ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক : নোয়াখালীর বসুরহাটে বিএনপির প্রার্থী কামাল উদ্দিন চৌধুরী জিততে পারবেন না বলে মনে করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ভোটে লড়া জামায়াত নেতা মোশারফ হোসেন। তিনি বলেছেন, বিএনপির প্রার্থী কামাল উদ্দিন চৌধুরী প্রবীণ মানুষ। তার পক্ষে জনগণের সেবা করা সম্ভব নয়।
নানা আলোচনার জন্ম দেয়া নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার নির্বাচন হচ্ছে সুষ্ঠু, বলেছেন তিন প্রার্থীই।
শনিবার (১৬ জানুয়ারি) নির্বাচনের ভোটগ্রহণের দিন সব দলের প্রার্থী ভোট সুষ্ঠু বলেছেন, এমন ঘটনা সাম্প্রতিককালে আর ঘটেনি।
এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা সুষ্ঠু ভোট চেয়ে আন্দোলনে নেমে আলোচিত হয়েছিলেন। তার আশঙ্কা ছিল, কারচুপি হবে। ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন নেতার সমালোচনা করে আলোচনায় উঠে আসা নৌকা মার্কার মেয়র প্রার্থী তার জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। ভোটের সকালে আবদুল কাদের মির্জা বলেছেন, ভোট ভালো হচ্ছে।
আবদুল কাদের মির্জা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই। নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে বিভিন্ন পথ ও কর্মী সভায় তার দলের কেন্দ্রীয় জেলার আধা ডজন নেতাদের তীব্র সমালোচনা করে আলোচনায় উঠে আসেন তিনি। তাকে হারানোর জন্য ষড়যন্ত্র চলছে বলেও অভিযোগ ছিল তার। ফলে সারা দেশের দৃষ্টি এখন সাড়ে ছয় বর্গ কিলোমিটার আয়োতনের প্রথম শ্রেণির পৌরসভা বসুরহাটের দিকে।
বিএনপির প্রার্থীও বলেছেন, সুষ্ঠু ভোট হচ্ছে। ফলাফল যাই হোক তিনি মেনে নেবেন।
জামায়াত নেতা মোশারফ হোসেন এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে লড়েছেন। কারণ, নির্বাচন কমিশন জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করায় দলীয় প্রতীকে অংশ নেয়ার সুযোগ নেই মোশাররফের পক্ষে।
জামায়াত নেতা বলেন, ভোট ভালো হচ্ছে। তবে ইভিএমের কারণে ভোটাররা ঝামেলায় পড়েছেন।
ফলাফল কী হতে পারে- এমন প্রশ্নে জামায়াত নেতা বলেন, তার সঙ্গে আওয়ামী লীগের লড়াই হবে। বিএনপি এখানে পাত্তা পাবে না।
মোশারফ বলেন, ‘নৌকা প্রতীকের সঙ্গে মোবাইল প্রতীকের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। …এখানে ধানের শীষ প্রতীকে যিনি নির্বাচন করছেন তিনি অনেক বয়স্ক। জনগণের সেবার করার মতো বয়স তার নেই। এই অবস্থার পেক্ষাপটে জোটের লোকজন আমাদের ওপরে দুর্বল। যে কারণে আমি মনে করি তরুণ, নারী পুরুষ আমাকে বেছে নেবে।’
ভোট কেমন চলছে এমন প্রশ্নে জামায়াত নেতা বলেন, ‘কোনো অনিয়ম আমরা দেখতে পাইনি। ইভিএমে কীভাবে নির্বাচন হচ্ছে এটা দেখার জন্য আমাদের কিছু প্রযুক্তিবিদ প্রতিটি কেন্দ্রে পরিদর্শন করছে। আমাদের প্রযুক্তিবিদরা যদি কোনো অনিয়ম পেয়ে থাকে তাহলে আমরা অবশ্যই জাতির কাছে জানাবো। একইসঙ্গে আমি নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানাব, স্মার্টকার্ড বা আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে ভোট দেয়া যায় এমন পদ্ধতি ব্যবহার করে ভোট দেয়া যায় কি না।’
তিনি বলেন, ‘আগে তো ভোট দেয়ার সুযোগ ছিল না, সুযোগ এসেছে। জনগণ যদি তাদের মতামত সঠিকভাবে প্রয়োগের সুযোগ পায়, তাহলে ইভিএমের যে আতঙ্ক সেটাও কেটে যাবে। সরকারেও গ্রহণযোগ্যাতা বাড়বে।’
তিনি বলেন, ‘ইভিএম হলো নতুন প্রযুক্তি, কীভাবে এর মাধ্যমে ভোট হয় অনেকেই জানে না।… নির্বাচন কমিশন যা করেছে সেটা যথেষ্ট ছিল না। ভোট কেন্দ্র শত শত মানুষ দাঁড়িয়ে আসছে তারা পদ্ধতি বুঝে না। ধারণা না থাকার কারণে অনেকেই হয়তো ভোট দিতে পারবে না।’
নির্বাচন অফিস জানায়, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আনসারের ৪০০ সদস্য মাঠে রয়েছেন। র্যাবের ৩টি টিম, বিজিবি ৪ প্লাটুন, পুলিশের মোবাইল ৯টি টিম, স্ট্রাইকিং ২টি টিম, নয়জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে কাজ করছেন।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রবিউল আলম সাংবাদিকদের জানান, সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ করা হয়। এখনো কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার সংবাদ নেই।