ইউকে বাংলা অনলাইন ডেস্ক : জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটে যোগ দিতে পূর্ব লন্ডন ছেড়ে সিরিয়ায় পাড়ি জমানো বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ শামীমা বেগমকে যুক্তরাজ্যে ফেরার অনুমতি দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিলের বিপক্ষে আদালতে চ্যালেঞ্জ জানানোর সুযোগ দিতে তাকে যুক্তরাজ্যে ফেরার এই অনুমতি দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে বলেছে, আদালতের একজন জ্যেষ্ঠ বিচারক আইএসের ডেরায় পাড়ি জমানো বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক ২০ বছর বয়সী শামীমা বেগমকে যুক্তরাজ্যে ফেরার অনুমতি দিয়েছেন। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শামীমা বেগমের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করায় এই সিদ্ধান্তের বিপক্ষে চ্যালেঞ্জ জানানোর সুযোগ দিতে তাকে যুক্তরাজ্যে ফেরার অনুমতি দেয়া হয়।
২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুই বান্ধবীকে নিয়ে পূর্ব লন্ডন থেকে পালিয়ে সিরিয়ায় আইএসের ডেরায় যান শামীমা বেগম। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সিরিয়ার একটি শরণার্থী শিবিরে তাকে দেখা যায়। সেই সময় ৯ মাসের গর্ভবর্তী ছিলেন তিনি। আইএস-পত্নী হিসেবে সিরিয়ায় তিন বছরের বেশি সময় কাটান তিনি।
গত বছর ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে শামীমা বেগমের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করেন।
এদিকে, ব্রিটেনের ওই আদালত দেশটির স্পেশাল ইমিগ্রেশন আপিলস কমিশনের (এসআইএসি) একটি আদেশও আংশিক খারিজ করেছে। এসআইএসির আদেশে বলা হয়েছিল, শামীমা বেগমকে বেআইনিভাবে রাষ্ট্রহীন করা হয়নি। কারণ তিনি সিরিয়ায় ছিলেন এবং বাংলাদেশি নাগরিকত্ব রয়েছে তার।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে শামীমা বেগম দাবি করেছিলেন, আইএসশাসিত সিরীয় ভূখণ্ডে তিনি একজন স্ত্রী হিসেবে তিন বছর কাটিয়েছেন। সিরিয়ায় পৌঁছানোর মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে নেদারল্যান্ডস বংশোদ্ভূত আইএসযোদ্ধা ইয়াগো রিদিককে বিয়ে করেন তিনি।
তিনি বলেন, ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে স্বামীকে নিয়ে রাক্কা ছাড়েন। তবে তার এক বছর বয়সী মেয়ে এবং তিন মাস বয়সী ছেলে সেখানে থাকাকালীন মারা যায়। গত বছর তার তৃতীয় সন্তান জন্মের পরপরই মারা যায়।
ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নাগরিকত্ব বাতিলের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাকে বেআইনি আখ্যা দিয়ে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন শামীমা বেগম।
বৃহস্পতিবার ব্রিটেনের আদালত শামীমা বেগমকে দেশটিতে ফেরার অনুমতি দেয়ার পর বরিস জনসন নেতৃত্বাধীন সরকার বলেছে, তারা আদালতের এই সিদ্ধান্তের বিপক্ষে আপিল এবং রায় স্থগিতের আবেদন করবেন।-জাগো নিউজ