীবন গ্রামে নিয়ে যায়। হেলপারের কাজের বদলে তাকে খুটির উপরে উঠে বিদ্যুতের তার টানতে বলে লাইনম্যান কামাল ও সুপারভাইজার আনোয়ার। এ কাজ রুয়েল করতে পারেনা বললে ঠিকাদার অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে একরকম জোরেই তার টানার কাজ করায়। তার টানতে সময় সহসাই সে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়।
রুয়েলের বোন সাফিয়া খাতুন বলেন, “আমার ভাই বিদ্যুৎপৃষ্ট হওয়ার পর ঠিকাদারের লোকজন তাকে কুমিল্লা সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসার পরে তারা ঢাকা শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে নেয়। কিন্তু আমাদের পরিবারের কাউকে বিদ্যুৎপৃষ্টের বিষয়টি জানানো হয়নি। খবর পেয়ে আমরা হাসপাতালে গেলে ঠিকাদার ও তার লোকেরা পালিয়ে যায়। পরে বিকাশের মাধ্যমে ঠিকাদার আফজাল ২৮ হাজার টাকা পাঠায় চিকিৎসার জন্য। কিন্তু এ পর্যন্ত আমার ভাইয়ের চিকিৎসায় ব্যয় হয়েছে প্রায় ৪ লাখ টাকা। দীর্ঘ তিন মাস চিকিৎসা করার পর আমার ভাই রুয়েলের জীবন বাঁচলেও ঠিকাদার সময়মতো চিকিৎসা না করানোর কারণে হাত দু’টো কেটে ফেলে দিতে হয়েছে। পরবর্তীতে শায়েস্তাগঞ্জের ঠিকাদার আফজাল রুয়েলের চিকিৎসা বাবদ দুই লাখ টাকা দেয়ার জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি তা দেননি। আর কোনো খোঁজখবরও রাখেননি রুয়েলের। আমার ভাইয়ের জীবনটাই শেষ হয়ে গেলো।
সরেজমিনে আলীনগর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়-আলীনগর টিলার উপর নিজ বাড়ির উঠানে শুয়ে আছে রুয়েল। প্রাণবন্ত কিশোর রুয়েল যেন এখন জীবন্ত লাশ। দুই হাত হারানো জীবন তার কাছে শুধুই মরুভূমি। তবুও রুয়েলের বুক ভরা স্বপ্ন, সে লেখাপড়া করে বড় হবে। এ ব্যাপারে ঠিকাদার আফজাল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন-“আমি রুয়েলকে কাজে নেইনি, নিয়েছে মতিন মোল্লা। এ কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হলো ঢাকার নিকন এন্টারপ্রাইজ। আমি মিডিয়া হয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও মতিন মোল্লাকে সহযোগিতা করেছি মাত্র।